Quran translations in many languages

Bengali Quran

Al-Ahqâf

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[46:1]

হা-মীম

[46:2]

এই কিতাব পরাক্রমশালীপ্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ

[46:3]

নভোমন্ডলভূ-মন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু আমি যথাযথভাবেই এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্যেই সৃষ্টি করেছি। আর কাফেররা যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছেতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়

[46:4]

বলুনতোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজা করতাদের বিষয়ে ভেবে দেখেছ কিদেখাও আমাকে তারা পৃথিবীতে কি সৃষ্টি করেছেঅথবা নভোমন্ডল সৃজনে তাদের কি কোন অংশ আছেএর পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরস্পরাগত কোন জ্ঞান আমার কাছে উপস্থিত করযদি তোমরা সত্যবাদী হও

[46:5]

যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করেযে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে নাতার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কেতারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর

[46:6]

যখন মানুষকে হাশরে একত্রিত করা হবেতখন তারা তাদের শত্রু হবে এবং তাদের এবাদত অস্বীকার করবে

[46:7]

যখন তাদেরকে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনানো হয়তখন সত্য আগমন করার পর কাফেররা বলেএ তোপ্রকাশ্য জাদু

[46:8]

তারা কি বলে যেরসূল একে রচনা করেছেবলুনযদি আমি রচনা করে থাকিতবে তোমরা আল্লাহর শাস্তি থেকে আমাকে রক্ষা করার অধিকারী নও। তোমরা এ সম্পর্কে যা আলোচনা করসে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত আমার ও তোমাদের মধ্যে তিনি সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। তিনি ক্ষমাশীলদয়াময়

[46:9]

বলুনআমি তো কোন নতুন রসূল নই। আমি জানি নাআমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে। আমি কেবল তারই অনুসরণ করিযা আমার প্রতি ওহী করা হয়। আমি স্পষ্ট সতর্ক কারী বৈ নই

[46:10]

বলুনতোমরা ভেবে দেখেছ কিযদি এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় এবং তোমরা একে অমান্য কর এবং বনী ইসরাঈলের একজন সাক্ষী এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে এতে বিশ্বাস স্থাপন করেআর তোমরা অহংকার করতবে তোমাদের চেয়ে অবিবেচক আর কে হবেনিশ্চয় আল্লাহ অবিবেচকদেরকে পথ দেখান না

[46:11]

আর কাফেররা মুমিনদের বলতে লাগল যেযদি এ দ্বীন ভাল হত তবে এরা আমাদেরকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারত না। তারা যখন এর মাধ্যমে সুপথ পায়নিতখন শীঘ্রই বলবেএ তো এক পুরাতন মিথ্যা

[46:12]

এর আগে মূসার কিতাব ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ। আর এই কিতাব তার সমর্থক আরবী ভাষায়যাতে যালেমদেরকেসতর্ক করে এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে সুসংবাদ দেয়

[46:13]

নিশ্চয় যারা বলেআমাদের পালনকর্তা আল্লাহ অতঃপর অবিচল থাকেতাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না

[46:14]

তারাই জান্নাতের অধিকারী! তারা তথায় চিরকাল থাকবে। তারা যে কর্ম করতএটা তারই প্রতিফল

[46:15]

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থে?র বয়সে ও চল্লিশ বছরে পৌছেছেতখন বলতে লাগলহে আমার পালনকর্তাআমাকে এরূপ ভাগ্য দান করযাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করিযা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় ৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করআমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবংআমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম

[46:16]

আমি এমন লোকদের সুকর্মগুলো কবুল করি এবং মন্দকর্মগুলো মার্জনা করি। তারা জান্নাতীদের তালিকাভুক্ত সেই সত্য ওয়াদার কারণে যা তাদেরকে দেওয়া হত

[46:17]

আর যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে বলেধিক তোমাদেরকেতোমরা কি আমাকে খবর দাও যেআমি পুনরুত্থিত হবঅথচ আমার পূর্বে বহু লোক গত হয়ে গেছেআর পিতা-মাতা আল্লাহর কাছে ফরিযাদ করে বলেদুর্ভোগ তোমার তুমি বিশ্বাস স্থাপন কর। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। তখন সে বলেএটা তো পূর্ববর্তীদের উপকথা বৈ নয়

[46:18]

তাদের পূর্বে যে সব জ্বিন ও মানুষ গত হয়েছেতাদের মধ্যে এ ধরনের লোকদের প্রতিও শাস্তিবানী অবধারিত হয়ে গেছে। নিশ্চয় তারা ছিল ক্ষতিগ্রস্থ

[46:19]

প্রত্যেকের জন্যে তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন স্তর রয়েছেযাতে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেন। বস্তুতঃ তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না

[46:20]

যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের কাছে উপস্থিত করা হবে সেদিন বলা হবেতোমরা তোমাদের সুখ পার্থিব জীবনেই নিঃশেষ করেছ এবং সেগুলো ভোগ করেছ সুতরাং আজ তোমাদেরকে অপমানকর আযাবের শাস্তি দেয়া হবেকারণতোমরা পৃথিবীতে অন্যায় ভাবে অহংকার করতে এবং তোমরা পাপাচার করতে

[46:21]

দ সম্প্রদায়ের ভাইয়ের কথা স্মরণ করুনতার পূর্বে ও পরে অনেক সতর্ককারী গত হয়েছিল সে তার সম্প্রদায়কেবালুকাময় উচ্চ উপত্যকায় এ মর্মে সতর্ক করেছিল যেতোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও এবাদত করো না। আমি তোমাদের জন্যে এক মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করি

[46:22]

তারা বললতুমি কি আমাদেরকে আমাদের উপাস্য দেব-দেবী থেকে নিবৃত্ত করতে আগমন করেছতুমি সত্যবাদী হলেআমাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দাওতা নিয়ে আস

[46:23]

সে বললএ জ্ঞান তো আল্লাহর কাছেই রয়েছে। আমি যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছিতা তোমাদের কাছে পৌঁছাই। কিন্তুআমি দেখছি তোমরা এক মুর্খ সম্প্রদায়

[46:24]

(অতঃপর) তারা যখন শাস্তিকে মেঘরূপে তাদের উপত্যকা অভিমুখী দেখলতখন বললএ তো মেঘআমাদেরকে বৃষ্টি দেবে বরং এটা সেই বস্তুযা তোমরা তাড়াতাড়ি চেয়েছিলে। এটা বায়ু এতে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি

[46:25]

তার পালনকর্তার আদেশে সে সব কিছুকে ধ্বংস করে দেবে। অতঃপর তারা ভোর বেলায় এমন হয়ে গেল যেতাদের বসতিগুলো ছাড়া কিছুই দৃষ্টিগোচর হল না। আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে এমনিভাবে শাস্তি দিয়ে থাকি

[46:26]

আমি তাদেরকে এমন বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছিলামযে বিষয়ে তোমাদেরকে ক্ষমতা দেইনি। আমি তাদের দিয়েছিলামকর্ণচক্ষু ও হৃদয়কিন্তু তাদের কর্ণচক্ষু ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসল নাযখন তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করল এবং তাদেরকে সেই শাস্তি গ্রাস করে নিলযা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত

[46:27]

আমি তোমাদের আশপাশের জনপদ সমূহ ধ্বংস করে দিয়েছি এবং বার বার আয়াতসমূহ শুনিয়েছিযাতে তারা ফিরে আসে

[46:28]

অতঃপর আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে সান্নিধ্য লাভের জন্যে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিলতারা তাদেরকে সাহায্যকরল না কেনবরং তারা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেল। এটা ছিল তাদের মিথ্যা ও মনগড়া বিষয়

[46:29]

যখন আমি একদল জিনকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলামতারা কোরআন পাঠ শুনছিল,। তারা যখন কোরআন পাঠের জায়গায় উপস্থিত হলতখন পরস্পর বললচুপ থাক। অতঃপর যখন পাঠ সমাপ্ত হলতখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে সতর্ককারীরূপে ফিরে গেল

[46:30]

তারা বললহে আমাদের সম্প্রদায়আমরা এমন এক কিতাব শুনেছিযা মূসার পর অবর্তীণ হয়েছে। এ কিতাব পূর্ববর্তী সব কিতাবের প্রত্যায়ন করেসত্যধর্ম ও সরলপথের দিকে পরিচালিত করে

[46:31]

হে আমাদের সম্প্রদায়তোমরা আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনিতোমাদের গোনাহ মার্জনা করবেন

[46:32]

আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মানবে নাসে পৃথিবীতে আল্লাহকে অপারক করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী থাকবে না। এ ধরনের লোকই প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত

[46:33]

তারা কি জানে না যেআল্লাহ যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলোর সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তিবোধ করেননিতিনি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষমকেন নয়নিশ্চয় তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান

[46:34]

যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের সামনে পেশ করা হবেসেদিন বলা হবেএটা কি সত্য নয়তারা বলবেহঁ্যা আমাদের পালনকর্তার শপথ। আল্লাহ বলবেনআযাব আস্বাদন কর। কারণতোমরা কুফরী করতে

[46:35]

অতএবআপনি সবর করুনযেমন উচ্চ সাহসী পয়গম্বরগণ সবর করেছেন এবং ওদের বিষয়ে তড়িঘড়ি করবেন না। ওদেরকে যে বিষয়ে ওয়াদা দেয়া হততা যেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবেসেদিন তাদের মনে হবে যেন তারা দিনের এক মুহুর্তের বেশী পৃথিবীতে অবস্থান করেনি। এটা সুস্পষ্ট অবগতি। এখনতারাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবেযারা পাপাচারী সম্প্রদায়