Quran translations in many languages

Bengali Quran

Al-Anʽâm

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[6:1]

সর্ববিধ প্রশংসা আল্লাহরই জন্য যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভব করেছেন। তথাপি কাফেররা স্বীয় পালনকর্তার সাথে অন্যান্যকে সমতুল্য স্থির করে

[6:2]

তিনিই তোমাদেরকে মাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেনঅতঃপর নির্দিষ্টকাল নির্ধারণ করেছেন। আর অপর নির্দিষ্টকালআল্লাহর কাছে আছে। তথাপি তোমরা সন্দেহ কর

[6:3]

তিনিই আল্লাহ নভোমন্ডলে এবং ভূমন্ডলে। তিনি তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় জানেন এবং তোমরা যা কর তাও অবগত

[6:4]

তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী থেকে কোন নিদর্শন আসেনিযার প্রতি তারা বিমুখ হয় না

[6:5]

অতএবঅবশ্য তারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে যখন তা তাদের কাছে এসেছে। বস্তুতঃ অচিরেই তাদের কাছে ঐ বিষয়েরসংবাদ আসবেযার সাথে তারা উপহাস করত

[6:6]

তারা কি দেখেনি যেআমি তাদের পুর্বে কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছিযাদেরকে আমি পৃথিবীতে এমন প্রতিষ্ঠাদিয়েছিলামযা তোমাদেরকে দেইনি। আমি আকাশকে তাদের উপর অনবরত বৃষ্টি বর্ষণ করতে দিয়েছি এবং তাদের তলদেশে নদী সৃষ্টি করে দিয়েছিঅতঃপর আমি তাদেরকে তাদের পাপের কারণে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং তাদের পরে অন্য সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছি

[6:7]

যদি আমি কাগজে লিখিত কোন বিষয় তাদের প্রতি নাযিল করতামঅতঃপর তারা তা সহস্তে স্পর্শ করততবুও অবিশ্বাসীরা একথাই বলত যেএটা প্রকাশ্য জাদু বৈ কিছু নয়

[6:8]

তারা আরও বলে যেতাঁর কাছে কোন ফেরেশতা কেন প্রেরণ করা হল না যদি আমি কোন ফেরেশতা প্রেরণ করতামতবে গোটা ব্যাপারটাই শেষ হয়ে যেত। অতঃপর তাদেরকে সামান্যও অবকাশ দেওয়া হতনা

[6:9]

যদি আমি কোন ফেরেশতাকে রসূল করে পাঠাতামতবে সে মানুষের আকারেই হত। এতেও ঐ সন্দেহই করতযা এখন করছে

[6:10]

নিশ্চয়ই আপনার পূর্ববর্তী পয়গম্বরগণের সাথেও উপহাস করা হয়েছে। অতঃপর যারা তাঁদের সাথে উপহাস করেছিলতাদেরকে ঐ শাস্তি বেষ্টন করে নিলযা নিয়ে তারা উপহাস করত

[6:11]

বলে দিনঃ তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করঅতপর দেখমিথ্যারোপ কারীদের পরিণাম কি হয়েছে?

[6:12]

জিজ্ঞেস করুননভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে যা আছেতার মালিক কেবলে দিনঃআল্লাহ। তিনি অনুকম্পা প্রদর্শনকে নিজদায়িত্বে লিপিবদ্ধ করে নিয়েছেন। তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন। এর আগমনে কোন সন্দেহ নেই। যারা নিজেদের কে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেতারাই বিশ্বাসস্থাপন করে না

[6:13]

যা কিছু রাত ও দিনে স্থিতি লাভ করেতাঁরই। তিনিই শ্রোতামহাজ্ঞানী

[6:14]

আপনি বলে দিনঃ আমি কি আল্লাহ ব্যতীত-যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের স্রষ্টা এবং যিনি সবাইকে আহার্য দানকরেন ওতাঁকে কেউ আহার্য দান করে না অপরকে সাহায্যকারী স্থির করবআপনি বলে দিনঃ আমি আদিষ্ট হয়েছি যেসর্বাগ্রে আমিই আজ্ঞাবহ হব। আপনি কদাচ অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্তহবেন না

[6:15]

আপনি বলুনআমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্য হতে ভয় পাই কেননাআমি একটি মহাদিবসের শাস্তিকে ভয় করি

[6:16]

যার কাছ থেকে ঐদিন এ শাস্তি সরিয়ে নেওয়া হবেতার প্রতি আল্লাহর অনুকম্পা হবে। এটাই বিরাট সাফল্য

[6:17]

আর যদি আল্লাহ তোমাকে কোন কষ্ট দেনতবে তিনি ব্যতীত তা অপসারণকারী কেউ নেই। পক্ষান্তরে যদি তোমার মঙ্গল করেনতবে তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান

[6:18]

তিনিই পরাক্রান্ত স্বীয় বান্দাদের উপর। তিনিই জ্ঞানময়সর্বজ্ঞ

[6:19]

আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ সর্ববৃহ সাক্ষ্যদাতা কে বলে দিনঃ আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। আমার প্রতি একোরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে-যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কোরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি। তোমরা কি সাক্ষ্য দাও যেআল্লাহর সাথে অন্যান্য উপাস্যওরয়েছে আপনি বলে দিনঃ আমি এরূপ সাক্ষ্য দেব না। বলে দিনঃ তিনিই একমাত্র উপাস্যআমি অবশ্যই তোমাদের শিরক থেকে মুক্ত

[6:20]

যাদেরকে আমি কিতাব দান করেছিতারা তাকে চিনেযেমন তাদের সন্তানদেরকে চিনে। যারা নিজেদেরকে ক্ষতির মধ্যেফেলেছেতারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না

[6:21]

আর যেআল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথবা তাঁর নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলেতার চাইতে বড় জালেম কেনিশ্চয় জালেমরা সফলকাম হবে না

[6:22]

আর যেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করবঅতঃপর যারা শিরক করেছিলতাদের বলবঃ যাদেরকে তোমরা অংশীদার বলে ধারণা করতেতারা কোথায়?

[6:23]

অতঃপর তাদের কোন অপরিচ্ছন্নতা থাকবে নাতবে এটুকুই যে তারা বলবে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহর কসমআমরা মুশরিক ছিলাম না

[6:24]

দেখতোকিভাবে মিথ্যা বলছে নিজেদের বিপক্ষে এবং যেসব বিষয় তারা আপনার প্রতি মিছামিছি রচনা করততা সবই উধাও হয়ে গেছে

[6:25]

তাদের কেউ কেউ আপনার দিকে কান লাগিয়ে থাকে। আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি যাতে একে না বুঝে এবং তাদের কানে বোঝা ভরে দিয়েছি। যদি তারা সব নিদর্শন অবলোকন করে তবুও সেগুলো বিশ্বাস করবে না। এমনকিতারা যখন আপনার কাছে ঝগড়া করতে আসেতখন কাফেররা বলেঃ এটি পুর্ববর্তীদের কিচ্ছাকাহিনী বৈ তো নয়

[6:26]

তারা এ থেকে বাধা প্রদান করে এবং এ থেকে পলায়ন করে। তারা নিজেদেরকে ধ্বংস করেছেকিন্তু বুঝছে না

[6:27]

আর আপনি যদি দেখেনযখন তাদেরকে দোযখের উপর দাঁড় করানো হবে! তারা বলবেঃ কতই না ভাল হতযদি আমরা পুনঃ প্রেরিত হতামতা হলে আমরা স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনসমূহে মিথ্যারোপ করতাম না এবং আমরা বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম

[6:28]

এবং তারা ইতি পূর্বে যা গোপন করততা তাদের সামনে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। যদি তারা পুনঃ প্রেরিত হয়তবুও তাইকরবেযা তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী

[6:29]

তারা বলেঃ আমাদের এ পার্থিব জীবনই জীবন। আমাদেরকে পুনরায় জীবিত হতে হবে না

[6:30]

আর যদি আপনি দেখেনযখন তাদেরকে প্রতিপালকের সামনে দাঁড় করানো হবে। তিনি বলবেনঃ এটা কি বাস্তব সত্যনয়তারা বলবেঃ হঁ্যা আমাদের প্রতিপালকের কসম। তিনি বলবেনঃ অতএবস্বীয় কুফরের কারণে শাস্তি আস্বাদন কর

[6:31]

নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্তযারা আল্লাহর সাক্ষাৎকে মিথ্যা মনে করেছে। এমনকিযখন কিয়ামত তাদের কাছে অকস্মাৎ এসে যাবেতারা বলবেঃ হায় আফসোসএর ব্যাপারে আমরা কতই না ক্রটি করেছি তার স্বীয় বোঝা স্বীয় পৃষ্ঠে বহন করবে। শুনে রাখতারা যে বোঝা বহন করবেতা নিকৃষ্টতর বোঝা

[6:32]

পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস পরহেযগারদের জন্যে শ্রেষ্টতর। তোমরা কি বুঝ না ?

[6:33]

আমার জানা আছে যেতাদের উক্তি আপনাকে দুঃখিত করে। অতএবতারা আপনাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে নাবরং জালেমরা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করে

[6:34]

আপনার পূর্ববর্তী অনেক পয়গম্বরকে মিথ্যা বলা হয়েছে। তাঁরা এতে ছবর করেছেন। তাদের কাছে আমার সাহায্যপৌঁছে পর্যন্ত তারা নির্যাতিত হয়েছেন। আল্লাহর বানী কেউ পরিবর্তন করতে পারে না আপনার কাছে পয়গম্বরদের কিছু কাহিনী পৌঁছেছে

[6:35]

আর যদি তাদের বিমুখতা আপনার পক্ষে কষ্টকর হয়তবে আপনি যদি ভূতলে কোন সুড়ঙ্গ অথবা আকাশে কোন সিড়িঅনুসন্ধান করতে সমর্থ হনঅতঃপর তাদের কাছে কোন একটি মোজেযা আনতে পারেনতবে নিয়ে আসুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে সবাইকে সরল পথে সমবেত করতে পারতেন। অতএবআপনি নির্বোধদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না

[6:36]

তারাই মানেযারা শ্রবণ করে আল্লাহ মৃতদেরকে জীবিত করে উত্থিত করবেন। অতঃপর তারা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে

[6:37]

তারা বলেঃ তার প্রতি তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেনবলে দিনঃ আল্লাহ নিদর্শনঅবতরণ করতে পূর্ন সক্ষমকিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না

[6:38]

আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু’ ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাইতোমাদের মতই একেকটি শ্রেণী। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে

[6:39]

যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলেতারা অন্ধকারের মধ্যে মূক ও বধির। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন

[6:40]

বলুনবলতো দেখিযদি তোমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি পতিত হয় কিংবা তোমাদের কাছে কিয়ামত এসে যায়তবে তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে ডাকবে যদি তোমরা সত্যবাদী হও

[6:41]

বরং তোমরা তো তাঁকেই ডাকবে অতঃপর যে বিপদের জন্যে তাঁকে ডাকবেতিনি ইচ্ছা করলে তা দুরও করে দেন। যাদেরকে অংশীদার করছতখন তাদেরকে ভুলে যাবে

[6:42]

আর আমি আপনার পূর্ববর্তী উম্মতদের প্রতিও পয়গম্বর প্রেরণ করেছিলাম। অতঃপর আমি তাদেরকে অভাব-অনটন ওরোগ-ব্যধি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম যাতে তারা কাকুতি মিনতি করে

[6:43]

অতঃপর তাদের কাছে যখন আমার আযাব আসলতখন কেন কাকুতি-মিনতি করল না বস্তুতঃ তাদের অন্তর কঠোর হয়ে গেল এবং শয়তান তাদের কাছে সুশোভিত করে দেখালযে কাজ তারা করছিল

[6:44]

অতঃপর তারা যখন ঐ উপদেশ ভুলে গেলযা তাদেরকে দেয়া হয়েছিলতখন আমি তাদের সামনে সব কিছুর দ্বার উম্মুক্তকরে দিলাম। এমনকিযখন তাদেরকে প্রদত্ত বিষয়াদির জন্যে তারা খুব গর্বিত হয়ে পড়লতখন আমি অকস্মাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম। তখন তারা নিরাশ হয়ে গেল

[6:45]

অতঃপর জালেমদের মূল শিকড় কর্তিত হল। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্যেযিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা

[6:46]

আপনি বলুনঃ বল তো দেখিযদি আল্লাহ তোমাদের কান ও চোখ নিয়ে যান এবং তোমাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেনতবে এবং তোমাদের আল্লাহ ব্যতীত এমন উপাস্য কে আছেযে তোমাদেরকে এগুলো এনে দেবেদেখআমি কিভাবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি। তথাপি তারা বিমুখ হচ্ছে

[6:47]

বলে দিনঃ দেখতোযদি আল্লাহর শাস্তিআকস্মিক কিংবা প্রকাশ্যে তোমাদের উপর আসেতবে জালেমসম্প্রদায় ব্যতীত কে ধ্বংস হবে?

[6:48]

আমি পয়গম্বরদেরকে প্রেরণ করি নাকিন্তু সুসংবাদাতা ও ভীতি প্রদর্শকরূপে অতঃপর যে বিশ্বাস স্থাপন করে এবংসংশোধিত হয়তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না

[6:49]

যারা আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলেতাদেরকে তাদের নাফরমানীর কারণে আযাব স্পর্শ করবে

[6:50]

আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যেআমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই আমি এমন বলি না যেআমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করিযা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারেতোমরা কি চিন্তা কর না ?

[6:51]

আপনি এ কোরআন দ্বারা তাদেরকে ভয়-প্রদর্শন করুনযারা আশঙ্কা করে স্বীয় পালনকর্তার কাছে এমতাবস্থায় একত্রিতহওয়ার যেতাদের কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী হবে না-যাতে তারা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে

[6:52]

আর তাদেরকে বিতাড়িত করবেন নাযারা সকাল-বিকাল স্বীয় পালকর্তার এবাদত করেতাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। তাদের হিসাব বিন্দুমাত্রও আপনার দায়িত্বে নয় এবং আপনার হিসাব বিন্দুমাত্রও তাদের দায়িত্বে নয় যেআপনি তাদেরকে বিতাড়িত করবেন। নতুবা আপনি অবিচারকারীদের অন্তর্ভূক্তহয়ে যাবেন

[6:53]

আর এভাবেই আমি কিছু লোককে কিছু লোক দ্বারা পরীক্ষায় ফেলেছি যাতে তারা বলে যেএদেরকেই কি আমাদের সবার মধ্য থেকে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহ দান করেছেনআল্লাহ কি কৃতজ্ঞদের সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত নন ?

[6:54]

আর যখন তারা আপনার কাছে আসবে যারা আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করেতখন আপনি বলে দিনঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তোমাদের পালনকর্তা রহমত করা নিজ দায়িত্বে লিখে নিয়েছেন যেতোমাদের মধ্যে যে কেউ অজ্ঞতাবশতঃ কোন মন্দ কাজ করেঅনন্তর এরপরে তওবা করে নেয় এবং সৎ হয়ে যায়তবে তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীলকরুণাময়

[6:55]

আর এমনিভাবে আমি নিদর্শনসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি-যাতে অপরাধীদের পথ সুস্পষ্ট হয়ে উঠে

[6:56]

আপনি বলে দিনঃ আমাকে তাদের এবাদত করতে নিষেধ করা হয়েছেতোমরা আল্লাহকে ছেড়ে যাদের এবাদত কর। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের খুশীমত চলবো না। কেননাতাহলে আমি পথভ্রান্ত হয়ে যাব এবং সুপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হব না

[6:57]

আপনি বলে দিনঃ আমার কাছে প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একটি প্রমাণ আছে এবং তোমরা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছ তোমরা যে বস্তু শীঘ্র দাবী করছতা আমার কাছে নেই। আল্লাহ ছাড়া কারো নির্দেশ চলে না। তিনি সত্য বর্ণনা করেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠতম মীমাংসাকারী

[6:58]

আপনি বলে দিনঃ যদি আমার কাছে তা থাকতযা তোমরা শীঘ্র দাবী করছতবে আমার ও তোমাদের পারস্পরিক বিবাদ কবেই চুকে যেত। আল্লাহ জালেমদের সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে অবহিত

[6:59]

তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছেতিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে নাকিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় নাকিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থেরয়েছে

[6:60]

তিনিই রাত্রি বেলায় তোমাদেরকে করায়ত্ত করে নেন এবং যা কিছু তোমরা দিনের বেলায় করতা জানেন। অতঃপর তোমাদেরকে দিবসে সম্মুখিত করেন-যাতে নির্দিষ্ট ওয়াদা পূর্ণ হয়

[6:61]

অনন্তর তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমাদেরকে বলে দিবেনযা কিছু তোমরা করছিলে। তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রবল। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী। এমন কিযখন তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে নেয়

[6:62]

অতঃপর সবাইকে সত্যিকার প্রভু আল্লাহর কাছে পৌঁছানো হবে। শুনে রাখফয়সালা তাঁরই এবং তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণকরবেন

[6:63]

আপনি বলুনঃ কে তোমাদেরকে স্থল ও জলের অন্ধকার থেকে উদ্ধার করেনযখন তোমরা তাঁকে বিনীতভাবে ও গোপনে আহবান কর যেযদি আপনি আমাদের কে এ থেকে উদ্ধার করে নেনতবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব

[6:64]

আপনি বলে দিনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তা থেকে মুক্তি দেন এব সব দুঃখ-বিপদ থেকে। তথাপি তোমরা শেরক কর

[6:65]

আপনি বলুনঃ তিনিই শক্তিমান যেতোমাদের উপর কোন শাস্তি উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল থেকে প্রেরণ করবেন অথবা তোমাদেরকে দলে-উপদলে বিভক্ত করে সবাইকে মুখোমুখী করে দিবেন এবং এককে অন্যের উপরআক্রমণের স্বাদ আস্বাদন করাবেন। দেখআমি কেমন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি যাতে তারা বুঝে নেয়

[6:66]

আপনার সম্প্রদায় একে মিথ্যা বলছেঅথচ তা সত্য। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের উপর নিয়োজিত নই

[6:67]

প্রত্যেক খবরের একটি সময় নির্দিষ্ট রয়েছে এবং অচিরেই তোমরা তা জেনে নিবে

[6:68]

যখন আপনি তাদেরকে দেখেনযারা আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করেতখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না

[6:69]

এদের যখন বিচার করা হবে তখন পরহেযগারদের উপর এর কোন প্রভাব পড়বে নাকিন্তু তাদের দায়িত্ব উপদেশ দান করা যাতে ওরা ভীত হয়

[6:70]

তাদেরকে পরিত্যাগ করুনযারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকেধোঁকায় ফেলে রেখেছে। কোরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিনযাতে কেউ স্বীয় কর্মে এমন ভাবে গ্রেফতার না হয়ে যায় যেআল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী নেই এবং যদি তারা জগতের বিনিময়ও প্রদান কবেতবু তাদের কাছ থেকে তা গ্রহণ করা হবে না। একাই স্বীয় কর্মে জড়িত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্যে উত্তপ্ত পানি এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে-কুফরের কারণে

[6:71]

আপনি বলে দিনঃ আমরা কি আল্লাহ ব্যতীত এমন বস্তুকে আহবান করবযে আমাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না এবং আমরা কি পশ্চাৎপদে ফিরে যাব,এরপর যেআল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেনঐ ব্যক্তির মতযাকে শয়তানরা বনভুমিতে বিপথগামী করে দিয়েছে-সে উদভ্রান্ত হয়ে ঘোরাফেরা করছে। তার সহচররা তাকে পথের দিকে ডেকে বলছেঃ আসআমাদের কাছেআপনি বলে দিনঃ নিশ্চয় আল্লাহর পথই সুপথ। আমরা আদিষ্ট হয়েছি যাতে স্বীয় পালনকর্তা আজ্ঞাবহ হয়ে যাই

[6:72]

এবং তা এই যেনামায কায়েম কর এবং তাঁকে ভয় কর। তাঁর সামনেই তোমরা একত্রিত হবে

[6:73]

তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি বলবেনঃ হয়ে যাঅতঃপর হয়ে যাবে। তাঁর কথা সত্যযেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার করা হবেসেদিন তাঁরই আধিপত্য হবে। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ বিষয়ে জ্ঞাত। তিনিই প্রজ্ঞাময়সর্বজ্ঞ

[6:74]

স্মরণ করযখন ইব্রাহীম পিতা আযরকে বললেনঃ তুমি কি প্রতিমা সমূহকে উপাস্য মনে করআমি দেখতে পাচ্ছি যেতুমি ও তোমার সম্প্রদায় প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট

[6:75]

আমি এরূপ ভাবেই ইব্রাহীমকে নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের অত্যাশ্চর্য বস্তুসমূহ দেখাতে লাগলাম-যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসী হয়ে যায়

[6:76]

অনন্তর যখন রজনীর অন্ধকার তার উপর সমাচ্ছন্ন হলতখন সে একটি তারকা দেখতে পেলবললঃ ইহা আমার প্রতিপালক। অতঃপর যখন তা অস্তমিত হল তখন বললঃ আমি অস্তগামীদেরকে ভালবাসি না

[6:77]

অতঃপর যখন চন্দ্রকে ঝলমল করতে দেখলবললঃ এটি আমার প্রতিপালক। অনন্তর যখন তা অদৃশ্য হয়ে গেলতখন বলল যদি আমার প্রতিপালক আমাকে পথ-প্রদর্শন না করেনতবে অবশ্যই আমি বিভ্রান্ত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব

[6:78]

অতঃপর যখন সূর্যকে চকচক করতে দেখলবললঃ এটি আমার পালনকর্তাএটি বৃহত্তর। অতপর যখন তা ডুবে গেলতখন বলল হে আমার সম্প্রদায়তোমরা যেসব বিষয়কে শরীক করআমি ওসব থেকে মুক্ত

[6:79]

আমি এক মুখী হয়ে স্বীয় আনন ঐ সত্তার দিকে করেছিযিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরেক নই

[6:80]

তাঁর সাথে তার সম্প্রদায় বিতর্ক করল। সে বললঃ তোমরা কি আমার সাথে আল্লাহর একত্ববাদ সম্পর্কে বিতর্ক করছঅথচ তিনি আমাকে পথ প্রদর্শন করেছেন। তোমরা যাদেরকে শরীক করআমি তাদেরকে ভয় করি না তবে আমার পালকর্তাই যদি কোন কষ্ট দিতে চান। আমার পালনকর্তাই প্রত্যেক বস্তুকে স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। তোমরা কি চিন্তা কর না ?

[6:81]

যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সাথে শরীক করে রেখেছতাদেরকে কিরূপে ভয় করঅথচ তোমরা ভয় কর না যেতোমরা আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে শরীক করছযাদের সম্পর্কে আল্লাহ তোমাদের প্রতি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। অতএবউভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে শাস্তি লাভের অধিক যোগ্য কেযদি তোমরা জ্ঞানী হয়ে থাক

[6:82]

যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় বিশ্বাসকে শেরেকীর সাথে মিশ্রিত করে নাতাদের জন্যেই শান্তি এবং তারাই সুপথগামী

[6:83]

এটি ছিল আমার যুক্তিযা আমি ইব্রাহীমকে তাঁর সম্প্র?দায়ের বিপক্ষে প্রদান করেছিলাম। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় সমুন্নত করি। আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়মহাজ্ঞানী

[6:84]

আমি তাঁকে দান করেছি ইসহাক এবং এয়াকুব। প্রত্যেককেই আমি পথ প্রদর্শন করেছি এবং পূর্বে আমি নূহকে পথ প্রদর্শনকরেছি-তাঁর সন্তানদের মধ্যে দাউদসোলায়মানআইউবইউসুফমূসা ও হারুনকে এমনিভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি

[6:85]

আর ও যাকারিয়াইয়াহিয়াঈসা এবং ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত ছিল

[6:86]

এবং ইসরাঈলইয়াসাইউনূসলূতকে প্রত্যেককেই আমি সারা বিশ্বের উপর গৌরবাম্বিত করেছি

[6:87]

আর ও তাদের কিছু সংখ্যক পিতৃপুরুষসন্তান-সন্ততি ও ভ্রাতাদেরকেআমি তাদেরকে মনোনীত করেছি এবং সরল পথপ্রদর্শন করেছি

[6:88]

এটি আল্লাহর হেদায়েত। স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছাএপথে চালান। যদি তারা শেরেকী করততবে তাদের কাজকর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত

[6:89]

তাদেরকেই আমি গ্রন্থশরীয়ত ও নবুয়ত দান করেছি। অতএবযদি এরা আপনার নবুয়ত অস্বীকার করেতবে এর জন্যে এমন সম্প্রদায় নির্দিষ্ট করেছিযারা এতে অবিশ্বাসী হবে না

[6:90]

এরা এমন ছিলযাদেরকে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেছিলেন। অতএবআপনিও তাদের পথ অনুসরণ করুন। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের কাছে এর জন্যে কোন পারিশ্রমিক চাই না। এটি সারা বিশ্বের জন্যে একটি উপদেশমাত্র

[6:91]

তারা আল্লাহকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে পারেনিযখন তারা বললঃ আল্লাহ কোন মানুষের প্রতি কোন কিছু অবতীর্ণ করেননি। আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ ঐ গ্রন্থ কে নাযিল করেছেযা মূসা নিয়ে এসেছিল যা জ্যোতিবিশেষ এবং মানব মন্ডলীর জন্যে হোদায়েতস্বরূপযা তোমরা বিক্ষিপ্তপত্রে রেখে লোকদের জন্যে প্রকাশ করছ এবং বহুলাংশকে গোপন করছ। তোমাদেরকে এমন অনেক বিষয় শিক্ষা দেয়া হয়েছেযা তোমরা এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরা জানতো না। আপনি বলে দিনঃ আল্লাহ নাযিল করেছেন। অতঃপর তাদেরকে তাদের ক্রীড়ামূলক বৃত্তিতে ব্যাপৃত থাকতে দিন

[6:92]

এ কোরআন এমন গ্রন্থযা আমি অবতীর্ন করেছিবরকতময়পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনিমক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামায সংরক্ষণ করে

[6:93]

ঐ ব্যক্তির চাইতে বড় জালেম কে হবেযে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা বলেঃ আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণহয়েছে। অথচ তার প্রতি কোন ওহী আসেনি এবং যে দাবী করে যেআমিও নাযিল করে দেখাচ্ছি যেমন আল্লাহ নাযিল করেছেন। যদি আপনি দেখেন যখন জালেমরা মৃত্যু যন্ত্রণায় থাকে এবং ফেরেশতারা স্বীয় হস্ত প্রসারিত করে বলেবের কর স্বীয় আত্মা! অদ্য তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি প্রদান করা হবে। কারণতোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তাঁর আয়াত সমূহ থেকে অহংকার করতে

[6:94]

তোমরা আমার কাছে নিঃসঙ্গ হয়ে এসেছআমি প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম। আমি তোদেরকে যা দিয়েছিলামতা পশ্চাতেই রেখে এসেছ। আমি তো তোমাদের সাথে তোমাদের সুপারিশকারীদের কে দেখছি না যাদের সম্পর্কে তোমাদের দাবী ছিল যেতারা তোমাদের ব্যাপারে অংশীদার। বাস্তুবিকই তোমাদের পরস্পরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমাদের দাবী উধাও হয়ে গেছে

[6:95]

নিশ্চয় আল্লাহই বীজ ও আঁটি থেকে অঙ্কুর সৃষ্টিকারীতিনি জীবিতকে মৃত থেকে বের করেন ও মৃতকে জীবিত থেকে বেরকরেন। তিনি আল্লাহ অতঃপর তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ?

[6:96]

তিনি প্রভাত রশ্মির উন্মেষক তিনি রাত্রিকে আরামদায়ক করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে হিসেবের জন্য রেখেছেন। এটিপরাক্রান্তমহাজ্ঞানীর নির্ধারণ

[6:97]

তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্রপুঞ্জ সৃজন করেছেন যাতে তোমরা স্থল ও জলের অন্ধকারে পথ প্রাপ্ত হও নিশ্চয় যারা জ্ঞানী তাদের জন্যে আমি নির্দেশনাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করেদিয়েছি

[6:98]

তিনিই তোমাদের কে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন। অনন্তর একটি হচ্ছে তোমাদের স্থায়ী ঠিকানা ও একটি হচ্ছে গচ্ছিত স্থল। নিশ্চয় আমি প্রমাণাদি বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি তাদের জন্যেযারা চিন্তা করে

[6:99]

তিনিই আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন অতঃপর আমি এর দ্বারা সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছিঅতঃপর আমি এ থেকেসবুজ ফসল নির্গত করেছিযা থেকে যুগ্ম বীজ উৎপন্ন করি। খেজুরের কাঁদি থেকে গুচ্ছ বের করিযা নুয়ে থাকে এবং আঙ্গুরের বাগানযয়তুনআনার পরস্পর সাদৃশ্যযুক্ত এবং সাদৃশ্যহীন। বিভিন্ন গাছের ফলের প্রতি লক্ষ্য কর যখন সেুগুলো ফলন্ত হয় এবং তার পরিপক্কতার প্রতি লক্ষ্য কর। নিশ্চয় এ গুলোতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদারদের জন্যে

[6:100]

তারা জিনদেরকে আল্লাহর অংশীদার স্থির করেঅথচ তাদেরকে তিনিই সৃস্টি করেছেন। তারা অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহর জন্যে পুত্র ও কন্যা সাব্যস্ত করে নিয়েছে। তিনি পবিত্র ও সমুন্নততাদের বর্ননা থেকে

[6:101]

তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আদি স্রষ্টা। কিরূপে আল্লাহর পুত্র হতে পারেঅথচ তাঁর কোন সঙ্গী নেই তিনি যাবতীয়কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ

[6:102]

তিনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা। অতএবতোমরা তাঁরই এবাদত কর। তিনি প্রত্যেক বস্তুর কার্যনির্বাহী

[6:103]

দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে নাঅবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শীসুবিজ্ঞ

[6:104]

তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে নিদর্শনাবলী এসে গেছে। অতএবযে প্রত্যক্ষ করবেসে নিজেরই উপকার করবে এবং যে অন্ধ হবেসে নিজেরই ক্ষতি করবে। আমি তোমাদের পর্যবেক্ষক নই

[6:105]

এমনি ভাবে আমি নিদর্শনাবলী ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বর্ণনা করি যাতে তারা না বলে যেআপনি তো পড়ে নিয়েছেন এবং যাতে আমি একে সুধীবৃন্দের জন্যে খুব পরিব্যক্ত করে দেই

[6:106]

আপনি পথ অনুসরণ করুনযার আদেশ পালনকর্তার পক্ষ থেকে আসে। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং মুশরিকদের তরফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন

[6:107]

যদি আল্লাহ চাইতেন তবে তারা শেরক করত না। আমি আপনাকে তাদের সংরক্ষক করিনি এবং আপনি তাদের কার্যনির্বাহী নন

[6:108]

তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো নাযাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃআল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে দিয়েছি। অতঃপর স্বীয় পালনকর্তার কাছে তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করত

[6:109]

তারা জোর দিয়ে আল্লাহর কসম খায় যেযদি তাদের কাছে কোন নিদর্শন আসেতবে অবশ্যই তারা বিশ্বাস স্থাপন করবেআপনি বলে দিনঃ নিদর্শনাবলী তো আল্লাহর কাছেই আছে। হে মুসলমানগণতোমাদেরকে কে বলল যেযখন তাদের কাছে নিদর্শনাবলী আসবেতখন তারা বিশ্বাস স্থাপন করবেই ?

[6:110]

আমি ঘুরিয়ে দিব তাদের অন্তর ও দৃষ্টিকেযেমন-তারা এর প্রতি প্রথমবার বিশ্বাস স্থাপন করেনি এবং আমি তাদেরকেতাদের অবাধ্যতায় উদভ্রান্ত ছেড়ে দিব

[6:111]

আমি যদি তাদের কাছে ফেরেশতাদেরকে অবতারণ করতাম এবং তাদের সাথে মৃতরা কথাবার্তা বলত এবং আমি সববস্তুকে তাদের সামনে জীবিত করে দিতামতথাপি তারা কখনও বিশ্বাস স্থাপনকারী নয়কিন্তু যদি আল্লাহ চান। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুর্খ

[6:112]

এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তানমানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরকেকারুকার্যখচিত কথাবার্তা শিক্ষা দেয়। যদি আপনার পালনকর্তা চাইতেনতবে তারা এ কাজ করত না

[6:113]

অতএবআপনি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যাপবাদকে মুক্ত ছেড়ে দিন যাতে কারুকার্যখচিত বাক্যের প্রতি তাদের মন আকৃষ্ট হয় যারা পরকালে বিশ্বাস করে না এবং তারা একেও পছন্দ করে নেয় এবং যাতে ঐসব কাজ করেযা তারা করছে

[6:114]

তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন বিচারক অনুসন্ধান করবঅথচ তিনিই তোমাদের প্রতি বিস্তারিত গ্রন্থ অবতীর্নকরেছেনআমি যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করেছিতারা নিশ্চিত জানে যেএটি আপনার প্রতি পালকের পক্ষ থেকে সত্যসহ অবর্তীর্ন হয়েছে। অতএবআপনি সংশয়কারীদের অন্তর্ভুক্তহবেন না

[6:115]

আপনার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারীমহাজ্ঞানী

[6:116]

আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেনতবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে

[6:117]

আপনার প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে খুব জ্ঞাত রয়েছেনযারা তাঁর পথ থেকে বিপথগামী হয় এবং তিনি তাদেরকেও খুব ভাল করে জানেনযারা তাঁর পথে অনুগমন করে

[6:118]

অতঃপর যে জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়তা থেকে ভক্ষণ কর যদি তোমরা তাঁর বিধানসমূহে বিশ্বাসী হও

[6:119]

কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে নাযার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুরবিশদ বিবরণ দিয়েছেনযেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেনকিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালালযখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন

[6:120]

তোমরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন গোনাহ পরিত্যাগ কর। নিশ্চয় যারা গোনাহ করেছেতারা অতিসত্বর তাদের কৃতকর্মের শাস্তি পাবে

[6:121]

যেসব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় নাসেগুলো থেকে ভক্ষণ করো নাএ ভক্ষণ করা গোনাহ। নিশ্চয়শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে প্রত্যাদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য করতোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে

[6:122]

আর যে মৃত ছিল অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে এমন একটি আলো দিয়েছিযা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে। সে কি ঐ ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারেযে অন্ধকারে রয়েছে-সেখান থেকে বের হতে পারছে নাএমনিভাবে কাফেরদের দৃষ্টিতে তাদের কাজকর্মকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে

[6:123]

আর এমনিভাবে আমি প্রত্যেক জনপদে অপরাধীদের জন্য কিছু সর্দার নিয়োগ করেছি-যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করেতাদের সে চক্রান্ত তাদের নিজেদের বিরুদ্ধেইকিন্তু তারা তা উপলব্ধি করতে পারে না

[6:124]

যখন তাদের কাছে কোন আয়াত পৌঁছেতখন বলেআমরা কখনই মানব না যেপর্যন্ত না আমরাও তা প্রদত্ত হইযাআল্লাহর রসূলগণ প্রদত্ত হয়েছেন। আল্লাহ এ বিষয়ে সুপারিজ্ঞাত যেকোথায় স্বীয় পয়গাম প্রেরণ করতে হবে। যারা অপরাধ করছেতারা অতিসত্বর আল্লাহর কাছে পৌছেলাঞ্ছনা ও কঠোর শাস্তি পাবেতাদের চক্রান্তের কারণে

[6:125]

অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চানতার বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চানতার বক্ষকে সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। এমনি ভাবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। আল্লাহ তাদের উপর আযাব বর্ষন করেন

[6:126]

আর এটাই আপনার পালনকর্তার সরল পথ। আমি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্যে আয়াতসমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ননা করেছি

[6:127]

তাদের জন্যেই তাদের প্রতিপালকের কাছে নিরাপত্তার গৃহ রয়েছে এবং তিনি তাদের বন্ধু তাদের কর্মের কারণে

[6:128]

যেদিন আল্লাহ সবাইকে একত্রিত করবেনহে জিন সম্প্রদায়তোমরা মানুষদের মধ্যে অনেককে অনুগামী করে নিয়েছতাদের মানব বন্ধুরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তাআমরা পরস্পরে পরস্পরের মাধ্যমে ফল লাভ করেছি। আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করেছিলেনআমরা তাতে উপনীত হয়েছি আল্লাহ বলবেনঃ আগুন হল তোমাদের বাসস্থান। তথায় তোমরা চিরকাল অবস্থান করবেকিন্তু যখন চাইবেন আল্লাহ। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়মহাজ্ঞানী

[6:129]

এমনিভাবে আমি পাপীদেরকে একে অপরের সাথে যুক্ত করে দেব তাদের কাজকর্মের কারণে

[6:130]

হে জ্বিন ও মানব সম্প্রদায়তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে পয়গম্বরগণ আগমন করেনিযাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানাবলী বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনের সাক্ষাতের ভীতি প্রদর্শন করতেনতারা বলবেঃ আমরা স্বীয় গোনাহ স্বীকার করে নিলাম। পার্থিব জীবন তাদেরকে প্রতারিত করেছে। তারা নিজেদের বিরুদ্ধে স্বীকার করে নিয়েছে যেতারা কাফের ছিল

[6:131]

এটা এ জন্যে যেআপনার প্রতিপালক কোন জনপদের অধিবাসীদেরকে জুলুমের কারণে ধ্বংস করেন না এমতাবস্থায় যেতথাকার অধিবাসীরা অজ্ঞ থাকে

[6:132]

প্রত্যেকের জন্যে তাদের কর্মের আনুপাতিক মর্যাদা আছে এবং আপনার প্রতিপালক তাদের কর্ম সম্পর্কে বেখবর নন

[6:133]

আপনার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষীকরুণাময়। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে উচ্ছেদ করে দিবেন এবং তোমাদের পর যাকে ইচ্ছা তোমাদের স্থলে অভিষিক্ত করবেনযেমন তোমাদেরকে অন্য এক সম্প্রদায়ের বংশধর থেকে সৃষ্টি করেছেন

[6:134]

যে বিষয়ের ওয়াদা তোমাদের সাথে করা হয়তা অবশ্যই আগমন করবে এবং তোমরা অক্ষম করতে পারবে না

[6:135]

আপনি বলে দিনঃ হে আমার সম্প্রদায়তোমরা স্বস্থানে কাজ করে যাওআমিও কাজ করি। অচিরেই জানতে পারবে যেপরিণাম গৃহ কে লাভ করে। নিশ্চয় জালেমরা সুফলপ্রাপ্ত হবে না

[6:136]

আল্লাহ যেসব শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেনসেগুলো থেকে তারা এক অংশ আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে অতঃপর নিজ ধারণা অনুসারে বলে এটা আল্লাহর এবং এটা আমাদের অংশীদারদের। অতঃপর যে অংশ তাদের অংশীদারদেরতা তো আল্লাহর দিকে পৌঁছে না এবং যা আল্লাহর তা তাদেরউপাস্যদের দিকে পৌছে যায়। তাদের বিচার কতই না মন্দ

[6:137]

এমনিভাবে অনেক মুশরেকের দৃষ্টিতে তাদের উপাস্যরা সন্তান হত্যাকে সুশোভিত করে দিয়েছে যেন তারা তাদেরকে বিনষ্ট করে দেয় এবং তাদের ধর্মমতকে তাদের কাছে বিভ্রান্ত করে দেয়। যদি আল্লাহ চাইতেনতবে তারা এ কাজ করত না। অতএবআপনি তাদেরকে এবং তাদের মনগড়া বুলিকেপরিত্যাগ করুন

[6:138]

তারা বলেঃ এসব চতুষ্পদ জন্তু ও শস্যক্ষেত্র নিষিদ্ধ। আমরা যাকে ইচছা করিসে ছাড়া এগুলো কেউ খেতে পারবে নাতাদের ধারণা অনুসারে। আর কিছুসংখ্যক চতুষ্পদ জন্তুর পিঠে আরোহন হারাম করা হয়েছে এবং কিছু সংখ্যক চতুষ্পদ জন্তুর উপর তারা ভ্রান্ত ধারনা বশতঃ আল্লাহর নাম উচ্চারণকরে নাতাদের মনগড়া বুলির কারণেঅচিরেই তিনি তাদের কে শাস্তি দিবেন

[6:139]

তারা বলেঃ এসব চতুষ্পদ জন্তুর পেটে যা আছেতা বিশেষ ভাবে আমাদের পুরুষদের জন্যে এবং আমাদের মহিলাদের জন্যে তা হারাম। যদি তা মৃত হয়তবে তার প্রাপক হিসাবে সবাই সমান। অচিরেই তিনি তাদেরকে তাদের বর্ণনার শাস্তি দিবেন। তিনি প্রজ্ঞাময়মহাজ্ঞানী

[6:140]

নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেযারা নিজ সন্তানদেরকে নির্বুদ্ধিতাবশতঃ কোন প্রমাণ ছাড়াই হত্যা করেছে এবং আল্লাহ তাদেরকে যেসব দিয়েছিলেনসেগুলোকে আল্লাহর প্রতি ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে হারাম করে নিয়েছে। নিশ্চিতই তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং সুপথগামী হয়নি

[6:141]

তিনিই উদ্যান সমূহ সৃষ্টি করেছে-তাওযা মাচার উপর তুলে দেয়া হয়এবং যা মাচার উপর তোলা হয় না এবং খর্জুর বৃক্ষ ও শস্যক্ষেত্র যেসবের স্বাদবিশিষ্ট এবং যয়তুন ও আনার সৃষ্টিকরেছেন-একে অন্যের সাদৃশ্যশীল এবং সাদৃশ্যহীন। এগুলোর ফল খাওযখন ফলন্ত হয় এবং হক দান কর কর্তনের সময়ে এবং অপব্যয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দকরেন না

[6:142]

তিনি সৃষ্টি করেছেন চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে বোঝা বহনকারীকে এবং খর্বাকৃতিকে। আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছু দিয়েছেনতা থেকে খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু

[6:143]

সৃষ্টি করেছেন আটটি নর ও মাদী ভেড়ার মধ্যে দুই প্রকার ও ছাগলের মধ্যে দুই প্রকার। জিজ্ঞেস করুনতিনি কি উভয় নর হারাম করেছেননা উভয় মাদীকে না যা উভয় মাদীর পেটে আছেতোমরা আমাকে প্রমাণসহ বলযদি তোমরা সত্যবাদী হও

[6:144]

সৃষ্টি করেছেন উটের মধ্যে দুই প্রকার এবং গরুর মধ্যে দুই প্রকার। আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ তিনি কি উভয় নর হারামকরেছেননা উভয় মাদীকেনা যা উভয় মাদীর পেটে আছেতোমরা কি উপস্থিত ছিলেযখন আল্লাহ এ নির্দেশ দিয়েছিলেনঅতএব সে ব্যক্তি অপেক্ষা বেশী অত্যচারী কেযে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা ধারণা পোষন করে যাতে করে মানুষকে বিনা প্রমাণে পথভ্রষ্ট করতে পারেনিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না

[6:145]

আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছেতন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোনভক্ষণকারীর জন্যেযা সে ভক্ষণ করেকিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র অথবা অবৈধযবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গকরা হয়। অতপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্গন করে নানিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু

[6:146]

ইহুদীদের জন্যে আমি প্রত্যেক নখবিশিষ্ট জন্তু হারাম করেছিলাম এবং ছাগল ও গরু থেকে এতদুভয়ের চর্বি আমি তাদের জন্যে হারাম করেছিলামকিন্তু ঐ চর্বিযা পৃষ্টে কিংবা অন্ত্রে সংযুক্ত থাকে অথবা অস্থির সাথে মিলিত থাকে। তাদের অবাধ্যতার কারণে আমি তাদেরকে এ শাস্তি দিয়েছিলাম আর আমি অবশ্যই সত্যবাদী

[6:147]

যদি তারা আপনাকে মিথ্যবাদী বলেতবে বলে দিনঃ তোমার প্রতিপালক সুপ্রশস্ত করুণার মালিক। তাঁর শাস্তি অপরাধীদের উপর থেকে টলবে না

[6:148]

এখন মুশরেকরা বলবেঃ যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেনতবে না আমরা শিরক করতামনা আমাদের বাপ দাদারা এবং না আমরা কোন বস্তুকে হারাম করতাম। এমনিভাবে তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছেএমন কি তারা আমার শাস্তি আস্বাদন করেছে। আপনি বলুনঃ তোমাদের কাছে কি কোন প্রমাণ আছে যা আমাদেরকে দেখাতে পার। তোমরা শুধুমাত্র আন্দাজের অনুসরণ কর এবং তোমরা শুধু অনুমান করে কথাবল

[6:149]

আপনি বলে দিনঃ অতএবপরিপূর্ন যুক্তি আল্লাহরই। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে পথ প্রদর্শন করতেন

[6:150]

আপনি বলুনঃ তোমাদের সাক্ষীদেরকে আনযারা সাক্ষ্য দেয় যেআল্লাহ তাআলা এগুলো হারাম করেছেন। যদি তারা সাক্ষ্য দেয়তবে আপনি এ সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন না এবং তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন নাযারা আমার নির্দেশাবলীকে মিথ্যা বলেযারা পরকালে বিশ্বাস করে না এবং যারা স্বীয় প্রতিপালকের সমতুল্য অংশীদার করে

[6:151]

আপনি বলুনঃ এসআমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাইযেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন তাএই যেআল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো নাপিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার করো স্বীয় সন্তানদেরকে দারিদ্রে?র কারণে হত্যা করো নাআমি তোমাদেরকে ও তাদেরকে আহার দেইনির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো নাপ্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্যযাকে হত্যা করা আল্লাহ হারাম করেছেনতাকে হত্যা করো নাকিন্তু ন্যায়ভাবে তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেনযেন তোমরা বুঝ

[6:152]

এতীমদের ধনসম্পদের কাছেও যেয়ো নাকিন্তু উত্তম পন্থায় যে পর্যন্ত সে বয়ঃপ্রাপ্ত না হয়। ওজন ও মাপ পূর্ণ কর ন্যায় সহকারে। আমি কাউকে তার সাধ্যের অতীত কষ্ট দেই না। যখন তোমরা কথা বলতখন সুবিচার করযদিও সে আত্নীয়ও হয়। আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর

[6:153]

তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেনযেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। নিশ্চিত এটি আমার সরল পথ। অতএবএ পথে চল এবং অন্যান্য পথে চলো না। তা হলে সেসব পথ তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেনযাতে তোমরা সংযত হও

[6:154]

অতঃপর আমি মূসাকে গ্রন্থ দিয়েছিৎকর্মীদের প্রতি নেয়ামতপূর্ণ করার জন্যপ্রত্যেক বস্তুর বিশদ বিবরণের জন্যেহোদায়াতের জন্যে এবং করুণার জন্যে-যাতে তারা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতে বিশ্বাসী হয়

[6:155]

এটি এমন একটি গ্রন্থযা আমি অবতীর্ণ করেছিখুব মঙ্গলময়অতএবএর অনুসরণ কর এবং ভয় কর-যাতে তোমরাকরুণাপ্রাপ্ত হও

[6:156]

এ জন্যে যেকখনও তোমরা বলতে শুরু করঃ গ্রন্থ তো কেবল আমাদের পূর্ববর্তী দুসম্প্রদায়ের প্রতিই অবতীর্ণ হয়েছে এবং আমরা সেগুলোর পাঠ ও পঠন সম্পর্কে কিছুই জানতাম না

[6:157]

কিংবা বলতে শুরু করঃ যদি আমাদের প্রতি কোন গ্রন্থ অবতীর্ণ হতআমরা এদের চাইতে অধিক পথপ্রাপ্ত হতামঅতএবতোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে সুষ্পষ্ট প্রমাণহেদায়েত ও রহমত এসে গেছে। অতঃপর সে ব্যক্তির চাইতে অধিক অনাচারী কে হবেযে আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে এবং গা বাঁচিয়ে চলে। অতি সত্ত্বর আমি তাদেরকে শাস্তি দেব যারা আমার আয়াত সমূহ থেকে গা বাঁচিয়ে চলে-জঘন্য শাস্তি তাদের গা বাঁচানোর কারণে

[6:158]

তারা শুধু এ বিষয়ের দিকে চেয়ে আছে যেতাদের কাছে ফেরেশতা আগমন করবে কিংবা আপনার পালনকর্তা আগমন করবেন অথবা আপনার পালনকর্তার কোন নির্দেশ আসবে। যেদিন আপনার পালনকর্তার কোন নিদর্শন আসবেসেদিন এমন কোন ব্যক্তির বিশ্বাস স্থাপন তার জন্যে ফলপ্রসূ হবে নাযে পূর্ব থেকে বিশ্বাস স্থাপন করেনি কিংবা স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কোনরূপ সৎকর্ম করেনি। আপনি বলে দিনঃ তোমরা পথের দিকে চেয়ে থাকআমরাও পথে দিকে তাকিয়ে রইলাম

[6:159]

নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছেতাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই তাদের ব্যাপার আল্লাহ তাআয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে

[6:160]

যে একটি সৎকর্ম করবেসে তার দশগুণ পাবে এবং যেএকটি মন্দ কাজ করবেসে তার সমান শাস্তিই পাবে। বস্তুতঃ তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না

[6:161]

আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ প্রদর্শন করেছেন একাগ্রচিত্ত ইব্রাহীমের বিশুদ্ধ ধর্ম। সেঅংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না

[6:162]

আপনি বলুনঃ আমার নামাযআমার কোরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে

[6:163]

তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল

[6:164]

আপনি বলুনঃ আমি কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য প্রতিপালক খোঁজবঅথচ তিনিই সবকিছুর প্রতিপালকযে ব্যক্তি কোনগোনাহ করেতা তারই দায়িত্বে থাকে। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। অতঃপর তোমাদেরকে সবাইকে প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অনন্তর তিনিতোমাদেরকে বলে দিবেনযেসব বিষয়ে তোমরা বিরোধ করতে

[6:165]

তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের উপর মর্যাদা সমুন্নত করেছেনযাতে তোমাদের কে এবিষয়ে পরীক্ষা করেনযা তোমাদেরকে দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তি দাতা এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীলদয়ালু