Quran translations in many languages

Bengali Quran

Al-Anfâl

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[8:1]

আপনার কাছে জিজ্ঞেস করেগনীমতের হুকুম। বলে দিনগণীমতের মাল হল আল্লাহর এবং রসূলের। অতএবতোমরাআল্লাহকে ভয় কর এবং নিজেদের অবস্থা সংশোধন করে নাও। আর আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য করযদি ঈমানদার হয়ে থাক

[8:2]

যারা ঈমানদারতারা এমন যেযখন আল্লাহর নাম নেয়া হয় তখন ভীত হয়ে পড়ে তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনেপাঠ করা হয় কালামতখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় পরওয়ার দেগারের প্রতি ভরসা পোষণ করে

[8:3]

সে সমস্ত লোক যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে রুযী দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে

[8:4]

তারাই হল সত্যিকার ঈমানদার! তাদের জন্য রয়েছে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট মর্যাদাক্ষমা এবং সম্মানজনকরুযী

[8:5]

যেমন করে তোমাকে তোমার পরওয়ারদেগার ঘর থেকে বের করেছেন ন্যায় ও সৎকাজের জন্যঅথচ ঈমানদারদের একটি দল (তাতে) সম্মত ছিল না

[8:6]

তারা তোমার সাথে বিবাদ করছিল সত্য ও ন্যায় বিষয়েতা প্রকাশিত হবার পরতারা যেন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেদেখতে দেখতে

[8:7]

আর যখন আল্লাহ দুটি দলের একটির ব্যাপারে তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যেসেটি তোমাদের হস্তগত হবেআর তোমরা কামনা করছিলে যাতে কোন রকম কন্টক নেইতাই তোমাদের ভাগে আসুকঅথচ আল্লাহ চাইতেন সত্যকে স্বীয় কালামের মাধ্যমে সত্যে পরিণত করতে এবং কাফেরদের মূল কর্তন করে দিতে,

[8:8]

যাতে করে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দেনযদিও পাপীরা অসন্তুষ্ট হয়

[8:9]

তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকটতখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন যেআমি তোমাদিগকে সাহায্য করব ধারাবহিকভাবে আগত হাজার ফেরেশতার মাধ্যমে

[8:10]

আর আল্লাহ তো শুধু সুসংবাদ দান করলেন যাতে তোমাদের মন আশ্বস্ত হতে পারে। আর সাহায্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ছাড়াঅন্য কারো পক্ষ থেকে হতে পারে না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তির অধিকারী হেকমত ওয়ালা

[8:11]

যখন তিনি আরোপ করেন তোমাদের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন তা নিজের পক্ষ থেকে তোমাদের প্রশান্তির জন্য এবং তোমাদের উপর আকাশ থেকে পানি অবতরণ করেনযাতে তোমাদিগকে পবিত্র করে দেন এবং যাতে তোমাদের থেকে অপসারিত করে দেন শয়তানের অপবিত্রতা। আর যাতে করে সুরক্ষিত করে দিতে পারেন তোমাদের অন্তরসমূহকে এবং তাতে যেন সুদৃঢ় করে দিতে পারেন তোমাদের পা গুলো

[8:12]

যখন নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদিগকে তোমাদের পরওয়ারদেগার যেআমি সাথে রয়েছি তোমাদেরসুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়

[8:13]

যেহেতু তারা অবাধ্য হয়েছে আল্লাহ এবং তাঁর রসূলেরসেজন্য এই নির্দেশ। বস্তুতঃ যে লোক আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্য হয়নিঃসন্দেহে আল্লাহর শাস্তি অত্যন্ত কঠোর

[8:14]

আপাততঃ বর্তমান এ শাস্তি তোমরা আস্বাদন করে নাও এবং জেনে রাখ যেকাফেরদের জন্য রয়েছে দোযখের আযাব

[8:15]

হে ঈমানদারগণতোমরা যখন কাফেরদের সাথে মুখোমুখী হবেতখন পশ্চাদপসরণ করবে না

[8:16]

আর যে লোক সেদিন তাদের থেকে পশ্চাদপসরণ করবেঅবশ্য যে লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তনকল্পে কিংবা যে নিজ সৈন্যদের নিকট আশ্রয় নিতে আসে সে ব্যতীত অন্যরা আল্লাহর গযব সাথে নিয়ে প্রত্যাবর্তন করবে। আর তার ঠিকানা হল জাহান্নাম। বস্তুতঃ সেটা হল নিকৃষ্ট অবস্থান

[8:17]

সুতরাং তোমরা তাদেরকে হত্যা করনিবরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর তুমি মাটির মুষ্ঠি নিক্ষেপ করনিযখন তা নিক্ষেপ করেছিলেবরং তা নিক্ষেপ করেছিলেন আল্লাহ স্বয়ং যেন ঈমানদারদের প্রতি এহসান করতে পারেন যথার্থভাবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ শ্রবণকারীপরিজ্ঞাত

[8:18]

এটাতো গেলআর জেনে রেখোআল্লাহ নস্যাৎ করে দেবেন কাফেরদের সমস্ত কলা-কৌশল

[8:19]

তোমরা যদি মীমাংসা কামনা করতাহলে তোমাদের নিকট মীমাংসা পৌছে গেছে। আর যদি তোমরা প্রত্যাবর্তন করতবে তা তোমাদের জন্য উত্তম এবং তোমরা যদি তাই করতবে আমি ও তেমনি করব। বস্তুতঃ তোমাদের কোনই কাজে আসবে না তোমাদের দল-বলতা যত বেশীই হোক। জেনে রেখ আল্লাহ রয়েছেন ঈমানদারদের সাথে

[8:20]

হে ঈমানদারগণআল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না

[8:21]

আর তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো নাযারা বলে যেআমরা শুনেছিঅথচ তারা শোনেনা

[8:22]

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলার নিকট সমস্ত প্রাণীর তুলনায় তারাই মূক ও বধিরযারা উপলদ্ধি করে না

[8:23]

বস্তুতঃ আল্লাহ যদি তাদের মধ্যে কিছুমাত্র শুভ চিন্তা জানতেনতবে তাদেরকে শুনিয়ে দিতেন। আর এখনই যদি তাদের শুনিয়ে দেনতবে তারা মুখ ঘুরিয়ে পালিয়ে যাবে

[8:24]

হে ঈমানদারগণআল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ মান্য করযখন তোমাদের সে কাজের প্রতি আহবান করা হয়যাতেরয়েছে তোমাদের জীবন। জেনে রেখোআল্লাহ মানুষের এবং তার অন্তরের মাঝে অন্তরায় হয়ে যান। বস্তুতঃ তোমরা সবাই তাঁরই নিকট সমবেত হবে

[8:25]

আর তোমরা এমন ফাসাদ থেকে বেঁচে থাক যা বিশেষতঃ শুধু তাদের উপর পতিত হবে না যারা তোমাদের মধ্যে জালেম এবং জেনে রেখ যেআল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠোর

[8:26]

আর স্মরণ করযখন তোমরা ছিলে অল্পপরাজিত অবস্থায় পড়েছিলে দেশেভীত-সস্ত্রস্ত্র ছিলে যেতোমাদের না অন্যেরা ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। অতঃপর তিনি তোমাদিগকে আশ্রয়ের ঠিকানা দিয়েছেনস্বীয় সাহায্যের দ্বারা তোমাদিগকে শক্তি দান করেছেন এবং পরিচ্ছন্ন জীবিকা দিয়েছেন যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় কর

[8:27]

হে ঈমানদারগণখেয়ানত করোনা আল্লাহর সাথে ও রসূলের সাথে এবং খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক আমানতেজেনে-শুনে

[8:28]

আর জেনে রাখতোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি অকল্যাণের সম্মুখীনকারী। বস্তুতঃ আল্লাহর নিকট রয়েছে মহা সওয়াব

[8:29]

হে ঈমানদারগণ তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করতে থাকতবে তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন এবং তোমাদের থেকে তোমাদের পাপকে সরিয়ে দেবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অত্যন্ত মহান

[8:30]

আর কাফেরেরা যখন প্রতারণা করত আপনাকে বন্দী অথবা হত্যা করার উদ্দেশ্যে কিংবা আপনাকে বের করে দেয়ার জন্য তখন তারা যেমন ছলনা করত তেমনিআল্লাহও ছলনা করতেন। বস্তুতঃ আল্লাহর ছলনা সবচেয়ে উত্তম

[8:31]

আর কেউ যখন তাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে তবে বলেআমরা শুনেছিইচ্ছা করলে আমরাও এমন বলতে পারিএ তো পূর্ববর্তী ইতিকথা ছাড়া আর কিছুই নয়

[8:32]

তাছাড়া তারা যখন বলতে আরম্ভ করে যেইয়া আল্লাহএই যদি তোমার পক্ষ থেকে (আগত) সত্য দ্বীন হয়ে থাকেতবেআমাদের উপর আকাশ থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদের উপর বেদনাদায়ক আযাব নাযিল কর

[8:33]

অথচ আল্লাহ কখনই তাদের উপর আযাব নাযিল করবেন না যতক্ষণ আপনি তাদের মাঝে অবস্থান করবেন। তাছাড়া তারা যতক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের উপর আযাব দেবেন না

[8:34]

আর তাদের মধ্যে এমন কি বিষয় রয়েছেযার ফলে আল্লাহ তাদের উপর আযাব দান করবেন না। অথচ তারা মসজিদে-হারামে যেতে বাধাদান করেঅথচ তাদের সে অধিকার নেই। এর অধিকার তো তাদেরই রয়েছে যারা পরহেযগার। কিন্তু তাদের অধিকাংশই সে বিষয়ে অবহিত নয়

[8:35]

আর কাবার নিকট তাদের নামায বলতে শিস দেয়া আর তালি বাজানো ছাড়া অন্য কোন কিছুই ছিল না। অতএবএবার নিজেদের কৃত কুফরীর আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর

[8:36]

নিঃসন্দেহে যেসব লোক কাফেরতারা ব্যয় করে নিজেদের ধন-সম্পদযাতে করে বাধাদান করতে পারে আল্লাহর পথেবস্তুতঃ এখন তারা আরো ব্যয় করবে। তারপর তাই তাদের জন্য আক্ষেপের কারণ হয়ে এবং শেষ পর্যন্ত তারা হেরে যাবে। আর যারা কাফের তাদেরকে দোযখের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে

[8:37]

যাতে পৃথক করে দেন আল্লাহ অপবিত্র ও না-পাককে পবিত্র ও পাক থেকে। আর যাতে একটির পর একটিকে স্থাপন করেসমবেত স্তুপে পরিণত করেন এবং পরে দোযখে নিক্ষেপ করেন। এরাই হল ক্ষতিগ্রস্ত

[8:38]

তুমি বলে দাওকাফেরদেরকে যেতারা যদি বিরত হয়ে যায়তবে যা কিছু ঘটে গেছে ক্ষমা হবে যাবে। পক্ষান্তরে আবারও যদি তাই করেতবে পুর্ববর্তীদের পথ নির্ধারিত হয়ে গেছে

[8:39]

আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন

[8:40]

আর তারা যদি না মানেতবে জেনে রাখআল্লাহ তোমাদের সমর্থকএবং কতই না চমৎকার সাহায্যকার

[8:41]

আর এ কথাও জেনে রাখ যেকোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবেতার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্যরসূলের জন্যতাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্যযদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনেযেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল

[8:42]

আর যখন তোমরা ছিলে সমরাঙ্গনের এ প্রান্তে আর তারা ছিল সে প্রান্তে অথচ কাফেলা তোমাদের থেকে নীচে নেমেগিয়েছিল। এমতাবস্থায় যদি তোমরা পারস্পরিক অঙ্গীকারাবদ্ধ হতেতবে তোমরা এক সঙ্গে সে ওয়াদা পালন করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এমন এক কাজ করতে চেয়েছিলেনযা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল যাতে সে সব লোক নিহত হওয়ার ছিলপ্রমাণ প্রতিষ্ঠার পর এবং যাদের বাঁচার ছিলতারা বেঁচে থাকে প্রমাণ প্রতিষ্ঠার পর। আরনিশ্চিতই আল্লাহ শ্রবণকারীবিজ্ঞ

[8:43]

আল্লাহ যখন তোমাকে স্বপ্নে সেসব কাফেরের পরিমাণ অল্প করে দেখালেনবেশী করে দেখালে তোমরা কাপুরুষতা অবলম্বন করতে এবং কাজের বেলায় বিপদ সৃষ্টি করতে। কিন্তু আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন। তিনি অতি উত্তমভাবেই জানেনযা কিছু অন্তরে রয়েছে

[8:44]

আর যখন তোমাদেরকে দেখালেন সে সৈন্যদল মোকাবেলার সময় তোমাদের চোখে অল্প এবং তোমাদেরকে দেখালেন তাদের চোখে বেশীযাতে আল্লাহ সে কাজ করে নিতে পারেন যা ছিল নির্ধারিত। আর সব কাজই আল্লাহর নিকট গিয়ে পৌছায়

[8:45]

হে ঈমানদারগণতোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হওতখন সুদৃঢ় থাক এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার

[8:46]

আর আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তাকরতবে তোমরা কাপুরুষ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে

[8:47]

আর তাদের মত হয়ে যেয়ো নাযারা বেরিয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে গর্বিতভাবে এবং লোকদেরকে দেখাবার উদ্দেশে আর আল্লাহর পথে তারা বাধা দান করত। বস্তুতঃ আল্লাহর আয়ত্বে রয়েছে সে সমস্ত বিষয় যা তারা করে

[8:48]

আর যখন সুদৃশ্য করে দিল শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপকে এবং বলল যেআজকের দিনে কোন মানুষই তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর আমি হলাম তোমাদের সমর্থকঅতঃপর যখন সামনাসামনী হল উভয় বাহিনী তখন সে অতি দ্রুত পায়ে পেছনে দিকে পালিয়ে গেল এবং বললআমি তোমাদের সাথে না-আমি দেখছিযা তোমরা দেখছ নাআমি ভয় করি আল্লাহকে। আর আল্লাহর আযাব অত্যন্ত কঠিন

[8:49]

যখন মোনাফেকরা বলতে লাগল এবং যাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্তএরা নিজেদের ধর্মের উপর গর্বিত। বস্তুতঃ যারা ভরসা করে আল্লাহর উপরসে নিশ্চিন্তকেননা আল্লাহ অতি পরাক্রমশীলসুবিজ্ঞ

[8:50]

আর যদি তুমি দেখযখন ফেরেশতারা কাফেরদের জান কবজ করেপ্রহার করেতাদের মুখে এবং তাদের পশ্চাদদেশেআর বলেজ্বলন্ত আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর

[8:51]

এই হলো সে সবের বিনিময় যা তোমরা তোমাদের পূর্বে পাঠিয়েছ নিজের হাতে। বস্তুতঃ এটি এ জন্য যেআল্লাহবান্দার উপর যুলুম করেন না

[8:52]

যেমনরীতি রয়েছে ফেরাউনের অনুসারীদের এবং তাদের পূর্বে যারা ছিল তাদের ব্যাপারে যেএরা আল্লাহর নির্দেশেরপ্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং সেজন্য আল্লাহ তাআলা তাদের পাকড়াও করেছেন তাদেরই পাপের দরুন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তিশালীকঠিন শাস্তিদাতা

[8:53]

তার কারণ এই যেআল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন নাসে সব নেয়ামতযা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেনযতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরিবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়। বস্তুতঃ আল্লাহ শ্রবণকারীমহাজ্ঞানী

[8:54]

যেমন ছিল রীতি ফেরাউনের বংশধর এবং যারা তাদের পূর্বে ছিলতারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল স্বীয় পালনকর্তারনিদর্শনসমূহকে। অতঃপর আমি তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি তাদের পাপের দরুন এবং ডুবিয়ে মেরেছি ফেরাউনের বংশধরদেরকে। বস্তুতঃ এরা সবাই ছিল যালেম

[8:55]

সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্টযারা অস্বীকারকারী হয়েছে অতঃপর আর ঈমান আনেনি

[8:56]

যাদের সাথে তুমি চুক্তি করেছ তাদের মধ্য থেকে অতঃপর প্রতিবার তারা নিজেদের কৃতচুক্তি লংঘন করে এবং ভয় করেনা

[8:57]

সুতরাং যদি কখনো তুমি তাদেরকে যুদ্ধে পেয়ে যাওতবে তাদের এমন শাস্তি দাওযেন তাদের উত্তরসূরিরা তাই দেখেপালিয়ে যায়তাদেরও যেন শিক্ষা হয়

[8:58]

তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকেতবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে যেন হয়ে যাও তোমরাও তারা সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজপ্রতারককে পছন্দ করেন না

[8:59]

আর কাফেররা যেন একা যা মনে না করে যেতারা বেঁচে গেছেকখনও এরা আমাকে পরিশ্রান্ত করতে পারবে না

[8:60]

আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকেযেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপর ও যাদেরকে তোমরা জান নাআল্লাহ তাদেরকে চেনেন। বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহেতা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না

[8:61]

আর যদি তারা সন্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেতাহলে তুমিও সে দিকেই আগ্রহী হও এবং আল্লাহর উপর ভরসা করনিঃসন্দেহে তিনি শ্রবণকারীপরিজ্ঞাত

[8:62]

পক্ষান্তরে তারা যদি তোমাকে প্রতারণা করতে চায়তবে তোমার জন্য আল্লাহই যথেষ্টতিনিই তোমাকে শক্তিযুগিয়েছেন স্বীয় সাহায্যে ও মুসলমানদের মাধ্যমে

[8:63]

আর প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সেসব কিছু ব্যয় করে ফেলতেযা কিছু যমীনের বুকে রয়েছেতাদেরমনে প্রীতি সঞ্চার করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি পরাক্রমশালীসুকৌশলী

[8:64]

হে নবীআপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট

[8:65]

হে নবীআপনি মুসলমানগণকে ৎসাহিত করুন জেহাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে যদি বিশ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকেতবেজয়ী হবে দুশর মোকাবেলায়। আর যদি তোমাদের মধ্যে থাকে একশ লোকতবে জয়ী হবে হাজার কাফেরের উপর থেকে তার কারণ ওরা জ্ঞানহীন

[8:66]

এখন বোঝা হালকা করে দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর এবং তিনি জেনে নিয়েছেন যেতোমাদের মধ্য দূর্বলতা রয়েছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যদি দৃঢ়চিত্ত একশ লোক বিদ্যমান থাকেতবে জয়ী হবে দুশর উপর। আর যদি তোমরা এক হাজার হও তবে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী জয়ী হবে দুহাজারের উপর আর আল্লাহ রয়েছেন দৃঢ়চিত্ত লোকদের সাথে

[8:67]

নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখাযতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা করঅথচ আল্লাহ চান আখেরাত। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা

[8:68]

যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ লিখে রেখেছেনতাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌছাত

[8:69]

সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীলমেহেরবান

[8:70]

হে নবীতাদেরকে বলে দাওযারা তোমার হাতে বন্দী হয়ে আছে যেআল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কোন রকম মঙ্গলচিন্তারয়েছে বলে জানেনতবে তোমাদেরকে তার চেয়ে বহুগুণ বেশী দান করবেন যা তোমাদের কাছ থেকে বিনিময়ে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া তোমাদেরকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ ক্ষমাশীলকরুণাময়

[8:71]

আর যদি তারা তোমার সাথে প্রতারণা করতে চায়-বস্তুতঃ তারা আল্লাহর সাথেও ইতিপূর্বে প্রতারণা করেছেঅতঃপরতিনি তাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছেন। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে পরিজ্ঞাতসুকৌশলী

[8:72]

এতে কোন সন্দেহ নেই যেযারা ঈমান এনেছেদেশ ত্যাগ করেছেস্বীয় জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছেএবং যারা তাদেরকে আশ্রয় ও সাহায্য সহায়তা দিয়েছেতারা একে অপরের সহায়ক। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু দেশ ত্যাগ করেনি তাদের বন্ধুত্বে তোমাদের প্রয়োজন নেই যতক্ষণ না তারা দেশত্যাগ করে। অবশ্য যদি তারা ধর্মীয় ব্যাপারে তোমাদের সহায়তা কামনা করেতবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য। কিন্তু তোমাদের সাথে যাদের সহযোগী চুক্তি বিদ্যমান রয়েছেতাদের মোকাবেলায় নয়। বস্তুতঃ তোমরা যা কিছু করআল্লাহ সেসবই দেখেন

[8:73]

আর যারা কাফের তারা পারস্পরিক সহযোগীবন্ধু। তোমরা যদি এমন ব্যবস্থা না করতবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বিস্তার লাভকরবে এবং দেশময় বড়ই অকল্যাণ হবে

[8:74]

আর যারা ঈমান এনেছেনিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয়দিয়েছেসাহায্য-সহায়তা করেছেতাঁরা হলো সত্যিকার মুসলমান। তাঁদের জন্যে রয়েছেক্ষমা ও সম্মানজনক রুযী

[8:75]

আর যারা ঈমান এনেছে পরবর্তী পর্যায়ে এবং ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং তোমাদের সাথে সম্মিলিত হয়ে জেহাদ করেছেতারাও তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত। বস্তুতঃ যারা আত্নীয়আল্লাহর বিধান মতে তারা পরস্পর বেশী হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ যাবতীয় বিষয়ে সক্ষম ও অবগত