Quran translations in many languages

Bengali Quran

Al-Aʽrâf

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[7:1]

আলিফলামমীমছোয়াদ

[7:2]

এটি একটি গ্রন্থযা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছেযাতে করে আপনি এর মাধ্যমে ভীতি-প্রদর্শন করেন। অতএবএটি পৌছে দিতে আপনার মনে কোনরূপ সংকীর্ণতা থাকা উচিত নয়। আর এটিই বিশ্বাসীদের জন্যে উপদেশ

[7:3]

তোমরা অনুসরণ করযা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদেরঅনুসরণ করো না

[7:4]

আর তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। অনেক জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের কাছে আমার আযাব রাত্রি বেলায় পৌছেছে অথবা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত অবস্থায়

[7:5]

অনন্তর যখন তাদের কাছে আমার আযাব উপস্থিত হয়তখন তাদের কথা এই ছিল যেতারা বললঃ নিশ্চয় আমরা অত্যাচারী ছিলাম

[7:6]

অতএবআমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব যাদের কাছে রসূল প্রেরিত হয়েছিল এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেসকরব রসূলগণকে

[7:7]

অতঃপর আমি স্বজ্ঞানে তাদের কাছে অবস্থা বর্ণনা করব। বস্তুতঃ আমি অনুপস্থিত তো ছিলাম না

[7:8]

আর সেদিন যথার্থই ওজন হবে অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবেতারাই সফলকাম হবে

[7:9]

এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবেতারাই এমন হবেযারা নিজেদের ক্ষতি করেছে। কেননাতারা আমার আয়াত সমূহ অস্বীকার করতো

[7:10]

আমি তোমাদেরকে পৃথিবীতে ঠাই দিয়েছি এবং তোমাদের জীবিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর

[7:11]

আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিএরপর আকার-অবয়বতৈরী করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলছি-আদমকে সেজদা কর তখন সবাই সেজদা করেছেকিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না

[7:12]

আল্লাহ বললেনঃ আমি যখন নির্দেশ দিয়েছিতখন তোকে কিসে সেজদা করতে বারণ করলসে বললঃ আমি তার চাইতে শ্রেষ্ট আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা

[7:13]

বললেন তুই এখান থেকে যা। এখানে অহংকার করার কোন অধিকার তোর নাই। অতএব তুই বের হয়ে যা। তুই হীনতমদের অন্তর্ভুক্ত

[7:14]

সে বললঃ আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন

[7:15]

আল্লাহ বললেনঃ তোকে সময় দেয়া হল

[7:16]

সে বললঃ আপনি আমাকে যেমন উদভ্রান্ত করেছেনআমিও অবশ্য তাদের জন্যে আপনার সরল পথে বসে থাকবো

[7:17]

এরপর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকেপেছন দিক থেকেডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না

[7:18]

আল্লাহ বললেনঃ বের হয়ে যা এখান থেকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে। তাদের যে কেউ তোর পথেচলবেনিশ্চয় আমি তোদের সবার দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করে দিব

[7:19]

হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে এ বৃক্ষের কাছে যেয়োনা তাহলে তোমরা গোনাহগার হয়ে যাবে

[7:20]

অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করলযাতে তাদের অঙ্গযা তাদের কাছে গোপন ছিলতাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননিতবে তা এ কারণে যেতোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী

[7:21]

সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বললঃ আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্খী

[7:22]

অতঃপর প্রতারণাপূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল। অনন্তর যখন তারা বৃক্ষ আস্বাদন করলতখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল এবং তারা নিজের উপর বেহেশতের পাতা জড়াতে লাগল। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যেশয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু

[7:23]

তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেনতবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব

[7:24]

আল্লাহ বললেনঃ তোমরা নেমে যাও তোমরা এক অপরের শত্রু। তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে বাসস্থান আছে এবং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ফল ভোগ আছে

[7:25]

বললেনঃ তোমরা সেখানেই জীবিত থাকবেসেখানেই মৃত্যুবরন করবে এবং সেখান থেকেই পুনরুঙ্খিত হবে

[7:26]

হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছিযা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাকএটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শনযাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে

[7:27]

হে বনী-আদম শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করেযেমন সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করেদিয়েছে এমতাবস্থায় যেতাদের পোশাক তাদের থেকে খুলিয়ে দিয়েছি-যাতে তাদেরকে লজ্জাস্থান দেখিয়ে দেয়। সে এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখেযেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখ না। আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, , যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না

[7:28]

তারা যখন কোন মন্দ কাজ করেতখন বলে আমরা বাপ-দাদাকে এমনি করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন। আল্লাহ মন্দকাজের আদেশ দেন না। এমন কথা আল্লাহর প্রতি কেন আরোপ করযা তোমরা জান না

[7:29]

আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সেজদার সময় স্বীয় মুখমন্ডলসোজা রাখ এবং তাঁকে খাঁটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাক। তোমাদেরকে প্রথমে যেমন সৃষ্টি করেছেনপুনর্বারও সৃজিত হবে

[7:30]

একদলকে পথ প্রদর্শন করেছেন এবং একদলের জন্যে পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানদেরকেবন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং ধারণা করে যেতারা সৎপথে রয়েছে

[7:31]

হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাওখাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না

[7:32]

আপনি বলুনঃ আল্লাহর সাজ-সজ্জাকেযা তিনি বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্রবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছেআপনি বলুনঃ এসব নেয়ামত আসলে পার্থিব জীবনেমুমিনদের জন্যে এবং কিয়ামতের দিন খাঁটিভাবে তাদেরই জন্যে। এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি তাদের জন্যে যারা বুঝে

[7:33]

আপনি বলে দিনঃ আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গোনাহঅন্যায়-অত্যাচার আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে অংশীদার করাতিনি যার কোনসনদ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করাযা তোমরা জান না

[7:34]

প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবেতখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতেপারবেআর না এগিয়ে আসতে পারবে

[7:35]

হে বনী-আদমযদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে পয়গম্বর আগমন করে তোমাদেরকে আমার আয়াত সমূহ শুনায়তবে যে ব্যক্তি সংযত হয় এবং সৎকাজ অবলম্বন করেতাদের কোন আশঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না

[7:36]

যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলবে এবং তা থেকে অহংকার করবেতারাই দোযখী এবং তথায় চিরকাল থাকবে

[7:37]

অতঃপর ঐ ব্যক্তির চাইতে অধিক জালেম কেযে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নির্দেশাবলীকে মিথ্যা বলেতারা তাদের গ্রন্থে লিখিত অংশ পেয়ে যাবে। এমন কিযখন তাদের কাছে আমার প্রেরিত ফেরশতারা প্রাণ নেওয়ার জন্যে পৌছেতখন তারা বলেতারা কোথায় গেলযাদের কেতোমরা আল্লাহ ব্যতীত আহবান করতেতারা উত্তর দেবেঃ আমাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেছেতারা নিজেদের সম্পর্কে স্বীকার করবে যেতারা অবশ্যই কাফের ছিল

[7:38]

আল্লাহ বলবেনঃ তোমাদের পূর্বে জিন ও মানবের যেসব সম্প্রদায় চলে গেছেতাদের সাথে তোমরাও দোযখে যাও। যখন এক সম্প্রদায় প্রবেশ করবেতখন অন্য সম্প্রদায়কে অভিসম্পাত করবে। এমনকিযখন তাতে সবাই পতিত হবেতখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক এরাই আমাদেরকে বিপথগামী করেছিল। অতএবআপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন। আল্লাহ বলবেন প্রত্যেকেরই দ্বিগুণতোমরা জান না

[7:39]

পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবেঃ তাহলে আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই অতএবশাস্তি আস্বাদন কর স্বীয় কর্মের কারণে

[7:40]

নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছেতাদের জন্যে আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে। আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি

[7:41]

তাদের জন্যে নরকাগ্নির শয্যা রয়েছে এবং উপর থেকে চাদর। আমি এমনিভাবে জালেমদেরকে শাস্তি প্রদান করি

[7:42]

যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং ৎকর্ম করেছে আমি কাউকে তার সামর্থ্যের চাইতে বেশী বোঝা দেই না। তারাই জান্নাতেরঅধিবাসী। তারা তাতেই চিরকাল থাকবে

[7:43]

তাদের অন্তরে যা কিছু দুঃখ ছিলআমি তা বের করে দেব। তাদের তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণী প্রবাহিত হবে। তারা বলবেঃআল্লাহ শোকরযিনি আমাদেরকে এ পর্যন্ত পৌছিয়েছেন। আমরা কখনও পথ পেতাম নাযদি আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করতেন। আমাদের প্রতিপালকের রসূল আমাদের কাছে সত্যকথা নিয়ে এসেছিলেন। আওয়াজ আসবেঃ এটি জান্নাত। তোমরা এর উত্তরাধিকারী হলে তোমাদের কর্মের প্রতিদানে

[7:44]

জান্নাতীরা দোযখীদেরকে ডেকে বলবেঃ আমাদের সাথে আমাদের প্রতিপালক যে ওয়াদা করেছিলেনতা আমরা সত্য পেয়েছিঅতএবতোমরাও কি তোমাদের প্রতিপালকের ওয়াদা সত্য পেয়েছতারা বলবেঃ হ্যাঁ অতঃপর একজন ঘোষক উভয়ের মাঝখানে ঘোষণা করবেঃ আল্লাহর অভিসম্পাত জালেমদের উপর

[7:45]

যারা আল্লাহর পথে বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করত। তারা পরকালের বিষয়েও অবিশ্বাসী ছিল

[7:46]

উভয়ের মাঝখানে একটি প্রাচীর থাকবে এবং আরাফের উপরে অনেক লোক থাকবে। তারা প্রত্যেককে তার চিহ্ন দ্বারা চিনে নেবে। তারা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবেঃ তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তারা তখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে নাকিন্তু প্রবেশ করার ব্যাপারে আগ্রহী হবে

[7:47]

যখন তাদের দৃষ্টি দোযখীদের উপর পড়বেতখন বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালকআমাদেরকে এ জালেমদের সাথী করো না

[7:48]

আরাফবাসীরা যাদেরকে তাদের চিহ্ন দ্বারা চিনবেতাদেরকে ডেকে বলবে তোমাদের দলবল ও ঔদ্ধত্য তোমাদের কোন কাজে আসেনি

[7:49]

এরা কি তারাইযাদের সম্পর্কে তোমরা কসম খেয়ে বলতে যেআল্লাহ এদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন না। প্রবেশ করজান্নাতে। তোমাদের কোন আশঙ্কা নেই এবং তোমরা দুঃখিত হবে না

[7:50]

দোযখীরা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবেঃ আমাদের উপর সামান্য পানি নিক্ষেপ কর অথবা আল্লাহ তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছেনতা থেকেই কিছু দাও। তারা বলবেঃ আল্লাহ এই উভয় বস্তু কাফেরদের জন্যে নিষিদ্ধ করেছেন,

[7:51]

তারা স্বীয় ধর্মকে তামাশা ও খেলা বানিয়ে নিয়েছিল এবং পার্থিব জীবন তাদের কে ধোকায় ফেলে রেখেছিল। অতএবআমি আজকে তাদেরকে ভুলে যাবযেমন তারা এ দিনের সাক্ষাৎকে ভুলে গিয়েছিল এবং যেমন তারা আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করত

[7:52]

আমি তাদের কাছে গ্রন্থ পৌছিয়েছিযা আমি স্বীয় জ্ঞানে বিস্তারিত বর্ণনা করেছিযা পথপ্রদর্শক এবং মুমিনদের জন্যে রহমত

[7:53]

তারা কি এখন এ অপেক্ষায়ই আছে যেএর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হোকযেদিন এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবেসেদিন পূর্বে যারা একে ভূলে গিয়েছিলতারা বলবেঃ বাস্তবিকই আমাদের প্রতিপালকের পয়গম্বরগণ সত্যসহ আগমন করেছিলেন। অতএবআমাদের জন্যে কোন সুপারিশকারী আছে কি যেসুপারিশ করবে অথবা আমাদেরকে পুনঃ প্রেরণ করা হলে আমরা পূর্বে যা করতাম তার বিপরীত কাজ করে আসতাম। নিশ্চয় তারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা মনগড়া যা বলততা উধাও হয়ে যাবে

[7:54]

নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপরঅধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যেদিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্যচন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখতাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহবরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক

[7:55]

তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাককাকুতি-মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না

[7:56]

পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয়আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী

[7:57]

তিনিই বৃষ্টির পূর্বে সুসংবাদবাহী বায়ু পাঠিয়ে দেন। এমনকি যখন বায়ুরাশি পানিপূর্ন মেঘমালা বয়ে আনেতখন আমি এ মেঘমালাকে একটি মৃত শহরের দিকে হঁ্যাকিয়ে দেই। অতঃপর এ মেঘ থেকে বৃষ্টি ধারা বর্ষণ করি। অতঃপর পানি দ্বারা সব রকমের ফল উপন্ন করি। এমনি ভাবে মৃতদেরকে বের করব-যাতে তোমরা চিন্তা কর

[7:58]

যে শহর উৎকৃষ্টতার ফসল তার প্রতিপালকের নির্দেশে উৎপন্ন হয় এবং যা নিকৃষ্ট তাতে অল্পই ফসল উৎপন্ন হয়এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করি কৃতজ্ঞ সম্প্রদায়ের জন্যে

[7:59]

নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি পাঠিয়েছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। আমি তোমাদের জন্যে একটি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি

[7:60]

তার সম্প্রদায়ের সর্দাররা বললঃ আমরা তোমাকে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতার মাঝে দেখতে পাচ্ছি

[7:61]

সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়আমি কখনও ভ্রান্ত নইকিন্তু আমি বিশ্বপ্রতিপালকের রসূল

[7:62]

তোমাদেরকে প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছাই এবং তোমাদেরকে সদুপদেশ দেই। আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমনসব বিষয় জানিযেগুলো তোমরা জান না

[7:63]

তোমরা কি আশ্চর্যবোধ করছ যেতোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের বাচনিক উপদেশ এসেছে যাতে সে তোমাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করেযেন তোমরা সংযত হও এবং যেন তোমরা অনুগৃহীত হও

[7:64]

অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। আমি তাকে এবং নৌকাস্থিত লোকদেরকে উদ্ধার করলাম এবং যারা মিথ্যারোপ করততাদেরকে ডুবিয়ে দিলাম। নিশ্চয় তারা ছিল অন্ধ

[7:65]

আদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদের ভাই হুদকে। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়তোমরা আল্লাহর এবাদত করতিনি ব্যতিত তোমাদের কোন উপাস্য নেই

[7:66]

তারা স্প্রদায়ের সর্দররা বললঃ আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদী মনে করি

[7:67]

সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়আমি মোটেই নির্বোধ নইবরং আমি বিশ্ব প্রতিপালকের প্রেরিত পয়গম্বর

[7:68]

তোমাদের কে প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছাই এবং আমি তোমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী বিশ্বস্ত

[7:69]

তোমরা কি আশ্চর্য্যবোধ করছ যেতোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের বাচনিক উপদেশ এসেছে যাতে সে তোমাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করে। তোমরা স্মরণ করযখন আল্লাহতোমাদেরকে কওমে নূহের পর সর্দার করেছেন এবং তোমাদের দেহের বিস্তৃতি বেশী করেছেন তোমরা আল্লাহর নেয়ামতসমূহ স্মরণ কর-যাতে তোমাদের মঙ্গল হয়

[7:70]

তারা বললঃ তুমি কি আমাদের কাছে এজন্যে এসেছ যে আমরা এক আল্লাহর এবাদত করি এবং আমাদের বাপ-দাদা যাদের পূজা করততাদেরকে ছেড়ে দেইঅতএব নিয়ে আস আমাদের কাছে যাদ্দ্বারা আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছযদি তুমি সত্যবাদী হও

[7:71]

সে বললঃ অবধারিত হয়ে গেছে তোমাদের উপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে শাস্তি ও ক্রোধ। আমার সাথে ঐসব নাম সম্পর্কে কেন তর্ক করছযেগুলো তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা রেখেছে। আল্লাহ এদের কোন মন্দ অবর্তীণ করেননি। অতএব অপেক্ষা কর। আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি

[7:72]

অনন্তর আমি তাকে ও তার সঙ্গীদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং যারা আমার আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করততাদের মূল কেটে দিলাম। তারা মান্যকারী ছিল না

[7:73]

সামুদ সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছি তাদের ভাই সালেহকে। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতিত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একটি প্রমাণ এসে গেছে। এটি আল্লাহর উষ্টী তোমাদের জন্যে প্রমাণ। অতএব একে ছেড়ে দাওআল্লাহর ভুমিতে চড়ে বেড়াবে। একে অসৎভাবে স্পর্শ করবে না। অন্যথায় তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি পাকড়াও করবে

[7:74]

তোমরা স্মরণ করযখন তোমাদেরকে আদ জাতির পরে সর্দার করেছেনতোমাদেরকে পৃথিবীতে ঠিকানা দিয়েছেন। তোমরা নরম মাটিতে অট্টালিকা নির্মান কর এবং পর্বত গাত্র খনন করে প্রকোষ্ঠ নির্মাণ কর। অতএব আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না

[7:75]

তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দাররা ঈমানদার দারিদ্রদেরকে জিজ্ঞেস করলঃ তোমরা কি বিশ্বাস কর যে সালেহ কে তার পালনকর্তা প্রেরণ করেছেনতারা বলল আমরা তো তার আনীত বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসী

[7:76]

দাম্ভিকরা বললঃ তোমরা যে বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছআমরা তাতে অস্বীকৃত

[7:77]

অতঃপর তারা উষ্ট্রীকে হত্যা করল এবং স্বীয় প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করল। তারা বললঃ হে ছালেহনিয়ে এসযদ্দ্বারা আমাদেরকে ভয় দেখাতেযদি তুমি রসূল হয়ে থাক

[7:78]

অতঃপর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে সকাল বেলায় নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল

[7:79]

ছালেহ তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করলো এবং বললঃ হে আমার সম্প্রদায়আমি তোমাদের কাছে স্বীয় প্রতিপালকের পয়গাম পৌছিয়েছি এবং তোমাদের মঙ্গল কামনা করেছি কিন্তু তোমরা মঙ্গলকাঙ্খীদেরকে ভালবাস না

[7:80]

এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছযা তোমাদেরপূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ?

[7:81]

তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ

[7:82]

তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যেবের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়

[7:83]

অতঃপর আমি তাকে ও তাঁর পরিবার পরিজনকে বাঁচিয়ে দিলামকিন্তু তার স্ত্রী। সে তাদের মধ্যেই রয়ে গেলযারা রয়ে গিয়েছিল। আমি তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করলাম

[7:84]

অতএবদেখ গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে

[7:85]

আমি মাদইয়ানের প্রতি তাদের ভাই শোয়ায়েবকে প্রেরণ করেছি। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর এবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রমাণ এসে গেছে। অতএব তোমরা মাপ ও ওজন পূর্ন কর এবং মানুষকে তাদের দ্রব্যদি কম দিয়ো না এবং ভুপৃষ্টের সংস্কার সাধন করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। এই হল তোমাদের জন্যে কল্যাণকরযদি তোমরা বিশ্বাসী হও

[7:86]

তোমরা পথে ঘাটে এ কারণে বসে থেকো না যেআল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে হুমকি দিবেআল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করবে এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করবে। স্মরণ করযখন তোমরা সংখ্যায় অল্প ছিলে অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে অধিক করেছেন এবং লক্ষ্য কর কিরূপ অশুভ পরিণতি হয়েছে অনর্থকারীদের

[7:87]

আর যদি তোমাদের একদল ঐ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং একদল বিশ্বাস স্থাপনকরে যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং একদল বিশ্বাস স্থাপন না করেতবে ছবর কর যে পর্যন্ত আল্লাহ আমাদের মধ্যে মীমাংসা না করে দেন। তিনিই শ্রেষ্ট মীমাংসাকারী

[7:88]

তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দাররা বললঃ হে শোয়ায়েবআমরা অবশ্যই তোমাকে এবং তোমার সাথে বিশ্বাসস্থাপনকারীদেরকে শহর থেকে বের করে দেব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করবে। শোয়ায়েব বললঃ আমরা অপছন্দ করলেও কি ?

[7:89]

আমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদকারী হয়ে যাব যদি আমরা তোমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করিঅথচ তিনি আমাদেরকে এ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমাদের কাজ নয় এ ধর্মে প্রত্যাবর্তন করাকিন্তু আমাদের প্রতি পালক আল্লাহ যদি চান। আমাদের প্রতিপালক প্রত্যেক বস্তুকে স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। আল্লাহর প্রতিই আমরা ভরসা করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ফয়সালা করে ছিল যথার্থ ফয়সালা আপনিই শ্রেষ্টতম ফসলা ফয়সালাকারী

[7:90]

তার সম্প্রদায়ের কাফের সর্দাররা বললঃ যদি তোমরা শোয়ায়েবের অনুসরণ করতবে নিশ্চিতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে

[7:91]

অনন্তর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে তারা সকাল বেলায় গৃহ মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে রইল

[7:92]

শোয়ায়েবের প্রতি মিথ্যারোপকারীরা যেন কোন দিন সেখানে বসবাসই করেনি। যারা শোয়ায়েবের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিলতারাই ক্ষতিগ্রস্থ হল

[7:93]

অনন্তর সে তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করল এবং বললঃ হে আমার সম্প্রদায়আমি তোমাদেরকে প্রতিপালকের পয়গামপৌছে দিয়েছি এবং তোমাদের হিত কামনা করেছি। এখন আমি কাফেরদের জন্যে কেন দুঃখ করব

[7:94]

আর আমি কোন জনপদে কোন নবী পাঠাইনিতবে (এমতাবস্থায়) যে পাকড়াও করেছি সে জনপদের অধিবাসীদিগকে কষ্ট ও কঠোরতার মধ্যেযাতে তারা শিথিল হয়ে পড়ে

[7:95]

অতঃপর অকল্যাণের স্থলে তা কল্যাণে বদলে দিয়েছে। এমনকি তারা অনেক বেড়ে গিয়েছি এবং বলতে শুরু করেছেআমাদের বাপ-দাদাদের উপরও এমন আনন্দ-বেদনা এসেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি এমন আকস্মিকভাবে যে তারা টেরও পায়নি

[7:96]

আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন করততবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নেয়ামত সমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে

[7:97]

এখনও কি এই জনপদের অধিবাসীরা এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত যেআমার আযাব তাদের উপর রাতের বেলায় এসে পড়বে অথচ তখন তারা থাকবে ঘুমে অচেতন

[7:98]

আর এই জনপদের অধিবাসীরা কি নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছে যেতাদের উপর আমার আযাব দিনের বেলাতে এসে পড়বে অথচ তারা তখন থাকবে খেলা-ধুলায় মত্ত

[7:99]

তারা কি আল্লাহর পাকড়াওয়ের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছেবস্তুতঃ আল্লাহর পাকড়াও থেকে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারেযাদের ধ্বংস ঘনিয়ে আসে

[7:100]

তাদের নিকট কি একথা প্রকাশিত হয়নিযারা উত্তারাধিকার লাভ করেছে। সেখানকার লোকদের ধ্বংসপ্রাপ্ত হবার পর যদিআমি ইচ্ছা করতাম, , তবে তাদেরকে তাদের পাপের দরুন পাকড়াও করে ফেলতাম। বস্তুতঃ আমি মোহর এঁটে দিয়েছি তাদের অন্তরসমূহের উপর। কাজেই এরা শুনতে পায় না

[7:101]

এগুলো হল সে সব জনপদ যার কিছু বিবরণ আমি আপনাকে অবহিত করছি। আর নিশ্চিতই ওদের কাছে পৌছেছিলেন রসূল নিদর্শন সহকারে। অতঃপর কস্মিনকালও এরা ঈমান আনবার ছিল নাতারপরে যা তার ইতিপূর্বে মিথ্যা বলে প্রতিপন্ন করেছে। এভাবেই আল্লাহ কাফেরদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন

[7:102]

আর তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারীরূপে পাইনিবরং তাদের অধিকাংশকে পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী

[7:103]

অতঃপর আমি তাদের পরে মূসাকে পাঠিয়েছি নিদর্শনাবলী দিয়ে ফেরাউন ও তার সভাসদদের নিকট। বস্তুতঃ ওরা তাঁরমোকাবেলায় কুফরী করেছে। সুতরাং চেয়ে দেখকি পরিণতি হয়েছে অনাচারীদের

[7:104]

আর মূসা বললেনহে ফেরাউনআমি বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত রসূল

[7:105]

আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সত্য এসেছেতার ব্যতিক্রম কিছু না বলার ব্যাপারে আমি সুদৃঢ়। আমি তোমাদেরপরওয়ারদেগারের নিদর্শন নিয়ে এসেছি। সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলদেরকে আমার সাথে পাঠিয়ে দাও

[7:106]

সে বললযদি তুমি কোন নিদর্শন নিয়ে এসে থাকতাহলে তা উপস্থিত কর যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক

[7:107]

তখন তিনি নিক্ষেপ করলেন নিজের লাঠিখানা এবং তাৎক্ষণাৎ তা জলজ্যান্ত এক অজগরে রূপান্তরিত হয়ে গেল

[7:108]

আর বের করলেন নিজের হাত এবং তা সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের চোখে ধবধবে উজ্জ্বল দেখাতে লাগল

[7:109]

ফেরাউনের সাঙ্গ-পাঙ্গরা বলতে লাগলনিশ্চয় লোকটি বিজ্ঞ-যাদুকর

[7:110]

সে তোমাদিগকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দিতে চায়। এ ব্যাপারে তোমাদের কি মত?

[7:111]

তারা বললআপনি তাকে ও তার ভাইকে অবকাশ দান করুন এবং শহরে বন্দরে লোক পাঠিয়ে দিন লোকদের সমবেত করার জন্য

[7:112]

যাতে তারা পরাকাষ্ঠাসম্পন্ন বিজ্ঞ যাদুকরদের এনে সমবেত করে

[7:113]

বস্তুতঃ যাদুকররা এসে ফেরাউনের কাছে উপস্থিত হল। তারা বললআমাদের জন্যে কি কোন পারিশ্রমিক নির্ধারিত আছেযদি আমরা জয়লাভ করি?

[7:114]

সে বললহ্যাঁ এবং অবশ্যই তোমরা আমার নিকটবর্তী লোক হয়ে যাবে

[7:115]

তারা বললহে মূসা! হয় তুমি নিক্ষেপ কর অথবা আমরা নিক্ষেপ করছি

[7:116]

তিনি বললেনতোমরাই নিক্ষেপ কর। যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন লোকদের চোখগুলোকে বাধিয়ে দিলভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলল এবং মহাযাদু প্রদর্শন করল

[7:117]

তারপর আমি ওহীযোগে মূসাকে বললামএবার নিক্ষেপ কর তোমার লাঠিখানা। অতএব সঙ্গে সঙ্গে তা সে সমুদয়কে গিলতে লাগলযা তারা বানিয়েছিল যাদু বলে

[7:118]

সুতরাং এভাবে প্রকাশ হয়ে গেল সত্য বিষয় এবং ভুল প্রতিপন্ন হয়ে গেল যা কিছু তারা করেছিল

[7:119]

সুতরাং তারা সেখানেই পরাজিত হয়ে গেল এবং অতীব লাঞ্ছিত হল

[7:120]

এবং যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল

[7:121]

বললআমরা ঈমান আনছি মহা বিশ্বের পরওয়ারদেগারের প্রতি

[7:122]

যিনি মূসা ও হারুনের পরওয়ারদেগার

[7:123]

ফেরাউন বললতোমরা কি (তাহলে) আমার অনুমতি দেয়ার আগেই ঈমান আনলে! এটা প্রতারণাযা তোমরা এ নগরীতে প্রদর্শন করলে। যাতে করে এ শহরের অধিবাসীদিগকে শহর থেকে বের করে দিতে পার। সুতরাং তোমরা শীঘ্রই বুঝতে পারবে

[7:124]

অবশ্যই আমি কেটে দেব তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে। তারপর তোমাদের সবাইকে শূলীতে চড়িয়ে মারব

[7:125]

তারা বললআমাদেরকে তো মৃত্যুর পর নিজেদের পরওয়ারদেগারের নিকট ফিরে যেতেই হবে

[7:126]

বস্তুতঃ আমাদের সাথে তোমার শত্রুতা তো এ কারণেই যেআমরা ঈমান এনেছি আমাদের পরওয়ারদেগারের নিদর্শনসমূহের প্রতি যখন তা আমাদের নিকট পৌঁছেছে। হে আমাদের পরওয়ারদেগার আমাদের জন্য ধৈর্য্যের দ্বার খুলে দাও এবং আমাদেরকে মুসলমান হিসাবে মৃত্যু দান কর

[7:127]

ফেরাউনের সম্প্রদায়ের র্সদাররা বললতুমি কি এমনি ছেড়ে দেবে মূসা ও তার সম্প্রদায়কে। দেশময় হৈ-চৈ করার জন্য এবং তোমাকে ও তোমার দেব-দেবীকে বাতিল করে দেবার জন্য। সে বললআমি এখনি হত্যা করব তাদের পুত্র সন্তানদিগকেআর জীবিত রাখব মেয়েদেরকে। বস্তুতঃ আমরা তাদের উপর প্রবল

[7:128]

মূসা বললেন তার কওমকেসাহায্য প্রার্থনা কর আল্লাহর নিকট এবং ধৈর্য্য ধারণ কর। নিশ্চয়ই এ পৃথিবী আল্লাহরতিনি নিজের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা এর উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেন এবং শেষ কল্যাণ মুত্তাকীদের জন্যই নির্ধারিত রয়েছে

[7:129]

তারা বললআমাদের কষ্ট ছিল তোমার আসার পূর্বে এবং তোমার আসার পরে। তিনি বললেনতোমাদের পরওয়ারদেগার শীঘ্রই তোমাদের শক্রদের ধ্বংস করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দেশে প্রতিনিধিত্ব দান করবেন তারপর দেখবেনতোমরা কেমন কাজ কর

[7:130]

তারপর আমি পাকড়াও করেছি-ফেরাউনের অনুসারীদেরকে দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে এবং ফল ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির মাধ্যমে যাতে করে তারা উপদেশ গ্রহণ করে

[7:131]

অতঃপর যখন শুভদিন ফিরে আসেতখন তারা বলতে আরম্ভ করে যেএটাই আমাদের জন্য উপযোগী। আর যদি অকল্যাণ এসে উপস্থিত হয় তবে তাতে মূসার এবং তাঁর সঙ্গীদের অলক্ষণ বলে অভিহিত করে। শুনে রাখ তাদের অলক্ষণ যেআল্লাহরই এলেমে রয়েছেঅথচ এরা জানে না

[7:132]

তারা আরও বলতে লাগলআমাদের উপর জাদু করার জন্য তুমি যে নিদর্শনই নিয়ে আস না কেন আমরা কিন্তু তোমার উপর ঈমান আনছি না

[7:133]

সুতরাং আমি তাদের উপর পাঠিয়ে দিলাম তুফানপঙ্গপালউকুনব্যাঙ ও রক্ত প্রভৃতি বহুবিধ নিদর্শন একের পর একতারপরেও তারা গর্ব করতে থাকল। বস্তুতঃ তারা ছিল অপরাধপ্রবণ

[7:134]

আর তাদের উপর যখন কোন আযাব পড়ে তখন বলেহে মূসা আমাদের জন্য তোমার পরওয়ারদেগারের নিকট সে বিষয়ে দোয়া কর যা তিনি তোমার সাথে ওয়াদা করে রেখেছেন। যদি তুমি আমাদের উপর থেকে এ আযাব সরিয়ে দাওতবে অবশ্যই আমরা ঈমান আনব তোমার উপর এবং তোমার সাথে বনী-ইসরাঈলদেরকে যেতে দেব

[7:135]

অতঃপর যখন আমি তাদের উপর থেকে আযাব তুলে নিতাম নির্ধারিত একটি সময় পর্যন্ত-যেখান পর্যন্ত তাদেরকে পৌছানোর উদ্দেশ্য ছিলতখন তড়িঘড়ি তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করত

[7:136]

সুতরাং আমি তাদের কাছে থেকে বদলা নিয়ে নিলাম-বস্তুতঃ তাদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিলাম। কারণতারা মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছিল আমার নিদর্শনসমূহকে এবং তৎপ্রতি অনীহা প্রদর্শন করেছিল

[7:137]

আর যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকেও আমি উত্তরাধিকার দান করেছি এ ভুখন্ডের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের যাতে আমি বরকত সন্নিহিত রেখেছি এবং পরিপূর্ণ হয়ে গেছে তোমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত কল্যাণ বনী-ইসরাঈলদের জন্য তাদের ধৈর্য্যধারণের দরুন। আর ধ্বংস করে দিয়েছে সেসবকিছু যা তৈরী করেছিল ফেরাউন ও তার সম্প্রদায় এবং ধ্বংস করেছি যা কিছু তারা সুউচ্চ নির্মাণ করেছিল

[7:138]

বস্তুতঃ আমি সাগর পার করে দিয়েছি বনী-ইসরাঈলদিগকে। তখন তারা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌছালযারাস্বহস্তনির্মিত মূর্তিপুজায় নিয়োজিত ছিল। তারা বলতে লাগলহে মূসাআমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন। তিনি বললেনতোমাদের মধ্যে বড়ই অজ্ঞতা রয়েছে

[7:139]

এরা যেকাজে নিয়োজিত রয়েছে তা ধ্বংস হবে এবং যা কিছু তারা করেছে তা যে ভুল!

[7:140]

তিনি বললেনতাহলে কি আল্লাহকে ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোন উপাস্য অনুসন্ধান করবঅথচ তিনিই তোমাদিগকে সারা বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন

[7:141]

আর সে সময়ের কথা স্মরণ করযখন আমি তোমাদেরকে ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছিতারা তোমাদেরকে দিত নিকৃষ্ট শাস্তিতোমাদের পুত্র-সন্তানদের মেরে ফেলত এবং মেয়েদের বাঁচিয়ে রাখত এতে তোমাদের প্রতি তোমাদের পরওয়ারদেগারের বিরাট পরীক্ষা রয়েছে

[7:142]

আর আমি মূসাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ত্রিশ রাত্রির এবং সেগুলোকে পূর্ন করেছি আরো দশ দ্বারা। বস্তুতঃ এভাবে চল্লিশ রাতের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে গেছে। আর মূসা তাঁর ভাই হারুনকে বললেনআমার সম্প্রদায়ে তুমি আমার প্রতিনিধি হিসাবে থাক। তাদের সংশোধন করতে থাক এবং হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের পথে চলো না

[7:143]

তারপর মূসা যখন আমার প্রতিশ্রুত সময় অনুযায়ী এসে হাযির হলেন এবং তাঁর সাথে তার পরওয়ারদেগার কথাবললেনতখন তিনি বললেনহে আমার প্রভুতোমার দীদার আমাকে দাওযেন আমি তোমাকে দেখতে পাই। তিনি বললেনতুমি আমাকে কস্মিনকালেও দেখতে পাবে নাতবে তুমি পাহাড়ের দিকে দেখতে থাকসেটি যদি স্বস্থানে দঁড়িয়ে থাকে তবে তুমিও আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার পরওয়ারদগার পাহাড়ের উপর আপন জ্যোতির বিকিরণ ঘটালেনসেটিকে বিধ্বস্ত করে দিলেন এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। অতঃপর যখন তাঁর জ্ঞান ফিরে এলবললেনহে প্রভু! তোমার সত্তা পবিত্রতোমার দরবারে আমি তওবাকরছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি

[7:144]

(পরওয়ারদেগার) বললেনহে মূসাআমি তোমাকে আমার বার্তা পাঠানোর এবং কথা বলার মাধ্যমে লোকদের উপরবিশিষ্টতা দান করেছি। সুতরাং যা কিছু আমি তোমাকে দান করলামগ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞ থাক

[7:145]

আর আমি তোমাকে পটে লিখে দিয়েছি সর্বপ্রকার উপদেশ ও বিস্তারিত সব বিষয়। অতএবএগুলোকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করএবং স্বজাতিকে এর কল্যাণকর বিষয়সমূহ দৃঢ়তার সাথে পালনের নির্দেশ দাও

[7:146]

আমি আমার নিদর্শনসমূহ হতে তাদেরকে ফিরিয়ে রাখিযারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে গর্ব করে। যদি তারা সমস্ত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে ফেলেতবুও তা বিশ্বাস করবে না। আর যদি হেদায়েতের পথ দেখেতবে সে পথ গ্রহণ করে না। অথচ গোমরাহীর পথ দেখলে তাই গ্রহণ করে নেয়। এর কারণতারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলে মনে করেছে এবং তা থেকে বেখবর রয়ে গেছে

[7:147]

বস্তুতঃ যারা মিথ্যা জেনেছে আমার আয়াতসমূকে এবং আখেরাতের সাক্ষাতকেতাদের যাবতীয় কাজকর্ম ধ্বংস হয়েগেছে। তেমন বদলাই সে পাবে যেমন আমল করত

[7:148]

আর বানিয়ে নিল মূসার সম্প্রদায় তার অনুপস্থিতিতে নিজেদের অলংকারাদির দ্বারা একটি বাছুর তা থেকেবেরুচ্ছিল হাম্বা হাম্বা’ শব্দ। তারা কি একথাও লক্ষ্য করল না যেসেটি তাদের সাথে কথাও বলছে না এবং তাদেরকে কোন পথও বাতলে দিচ্ছে না! তারা সেটিকে উপাস্য বানিয়ে নিল। বস্তুতঃ তারা ছিল জালেম

[7:149]

অতঃপর যখন তারা অনুতপ্ত হল এবং বুঝতে পারল যেআমরা নিশ্চিতই গোমরাহ হয়ে পড়েছিতখন বলতে লাগলআমাদের প্রতি যদি আমাদের পরওয়ারদেগার করুণা না করেনতবে অবশ্যই আমরা ধবংস হয়ে যাব

[7:150]

তারপর যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়ে ফিরে এলেন রাগাম্বিত ও অনুতপ্ত অবস্থায়তখন বললেনআমার অনুপস্থিতিতে তোমরা আমার কি নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্বটাই না করেছ। তোমরা নিজ পরওয়ারদেগারের হুকুম থেকে কি তাড়াহুড়া করে ফেললে এবং সে তখতীগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং নিজের ভাইয়ের মাথার চুল চেপে ধরে নিজের দিকে টানতে লাগলেন। ভাই বললেনহে আমার মায়ের পুত্রলোকগুলো যে আমাকে দুর্বল মনে করল এবং আমাকে যে মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল। সুতরাং আমার উপর আর শত্রুদের হাসিও না। আর আমাকে জালিমদের সারিতে গন্য করো না

[7:151]

মূসা বললেনহে আমার পরওয়ারদেগারক্ষমা কর আমাকে আর আমার ভাইকে এবং আমাদেরকে তোমার রহমতেরঅন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যে সর্বাধিক করুণাময়

[7:152]

অবশ্য যারা গোবৎসকে উপাস্য বানিয়ে নিয়েছেতাদের উপর তাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে পার্থিব এ জীবনেইগযব ও লাঞ্জনা এসে পড়বে। এমনি আমি অপবাদ আরোপকারীদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি

[7:153]

আর যারা মন্দ কাজ করেতারপরে তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসেতবে নিশ্চয়ই তোমার পরওয়ারদেগার তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারীকরুণাময়

[7:154]

তারপর যখন মূসার রাগ পড়ে গেলতখন তিনি তখতীগুলো তুলে নিলেন। আর যা কিছু তাতে লেখা ছিলতা ছিল সে সমস্ত লোকের জন্য হেদায়েত ও রহমত যারা নিজেদের পরওয়ারদেগারকে ভয় করে

[7:155]

আর মূসা বেছে নিলেন নিজের সম্প্রদায় থেকে সত্তর জন লোক আমার প্রতিশ্রুত সময়ের জন্য। তারপর যখন তাদেরকেভূমিকম্প পাকড়াও করলতখন বললেনহে আমার পরওয়ারদেগারতুমি যদি ইচ্ছা করতেতবে তাদেরকে আগেই ধ্বংস করে দিতে এবং আমাকেও। আমাদেরকে কি সে কর্মের কারণে ধ্বংস করছযা আমার সম্প্রদায়ের নির্বোধ লোকেরা করেছেএসবই তোমার পরীক্ষাতুমি যাকে ইচ্ছা এতে পথ ভ্রষ্ট করবে এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথে রাখবে। তুমি যে আমাদের রক্ষক-সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের উপর করুনা কর। তাছাড়া তুমিই তো সর্বাধিক ক্ষমাকারী

[7:156]

আর পৃথিবীতে এবং আখেরাতে আমাদের জন্য কল্যাণ লিখে দাও। আমরা তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। আল্লাহ তাআলা বললেনআমার আযাব তারই উপর পরিব্যাপ্ত। সুতরাং তা তাদের জন্য লিখে দেব যারা ভয় রাখেযাকাত দান করে এবং যারা আমার আয়তসমুহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে

[7:157]

সেসমস্ত লোকযারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলেরযিনি উম্মী নবীযাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মেরবারণ করেন অসৎকর্ম থেকেতাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছেতাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছেতাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছেশুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে

[7:158]

বলে দাওহে মানব মন্ডলী তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূলসমগ্র আসমান ও যমীনে তার রাজত্বএকমাত্র তাঁকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর উপর তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর উপরযিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহর এবং তাঁর সমস্ত কালামের উপর। তাঁর অনুসরণ কর যাতে সরল পথপ্রাপ্ত হতে পার

[7:159]

বস্তুতঃ মূসার সম্প্রদায়ে একটি দল রয়েছে যারা সত্যপথ নির্দেশ করে এবং সে মতেই বিচার করে থাকে

[7:160]

আর আমি পৃথক পৃথক করে দিয়েছি তাদের বার জন পিতামহের সন্তানদেরকে বিরাট বিরাট দলেএবং নির্দেশ দিয়েছি মুসাকেযখন তার কাছে তার সম্প্রদায় পানি চাইল যেস্বীয় যষ্টির দ্বারা আঘাত কর এ পাথরের উপর। অতঃপর এর ভেতর থেকে ফুটে বের হল বারটি প্রস্রবণ। প্রতিটি গোত্রচিনে নিল নিজ নিজ ঘাঁটি। আর আমি ছায়া দান করলাম তাদের উপর মেঘের এবং তাদের জন্য অবতীর্ন করলাম মান্না ও সালওয়া। যে পরিচ্ছন্ন বস্তুত জীবিকারূপে আমি তোমাদেরদিয়েছিতা থেকে তোমরা ভক্ষণ কর। বস্তুতঃ তারা আমার কোন ক্ষতি করেনিবরং ক্ষতি করেছে নিজেদেরই

[7:161]

আর যখন তাদের প্রতি নির্দেশ হল যেতোমরা এ নগরীতে বসবাস কর এবং খাও তা থেকে যেখান থেকে ইচ্ছা এবং বলআমাদের ক্ষমা করুন। আর দরজা দিয়ে প্রবেশ কর প্রণত অবস্থায়। তবে আমি ক্ষমা করে দেব তোমাদের পাপসমুহ। অবশ্য আমি সৎকর্মীদিগকে অতিরিক্ত দান করব

[7:162]

অনন্তর জালেমরা এতে অন্য শব্দ বদলে দিল তার পরিবর্তেযা তাদেরকে বলা হয়েছিল। সুতরাং আমি তাদের উপর আযাবপাঠিয়েছি আসমান থেকে তাদের অপকর্মের কারণে

[7:163]

আর তাদের কাছে সে জনপদের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর যা ছিল নদীর তীরে অবস্থিত। যখন শনিবার দিনের নির্দেশের ব্যাপারে সীমাতিক্রম করতে লাগলযখন আসতে লাগল মাছগুলো তাদের কাছে শনিবার দিন পানির উপরআর যেদিন শনিবার হত নাআসত না। এভাবে আমি তাদেরকেপরীক্ষা করেছি। কারণতারা ছিল নাফরমান

[7:164]

আর যখন তাদের মধ্যে থেকে এক সম্প্রদায় বললকেন সে লোকদের সদুপদেশ দিচ্ছেনযাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিতেচান কিংবা আযাব দিতে চান কঠিন আযাবসে বললঃ তোমাদের পালনকর্তার সামনে দোষ ফুরাবার জন্য এবং এজন্য যেন তারা ভীত হয়

[7:165]

অতঃপর যখন তারা সেসব বিষয় ভুলে গেলযা তাদেরকে বোঝানো হয়েছিলতখন আমি সেসব লোককে মুক্তি দান করলাম যারা মন্দ কাজ থেকে বারণ করত। আর পাকড়াও করলামগোনাহগারদেরকে নিকৃষ্ট আযাবের মাধ্যমে তাদের না-ফরমানীর দরুন

[7:166]

তারপর যখন তারা এগিয়ে যেতে লাগল সে কর্মে যা থেকে তাদের বারণ করা হয়েছিলতখন আমি নির্দেশ দিলাম যেতোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও

[7:167]

আর সে সময়ের কথা স্মরণ করযখন তোমার পালনকর্তা সংবাদ দিয়েছেন যেঅবশ্যই কেয়ামত দিবস পর্যন্ত ইহুদীদেরউপর এমন লোক পাঠাতে থাকবেন যারা তাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দান করতে থাকবে নিঃসন্দেহে তোমার পালনকর্তা শীঘ্র শাস্তি দানকারী এবং তিনি ক্ষমাশীলদয়ালু

[7:168]

আর আমি তাদেরকে বিভক্ত করে দিয়েছি দেশময় বিভিন্ন শ্রেনীতেতাদের মধ্যে কিছু রয়েছে ভাল আর কিছু রয়েছেঅন্য রকম! তাছাড়া আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি ভাল ও মন্দের মাধ্যমে যাতে তারা ফিরে আসে

[7:169]

তারপর তাদের পেছনে এসেছে কিছু অপদার্থযারা উত্তরাধিকারী হয়েছে কিতাবেরতারা নিকৃষ্ট পার্থিব উপকরণ আহরণ করছে এবং বলছেআমাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। বস্তুতঃ এমনি ধরনের উপকরণ যদি আবারো তাদের সামনে উপস্থিত হয়তবে তাও তুলে নেবে। তাদের কাছথেকে কিতাবে কি অঙ্গীকার নেয়া হয়নি যেআল্লাহর প্রতি সত্য ছাড়া কিছু বলবে নাঅথচ তারা সে সবই পাঠ করেছেযা তাতে লেখা রয়েছে। বস্তুতঃ আখেরাতের আলয় ভীতদের জন্য উত্তম-তোমরা কি তা বোঝ না ?

[7:170]

আর যেসব লোক সুদৃঢ়ভাবে কিতাবকে আঁকড়ে থাকে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে নিশ্চয়ই আমি বিনষ্ট করব নাৎকর্মীদের সওয়া

[7:171]

আর যখন আমি তুলে ধরলাম পাহাড়কে তাদের উপরে সামিয়ানার মত এবং তারা ভয় করতে লাগল যেসেটি তাদের উপর পড়বেতখন আমি বললামধরযা আমি তোমাদের দিয়েছিদৃঢ়ভাবে এবং স্মরণ রেখো যা তাতে রয়েছেযেন তোমরা বাঁচতে পার

[7:172]

আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্টদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেনআমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই তারা বললঅবশ্যইআমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কেয়ামতের দিন বলতে শুরু কর যেএ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না

[7:173]

অথবা বলতে শুরু কর যেঅংশীদারিত্বের প্রথা তো আমাদের বাপ-দাদারা উদ্ভাবন করেছিল আমাদের পূর্বেই। আর আমরা হলাম তাদের পশ্চাৎবর্তী সন্তান-সন্ততি। তাহলে কি সে কর্মের জন্য আমাদেরকে ধ্বংস করবেনযা পথভ্রষ্টরা করেছে?

[7:174]

বস্তুতঃ এভাবে আমি বিষয়সমূহ সবিস্তারে বর্ণনা করিযাতে তারা ফিরে আসে

[7:175]

আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিনসে লোকের অবস্থাযাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলামঅথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তানফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়েছে

[7:176]

অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম সে সকল নিদর্শনসমূহের দৌলতে। কিন্তু সে যে অধঃপতিত এবংনিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইল। সুতরাং তার অবস্থা হল কুকুরের মতযদি তাকে তাড়া কর তবুও হাঁপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে। এ হল সেসব লোকের উদাহরণযারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার নিদর্শনসমূহকে। অতএবআপনি বিবৃত করুন এসব কাহিনীযাতে তারা চিন্তা করে

[7:177]

তাদের উদাহরণ অতি নিকৃষ্টযারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াত সমূহকে এবং তারা নিজেদেরই ক্ষতি সাধনকরেছে

[7:178]

যাকে আল্লাহ পথ দেখাবেনসেই পথপ্রাপ্ত হবে। আর যাকে তিনি পথ ভ্রষ্ট করবেনসে হবে ক্ষতিগ্রস্ত

[7:179]

আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জ্বিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছেতার দ্বারা বিবেচনা করে নাতাদেরচোখ রয়েছেতার দ্বারা দেখে নাআর তাদের কান রয়েছেতার দ্বারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মতবরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হল গাফেলশৈথিল্যপরায়ণ

[7:180]

আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন করযারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে

[7:181]

আর যাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছিতাদের মধ্যে এমন এক দল রয়েছে যারা সত্য পথ দেখায় এবং সে অনুযায়ী ন্যায়চিারকরে

[7:182]

বস্তুতঃ যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াতসমূহকেআমি তাদেরকে ক্রমান্বয়ে পাকড়াও করব এমন জায়গা থেকেযার সম্পর্কে তাদের ধারণাও হবে না

[7:183]

বস্তুতঃ আমি তাদেরকে ঢিল দিয়ে থাকি। নিঃসন্দেহে আমার কৌশল সুনিপুণ

[7:184]

তারা কি লক্ষ্য করেনি যেতাদের সঙ্গী লোকটির মস্তিষ্কে কোন বিকৃতি নেইতিনি তো ভীতি প্রদর্শনকারী প্রকৃষ্টভাবে

[7:185]

তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজ্য সম্পর্কে এবং যা কিছু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তাআলা বস্তু সামগ্রী থেকে এবং এ ব্যাপারে যেতাদের সাথে কৃত ওয়াদার সময় নিকটবর্তী হয়ে এসেছেবস্তুতঃ এরপর কিসের উপর ঈমান আনবে?

[7:186]

আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন পথপ্রদর্শক নেই। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে মত্ত অবস্তায় ছেড়ে দিয়ে রাখেন

[7:187]

আপনাকে জিজ্ঞেস করেকেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবেবলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয় যখন তা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকেযেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিনএর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকটই রয়েছে কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না

[7:188]

আপনি বলে দিনআমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নইকিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতামতাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতামফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য

[7:189]

তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র সত্তা থেকেআর তার থেকেই তৈরী করেছেন তার জোড়াযাতে তার কাছে স্বস্তি পেতে পারে। অতঃপর পুরুষ যখন নারীকে আবৃত করলতখনসে গর্ভবতী হল। অতি হালকা গর্ভ। সে তাই নিয়ে চলাফেরা করতে থাকল। তারপর যখন বোঝা হয়ে গেলতখন উভয়েই আল্লাহকে ডাকল যিনি তাদের পালনকর্তা যেতুমি যদি আমাদিগকে সুস্থ ও ভাল দান কর তবে আমরা তোমার শুকরিয়া আদায় করব

[7:190]

অতঃপর তাদেরকে যখন সুস্থ ও ভাল দান করা হলতখন দানকৃত বিষয়ে তার অংশীদার তৈরী করতে লাগল। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের শরীক সাব্যস্ত করা থেকে বহু উর্ধে

[7:191]

তারা কি এমন কাউকে শরীক সাব্যস্ত করেযে একটি বস্তুও সৃষ্টি করেনিবরং তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে

[7:192]

আর তারানা তাদের সাহায্য করতে পারেনা নিজের সাহায্য করতে পারে

[7:193]

আর তোমরা যদি তাদেরকে আহবান কর সুপথের দিকেতবে তারা তোমাদের আহবান অনুযায়ী চলবে না। তাদেরকে আহবান জানানো কিংবা নীরব থাকা উভয়টিই তোমাদের জন্য সমান

[7:194]

আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদেরকে ডাকতারা সবাই তোমাদের মতই বান্দা। অতএবতোমরা যাদেরকে ডাকতখন তাদের পক্ষেও তো তোমাদের সে ডাক কবুল করা উচিত যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক?

[7:195]

তাদের কি পা আছেযদ্বারা তারা চলাফেরা করেকিংবা তাদের কি হাত আছেযদ্বারা তারা ধরে। অথবা তাদের কি চোখ আছে যদ্বারা তারা দেখতে পায় কিংবা তাদের কি কান আছে যদ্বারা শুনতে পায়বলে দাওতোমরা ডাক তোমাদের অংশীদারদিগকেঅতঃপর আমার অমঙ্গল কর এবং আমাকে অবকাশ দিও না

[7:196]

আমার সহায় তো হলেন আল্লাহযিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। বস্তুততিনিই সাহায্য করেন সৎকর্মশীল বান্দাদের

[7:197]

আর তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাক তারা না তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারবেনা নিজেদের আত্নরক্ষা করতে পারবে

[7:198]

আর তুমি যদি তাদেরকে সুপথে আহবান করতবে তারা তা কিছুই শুনবে না। আর তুমি তো তাদের দেখছইতোমার দিকে তাকিয়ে আছেঅথচ তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছে না

[7:199]

আর ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তোলৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খ জাহেলদের থেকে দূরে সরে থাক

[7:200]

আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করেতাহলে আল্লাহর শরণাপন্ন হও তিনিই শ্রবণকারীমহাজ্ঞানী

[7:201]

যাদের মনে ভয় রয়েছেতাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদেরবিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে

[7:202]

পক্ষান্তরে যারা শয়তানের ভাইতাদেরকে সে ক্রমাগত পথভ্রষ্ট তার দিকে নিয়ে যায় অতঃপর তাতে কোন কমতি করে না

[7:203]

আর যখন আপনি তাদের নিকট কোন নিদর্শন নিয়ে না যানতখন তারা বলেআপনি নিজের পক্ষ থেকে কেন অমুকটি নিয়ে আসলেন নাতখন আপনি বলে দিনআমি তো সে মতেই চলি যে হুকুম আমার নিকট আসে আমারপরওয়ারদেগারের কাছ থেকে। এটা ভাববার বিষয় তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং হেদায়েত ও রহমত সেসব লোকের জন্য যারা ঈমান এনেছে

[7:204]

আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়

[7:205]

আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কমসকালে ও সন্ধ্যায়। আর বে-খবর থেকো না

[7:206]

নিশ্চয়ই যারা তোমার পরওয়ারদেগারের সান্নিধ্যে রয়েছেনতারা তাঁর বন্দেগীর ব্যাপারে অহঙ্কার করেন না এবং স্মরণ করেন তাঁর পবিত্র সত্তাকেআর তাঁকেই সেজদা করেন