Quran translations in many languages

Bengali Quran

An-Nisâ’

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[4:1]

হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় করযিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেনআর বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় করযাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচঞ্ঝা করে থাক এবং আত্নীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন

[4:2]

এতীমদেরকে তাদের সম্পদ বুঝিয়ে দাও। খারাপ মালামালের সাথে ভালো মালামালের অদল-বদল করো না। আর তাদের ধন-সম্পদ নিজেদের ধন-সম্পদের সাথে সংমিশ্রিত করে তা গ্রাস করো না। নিশ্চয় এটা বড়ই মন্দ কাজ

[4:3]

আর যদি তোমরা ভয় কর যেএতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে নাতবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুইতিনকিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যেতাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে নাতবেএকটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকেএতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা

[4:4]

আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়তবে তাতোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর

[4:5]

আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেনতা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকেতাদেরকে খাওয়াওপরাও এবং তাদেরকে সান্তনার বানী শোনাও

[4:6]

আর এতীমদের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখবেযে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পারতবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পন করতে পার। এতীমের মাল প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করো না বা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা স্বচ্ছল তারা অবশ্যই এতীমের মাল খরচ করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ খেতে পারে। যখন তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যার্পণ করতখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্য আল্লাহই হিসাব নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট

[4:7]

পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষদেরও অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদেরপরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছেঅল্প হোক কিংবা বেশী। এ অংশ নির্ধারিত

[4:8]

সম্পতি বন্টনের সময় যখন আত্নীয়-স্বজনএতীম ও মিসকীন উপস্থিত হয়তখন তা থেকে তাদের কিছু খাইয়ে দাও এবং তাদের সাথে কিছু সদালাপ করো

[4:9]

তাদের ভয় করা উচিতযারা নিজেদের পশ্চাতে দুর্বল অক্ষম সন্তান-সন্ততি ছেড়ে গেলে তাদের জন্যে তারাও আশঙ্কা করেসুতরাং তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং সংগত কথা বলে

[4:10]

যারা এতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং সত্ত্বরই তারাঅগ্নিতে প্রবেশ করবে

[4:11]

আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু‘ এর অধিকতবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগযদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকেতবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পরযা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞরহস্যবিদ

[4:12]

আরতোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তিযা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকেতবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তিরযা তারা ছেড়ে যায়ওছিয়্যতের পরযা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তিরযা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকেতবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগযা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পরযা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। যে পুরুষেরত্যাজ্য সম্পত্তিতার যদি পিতা-পুত্র কিংবা স্ত্রী না থাকে এবং এই মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকেতবে উভয়ের প্রত্যেকে ছয়-ভাগের এক পাবে। আর যদি ততোধিক থাকেতবে তারা এক তৃতীয়াংশ অংশীদার হবে ওছিয়্যতের পরযা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্থায় যেঅপরের ক্ষতি না করে। এ বিধান আল্লাহর। আল্লাহ সর্বজ্ঞসহনশীল

[4:13]

এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের আদেশমত চলেতিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেনযেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য

[4:14]

যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেসেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি

[4:15]

আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখযে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোন পথ নির্দেশ না করেন

[4:16]

তোমাদের মধ্য থেকে যে দুজন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করেতবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারীদয়ালু

[4:17]

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেনযারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করেঅতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করেএরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানীরহস্যবিদ

[4:18]

আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেইযারা মন্দ কাজ করতেই থাকেএমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্যযারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি

[4:19]

হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখোনা যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাওকিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ করতবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছযাতে আল্লাহঅনেক কল্যাণরেখেছেন

[4:20]

যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাকতবে তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ করো না। তোমরা কি তা অন্যায়ভাবে ও প্রকাশ্য গোনাহর মাধ্যমে গ্রহণ করবে?

[4:21]

তোমরা কিরূপে তা গ্রহণ করতে পারঅথচ তোমাদের একজন অন্য জনের কাছে গমন এবং নারীরা তোমাদের কাছে থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে

[4:22]

যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদের বিবাহ করো না। কিন্তু যা বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীলগযবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ

[4:23]

তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাতোমাদের কন্যাতোমাদের বোনতোমাদের ফুফুতোমাদের খালাভ্রাতৃকণ্যাভগিনীকণ্যা তোমাদের সে মাতাযারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছেতোমাদের দুধ-বোনতোমাদের স্ত্রীদের মাতাতোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাকতবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করাকিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকরীদয়ালু

[4:24]

এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধতোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিকহয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছেশর্ত এই যেতোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবেবিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবেতাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদিনির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞরহস্যবিদ

[4:25]

আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে নাসে তোমাদের অধিকারভুক্তমুসলিম ক্রীতদাসীদেরকে বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা পরস্পর একঅতএবতাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যেতারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না। অতঃপর যখন তারাবিবাহ বন্ধনে এসে যায়তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করেতবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যেতোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে ভয় করে। আর যদি সবর করতবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীলকরুণাময়

[4:26]

আল্লাহ তোমাদের জন্যে সব কিছু পরিষ্কার বর্ণনা করে দিতে চানতোমাদের পূর্ববর্তীদের পথ প্রদর্শন করতে চান। এবংতোমাদেরকে ক্ষমা করতে চানআল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ

[4:27]

আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হতে চানএবং যারা কামনা-বাসনার অনুসারীতারা চায় যেতোমরা পথ থেকে অনেক দূরে বিচ্যুত হয়ে পড়

[4:28]

আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করতে চান। মানুষ দুর্বল সৃজিত হয়েছে

[4:29]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি দয়ালু

[4:30]

আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবেতাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। এটাআল্লাহর পক্ষে খুবই সহজসাধ্য

[4:31]

যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমিতোমাদের ক্রটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করার

[4:32]

আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তাআলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং নারী যা অর্জন করে সেটা তার অংশ। আর আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত

[4:33]

পিতা-মাতা এবং নিকটাত্নীয়গণ যা ত্যাগ করে যান সেসবের জন্যই আমি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছ তাদের প্রাপ্য দিয়ে দাও। আল্লাহ তাআলা নিঃসন্দেহে সব কিছুই প্রত্যক্ষ করেন

[4:34]

পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যেআল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যেতারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাওতাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ

[4:35]

যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা করতবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীরপরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞসবকিছু অবহিত

[4:36]

আর উপাসনা কর আল্লাহরশরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবংনিকটাত্নীয়এতীম-মিসকীনপ্রতিবেশীঅসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে

[4:37]

যারা নিজেরাও কার্পন্য করে এবং অন্যকেও কৃপণতা শিক্ষা দেয় আর গোপন করে সে সব বিষয় যা আল্লাহ তাআলা তাদেরকে দান করেছেন স্বীয় অনুগ্রহে-বস্তুতঃ তৈরী করে রেখেছি কাফেরদের জন্য অপমান জনক আযাব

[4:38]

আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন-সম্পদ লোক-দেখানোর উদ্দেশে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে নাঈমান আনে না কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হল নিকৃষ্টতর সাথী

[4:39]

আর কিই বা ক্ষতি হত তাদের যদি তারা ঈমান আনত আল্লাহর উপর কেয়ামত দিবসের উপর এবং যদি ব্যয় করত আল্লাহ প্রদত্ত রিযিক থেকে! অথচ আল্লাহতাদের ব্যাপারে যথার্থভাবেই অবগত

[4:40]

নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রাপ্য হক বিন্দু-বিসর্গও রাখেন নাআর যদি তা সৎকর্ম হয়তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান করেন

[4:41]

আর তখন কি অবস্থা দাঁড়াবেযখন আমি ডেকে আনব প্রতিটি উম্মতের মধ্য থেকে অবস্থা বর্ণনাকারী এবং আপনাকে ডাকব তাদের উপর অবস্থা বর্ণনাকারীরূপে

[4:42]

সেদিন কামনা করবে সে সমস্ত লোকযারা কাফের হয়েছিল এবং রসূলের নাফরমানী করেছিলযেন যমীনের সাথে মিশেযায়। কিন্তু গোপন করতে পারবে না আল্লাহর নিকট কোন বিষয়

[4:43]

হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাকতখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনাযতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছআর (নামাযের কাছে যেও না) ফরয গোসলের আবস্থায়ও যতক্ষণ না গোসল করে নাও। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র আর যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে থাক কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি প্রস্রাব-পায়খানা থেকে এসে থাকে কিংবা নারী গমন করে থাকেকিন্তু পরে যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়তবেপাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল

[4:44]

তুমি কি ওদের দেখনিযারা কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়েছে, (অথচ) তারা পথভ্রষ্টতা খরিদ করে এবং কামনা করেযাতে তোমরাও আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত হয়ে যাও

[4:45]

অথচ আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে যথার্থই জানেন। আর অভিভাবক হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যকারী হিসাবেও আল্লাহই যথেষ্ট

[4:46]

কোন কোন ইহুদী তার লক্ষ্য থেকে কথার মোড় ঘুড়িয়ে নেয় এবং বলেআমরা শুনেছি কিন্তু অমান্য করছি। তারা আরোবলেশোননা শোনার মত। মুখ বাঁকিয়ে দ্বীনের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রদর্শনের উদ্দেশে বলেরায়েনা’ (আমাদের রাখাল)। অথচ যদি তারা বলত যেআমরা শুনেছি ও মান্য করেছি এবং (যদি বলত, ) শোন এবং আমাদের প্রতি লক্ষ্য রাখতবে তাই ছিল তাদের জন্য উত্তম আর সেটাই ছিল যথার্থ ও সঠিক। কিন্তু আল্লাহ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন তাদের কুফরীর দরুন। অতএবতারা ঈমান আনছে নাকিন্তু অতি অল্পসংখ্যক

[4:47]

হে আসমানী গ্রন্থের অধিকারীবৃন্দ! যা কিছু আমি অবতীর্ণ করেছি তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করযা সে গ্রন্থের সত্যায়ন করে এবং যা তোমাদের নিকট রয়েছে পূর্ব থেকে। (বিশ্বাস স্থাপন কর) এমন হওয়ার আগেই যেআমি মুছে দেব অনেক চেহারাকে এবং অতঃপর সেগুলোকে ঘুরিয়ে দেব পশ্চাৎ দিকে কিংবা অভিসম্পাত করব তাদের প্রতি যেমন করে অভিসম্পাত করেছি আছহাবে-সাবতের উপর। আর আল্লাহর নির্দেশ অবশ্যই কার্যকর হবে

[4:48]

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন নাযে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপযার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথেসে যেন অপবাদ আরোপ করল

[4:49]

তুমি কি তাদেকে দেখনিযারা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র বলে থাকে অথচ পবিত্র করেন আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকেইবস্তুতঃ তাদের উপর সুতা পরিমাণ অন্যায়ও হবে না

[4:50]

লক্ষ্য করকেমন করে তারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেঅথচ এই প্রকাশ্য পাপই যথেষ্ট

[4:51]

তুমি কি তাদেরকে দেখনিযারা কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়েছেযারা মান্য করে প্রতিমা ও শয়তানকে এবংকাফেরদেরকে বলে যেএরা মুসলমানদের তুলনায় অধিকতর সরল সঠিক পথে রয়েছে

[4:52]

এরা হলো সে সমস্ত লোকযাদের উপর লানত করেছেন আল্লাহ তাআলা স্বয়ং। বস্তুতঃ আল্লাহ যার উপর লানত করেন তুমি তার কোন সাহায্যকারী খুঁজে পাবে না

[4:53]

তাদের কাছে কি রাজ্যের কোন অংশ আছেতাহলে যে এরা কাউকেও একটি তিল পরিমাণও দেবে না

[4:54]

নাকি যাকিছু আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে দান করেছেন সে বিষয়ের জন্য মানুষকে হিংসা করে। অবশ্যই আমি ইব্রাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হেকমত দান করেছিলাম আর তাদেরকে দান করেছিলাম বিশাল রাজ্য

[4:55]

অতঃপর তাদের কেউ তাকে মান্য করেছে আবার কেউ তার কাছ থেকে দূরে সরে রয়েছে। বস্তুতঃ (তাদের জন্য) দোযখেরশিখায়িত আগুনই যথেষ্ট

[4:56]

এতে সন্দেহ নেই যেআমার নিদর্শন সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবেআমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবেতখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়েযাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহমহাপরাক্রমশালীহেকমতের অধিকারী

[4:57]

আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছেঅবশ্য আমি প্রবিষ্ট করাব তাদেরকে জান্নাতেযার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহর সমূহ। সেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। সেখানে তাদের জন্য থাকবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্ত্রীগণ। তাদেরকে আমি প্রবিষ্ট করব ঘন ছায়া নীড়ে

[4:58]

নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যেতোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। আর যখনতোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ করতখন মীমাংসা কর ন্যায় ভিত্তিক আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারীদর্শনকারী

[4:59]

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য করনির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপরযদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম

[4:60]

আপনি কি তাদেরকে দেখেননিযারা দাবী করে যেযা আপনার প্রতি অবর্তীর্ণ হয়েছে আমরা সে বিষয়ের উপর ঈমান এনেছি এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে। তারা বিরোধীয় বিষয়কে শয়তানের দিকে নিয়ে যেতে চায়অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছেযাতে তারা ওকে মান্য না করেপক্ষান্তরে শয়তান তাদেরকে প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়

[4:61]

আর যখন আপনি তাদেরকে বলবেনআল্লাহর নির্দেশের দিকে এসো-যা তিনি রসূলের প্রতি নাযিল করেছেনতখন আপনিমুনাফেকদিগকে দেখবেনওরা আপনার কাছ থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সরে যাচ্ছে

[4:62]

এমতাবস্থায় যদি তাদের কৃতকর্মের দরুন বিপদ আরোপিত হয়তবে তাতে কি হল! অতঃপর তারা আপনার কাছে আল্লাহর নামে কসম খেয়ে খেয়ে ফিরে আসবে যেমঙ্গল ও সম্প্রীতি ছাড়া আমাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না

[4:63]

এরা হলো সে সমস্ত লোকযাদের মনের গোপন বিষয় সম্পর্কেও আল্লাহ তাআলা অবগত। অতএবআপনি ওদেরকে উপেক্ষা করুন এবং ওদেরকে সদুপদেশ দিয়ে এমন কোন কথা বলুন যা তাদের জন্য কল্যাণকর

[4:64]

বস্তুতঃ আমি একমাত্র এই উদ্দেশ্যেই রসূল প্রেরণ করেছিযাতে আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তাঁদের আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়। আর সেসব লোক যখন নিজেদের অনিষ্ট সাধন করেছিলতখন যদি আপনার কাছে আসত অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং রসূলও যদি তাদেরকে ক্ষমা করিয়েদিতেন। অবশ্যই তারা আল্লাহকে ক্ষমাকারীমেহেরবানরূপে পেত

[4:65]

অতএবতোমার পালনকর্তার কসমসে লোক ঈমানদার হবে নাযতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকেন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে

[4:66]

আর যদি আমি তাদের নির্দেশ দিতাম যেনিজেদের প্রাণ ধ্বংস করে দাও কিংবা নিজেদের নগরী ছেড়ে বেরিয়ে যাওতবে তারা তা করত নাঅবশ্য তাদের মধ্যে অল্প কয়েকজন। যদি তারা তাই করে যা তাদের উপদেশ দেয়া হয়তবে তা অবশ্যই তাদের জন্য উত্তম এং তাদেরকে নিজের ধর্মের উপর সুদৃঢ় রাখার জন্য তা উত্তম হবে

[4:67]

আর তখন অবশ্যই আমি তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে মহান সওয়াব দেব

[4:68]

আর তাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করব

[4:69]

আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য করবেতাহলে যাঁদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেনসে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাঁরা হলেন নবীছিদ্দীকশহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম

[4:70]

এটা হল আল্লাহ-প্রদত্ত মহত্ত্ব। আর আল্লাহ যথেষ্ট পরিজ্ঞাত

[4:71]

হে ঈমানদারগণ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়

[4:72]

আর তোমাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ রয়েছেযারা অবশ্য বিলম্ব করবে এবং তোমাদের উপর কোন বিপদ উপস্থিত হলে বলবেআল্লাহ আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যেআমি তাদের সাথে যাইনি

[4:73]

পক্ষান্তরে তোমাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন অনুগ্রহ আসলে তারা এমন ভাবে বলতে শুরু করবে যেন তোমাদেরমধ্যে এবং তাদের মধ্যে কোন মিত্রতাই ছিল না। (বলবে) হায়আমি যদি তাদের সাথে থাকতামতাহলে আমি ও যে সফলতা লাভ করতাম

[4:74]

কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করেআমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব

[4:75]

আর তোমাদের কি হল যেতেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষনারী ও শিশুদের পক্ষেযারা বলেহে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান করএখানকার অধিবাসীরা যেঅত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও

[4:76]

যারা ঈমানদার তারা যেজেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল

[4:77]

তুমি কি সেসব লোককে দেখনিযাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যেতোমরা নিজেদের হাতকে সংযত রাখনামায কায়েম কর এবং যাকাত দিতে থাকঅতঃপর যখন তাদের প্রতি জেহাদের নির্দেশ দেয়া হলৎক্ষণাৎ তাদের মধ্যে একদল লোক মানুষকে ভয় করতে আরম্ভ করলযেমন করে ভয় করা হয় আল্লাহকে। এমন কি তার চেয়েও অধিক ভয়। আর বলতে লাগলহায় পালনকর্তাকেন আমাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করলে! আমাদেরকে কেন আরও কিছুকাল অবকাশ দান করলে না। ( হে রসূল) তাদেরকে বলে দিনপার্থিব ফায়দা সীমিত। আর আখেরাত পরহেযগারদের জন্য উত্তম। আর তোমাদের অধিকার একটি সূতা পরিমান ও খর্ব করা হবে না

[4:78]

তোমরা যেখানেই থাক না কেনমৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেওঅবস্থান করতবুও। বস্তুতঃ তাদের কোন কল্যাণ সাধিত হলে তারা বলে যেএটা সাধিত হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যদি তাদের কোন অকল্যাণ হয়তবে বলেএটা হয়েছেতোমার পক্ষ থেকেবলে দাওএসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। পক্ষান্তরে তাদের পরিণতি কি হবেযারা কখনও কোন কথা বুঝতে চেষ্টা করে না

[4:79]

আপনার যে কল্যাণ হয়তা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে আর আপনার যে অকল্যাণ হয়সেটা হয় আপনার নিজের কারণে। আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি মানুষের প্রতি আমার পয়গামের বাহক হিসাবে। আর আল্লাহ সব বিষয়েই যথেষ্ট-সববিষয়ই তাঁর সম্মুখে উপস্থিত

[4:80]

যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করলআমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ)তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি

[4:81]

আর তারা বলেআপনার আনুগত্য করি। অতঃপর আপনার নিকট থেকে বেরিয়ে গেলেই তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ পরামর্শ করে রাতের বেলায় সে কথার পরিপন্থী যা তারা আপনার সাথে বলেছিল। আর আল্লাহ লিখে নেনসে সব পরামর্শ যা তারা করে থাকে। সুতরাং আপনি তাদের ব্যাপারে নিস্পৃহতা অবলম্বন করুন এবং ভরসা করুন আল্লাহর উপরআল্লাহ হলেন যথেষ্ট ও কার্যসম্পাদনকারী

[4:82]

এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতিপক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হততবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত

[4:83]

আর যখন তাদের কছে পৌঁছে কোন সংবাদ শান্তি-সংক্রান্ত কিংবা ভয়েরতখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়। আর যদিসেগুলো পৌঁছে দিত রসূল পর্যন্ত কিংবা তাদের শাসকদের পর্যন্ততখন অনুসন্ধান করে দেখা যেত সেসব বিষয়যা তাতে রয়েছে অনুসন্ধান করার মত। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা যদি তোমাদের উপর বিদ্যমান না থাকত তবে তোমাদের অল্প কতিপয় লোক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে শুরু করত!

[4:84]

আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুনআপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনিমুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা

[4:85]

যে লোক সৎকাজের জন্য কোন সুপারিশ করবেতা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক সুপারিশ করবে মন্দ কাজের জন্যে সে তার বোঝারও একটি অংশ পাবে। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল

[4:86]

আর তোমাদেরকে যদি কেউ দোয়া করেতাহলে তোমরাও তার জন্য দোয়া করতারচেয়ে উত্তম দোয়া অথবা তারই মত ফিরিয়ে বল। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী

[4:87]

আল্লাহ ব্যতীত আর কোনোই উপাস্য নেই। অবশ্যই তিনি তোমাদেরকে সমবেত করবেন কেয়ামতের দিনএতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তাছাড়া আল্লাহর চাইতে বেশী সত্য কথা আর কার হবে!

[4:88]

অতঃপর তোমাদের কি হল যেমুনাফিকদের সম্পর্কে তোমরা দুদল হয়ে গেলেঅথচ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ঘুরিয়েদিয়েছেন তাদের মন্দ কাজের কারনে! তোমরা কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে চাওযাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেছেনআল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেনতুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না

[4:89]

তারা চায় যেতারা যেমন কাফেরতোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাওযাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাওঅতএবতাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো নাযে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না

[4:90]

কিন্তু যারা এমন সম্প্রদায়ের সাথে মিলিত হয় যেতোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে চুক্তি আছে অথবা তোমাদের কাছেএভাবে আসে যেতাদের অন্তর তোমাদের সাথে এবং স্বজাতির সাথেও যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক। যদি আল্লাহ ইচ্ছে করতেনতবে তোমাদের উপর তাদেরকে প্রবল করে দিতেন ফলে তারা অবশ্যই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। অতঃপর যদি তারা তোমাদের থেকে পৃথক থাকে তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের সাথে সন্ধি করেতবে আল্লাহ তোমাদের কেতাদের বিরুদ্ধে কোন পথ দেননি

[4:91]

এখন তুমি আরও এক সম্প্রদায়কে পাবে। তারা তোমাদের কাছেও স্বজাতির কাছেও এবং নির্বিঘ্ন হয়ে থাকতে চায়। যখনতাদেরকে ফ্যাসাদের প্রতি মনোনিবেশ করানো হয়তখন তারা তাতে নিপতিত হয়অতএব তারা যদি তোমাদের থেকে নিবৃত্ত না হয়তোমাদের সাথে সন্ধি না রাখে এবং স্বীয়হস্তসমূহকে বিরত না রাখেতবে তোমরা তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। আমি তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে প্রকাশ্য যুক্তি-প্রমাণ দান করেছি

[4:92]

মুসলমানের কাজ নয় যেমুসলমানকে হত্যা করেকিন্তু ভুলক্রমে। যে ব্যক্তি মুসলমানকে ভূলক্রমে হত্যা করেসে একজন মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে এবং রক্ত বিনিময় সমর্পন করবে তার স্বজনদেরকেকিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে দেয়। অতঃপর যদি নিহত ব্যক্তি তোমাদের শত্রু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়তবে মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে এবং যদি সেতোমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়তবে রক্ত বিনিময় সমর্পণ করবে তার স্বজনদেরকে এবং একজন মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে। অতঃপর যে ব্যক্তি না পায়সে আল্লাহর কাছ থেকে গোনাহ মাফ করানোর জন্যে উপর্যুপুরি দুই মাস রোযা রাখবে। আল্লাহমহাজ্ঞানীপ্রজ্ঞাময়

[4:93]

যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করেতার শাস্তি জাহান্নামতাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেনতাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন

[4:94]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর করতখন যাচাই করে নিও এবং যেতোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যেতুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ করবস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বেঅতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএবএখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন

[4:95]

গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করেআল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন

[4:96]

এগুলো তাঁর পক্ষ থেকে পদমর্যাদাক্ষমা ও করুণাআল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়

[4:97]

যারা নিজের অনিষ্ট করেফেরেশতারা তাদের প্রাণ হরণ করে বলেতোমরা কি অবস্থায় ছিলেতারা বলেঃ এ ভূখন্ডে আমরা অসহায় ছিলাম। ফেরেশতারা বলেঃ আল্লাহর পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিল না যেতোমরা দেশত্যাগ করে সেখানে চলে যেতেঅতএবএদের বাসস্থান হল জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত মন্দ স্থান

[4:98]

কিন্তু পুরুষনারী ও শিশুদের মধ্যে যারা অসহায়তারা কোন উপায় করতে পারে না এবং পথও জানে না

[4:99]

অতএবআশা করা যায়আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মার্জনাকারীক্ষমাশীল

[4:100]

যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করেসে এর বিনিময়ে অনেক স্থান ও সচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। যে কেউ নিজ গৃহ থেকে বের হয় আল্লাহ ও রসূলের প্রতি হিজরত করার উদ্দেশেঅতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়তবে তার সওয়াব আল্লাহর কাছে অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ ক্ষমাশীলকরুণাময়

[4:101]

যখন তোমরা কোন দেশ সফর করতখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেইযদি তোমরা আশঙ্কা কর যেকাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু

[4:102]

যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেনঅতঃপর নামাযে দাঁড়ানতখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয়অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করেতখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসেযারা নামায পড়েনি। অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। কাফেররা চায় যেতোমরা কোন রূপে অসতর্ক থাকযাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোন গোনাহ নেই এবং সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্নরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্যে অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন

[4:103]

অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন করতখন দন্ডায়মানউপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাওতখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে

[4:104]

তাদের পশ্চাদ্ধাবনে শৈথিল্য করো না। যদি তোমরা আঘাত প্রাপ্ততবে তারাও তো তোমাদের মতই হয়েছে আঘাতপ্রাপ্তএবং তোমরা আল্লাহর কাছে আশা করযা তারা আশা করে না। আল্লাহ মহাজ্ঞানীপ্রজ্ঞাময়

[4:105]

নিশ্চয় আমি আপনার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছিযাতে আপনি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেনযা আল্লাহ আপনাকে হৃদয়ঙ্গম করান। আপনি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হবেন না

[4:106]

এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীলদয়ালু

[4:107]

যারা মনে বিশ্বাস ঘাতকতা পোষণ করে তাদের পক্ষ থেকে বিতর্ক করবেন না। আল্লাহ পছন্দ করেন না তাকেযে বিশ্বাসঘাতক পাপী হয়

[4:108]

তারা মানুষের কাছে লজ্জিত হয় এবং আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয় না। তিনি তাদের সাথে রয়েছেনযখন তারা রাত্রে এমনবিষয়ে পরামর্শ করেযাতে আল্লাহ সম্মত নন। তারা যাকিছু করেসবই আল্লাহর আয়ত্তাধীণ

[4:109]

শুনছতোমরা তাদের পক্ষ থেকে পার্থিব জীবনে বিবাদ করছঅতঃপর কেয়ামতের দিনে তাদের পক্ষ হয়ে আল্লাহর সাথে কে বিবাদ করবে অথবা কে তাদের কার্যনির্বাহী হবে

[4:110]

যে গোনাহকরে কিংবা নিজের অনিষ্ট করেঅতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেসে আল্লাহকে ক্ষমাশীলকরুণাময় পায়

[4:111]

যে কেউ পাপ করেসে নিজের পক্ষেই করে। আল্লাহ মহাজ্ঞানীপ্রজ্ঞাময়

[4:112]

যে ব্যক্তি ভূল কিংবা গোনাহ করেঅতঃপর কোন নিরপরাধের উপর অপবাদ আরোপ করে সে নিজের মাথায় বহন করে জঘন্য মিথ্যা ও প্রকাশ্য গোনাহ

[4:113]

যদি আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হততবে তাদের একদল আপনাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেইফেলেছিল। তারা পথভ্রান্ত করতে পারে না কিন্তু নিজেদেরকেই এবং আপনার কোন অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ আপনার প্রতি ঐশী গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেনযা আপনি জানতেন না। আপনার প্রতি আল্লাহর করুণা অসীম

[4:114]

তাদের অধিকাংশ সলা-পরামর্শ ভাল নয়কিন্তু যে সলা-পরামর্শ দান খয়রাত করতে কিংবা সৎকাজ করতে কিংবা মানুষের মধ্যে সন্ধিস্থাপন কল্পে করতো তা স্বতন্ত্র। যে একাজ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমি তাকে বিরাট ছওয়াব দান করব

[4:115]

যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করেতার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলেআমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান

[4:116]

নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন নাযে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছাক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়

[4:117]

তারা আল্লাহকে পরিত্যাগ করে শুধু নারীর আরাধনা করে এবং শুধু অবাধ্য শয়তানের পূজা করে

[4:118]

যার প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। শয়তান বললঃ আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট অংশ গ্রহণকরব

[4:119]

তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবতাদেরকে আশ্বাস দেবতাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেসে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়

[4:120]

সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদেরকে আশ্বাস দেয়। শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়তা সব প্রতারণা বৈ নয়

[4:121]

তাদের বাসস্থান জাহান্নাম তারা সেখান থেকে কোথাও পালাবার জায়গা পাবে না

[4:122]

যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং ৎকর্ম করেছেআমি তাদেরকে উদ্যানসমূহে প্রবিষ্ট করাবযেগুলোর তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। তারা চিরকাল তথায় অবস্থান করবে। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সত্য সত্য। আল্লাহর চাইতে অধিক সত্যবাদী কে?

[4:123]

তোমাদের আশার উপর ও ভিত্তি নয় এবং আহলে-কিতাবদের আশার উপরও না। যে কেউ মন্দ কাজ করবেসে তার শাস্তি পাবে এবং সে আল্লাহ ছাড়া নিজের কোন সমর্থক বা সাহায্যকারী পাবে না

[4:124]

যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারীকোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদেরপ্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না

[4:125]

যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করেযিনিএকনিষ্ঠ ছিলেনতার চাইতে উত্তম ধর্ম কারআল্লাহ ইব্রাহীমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন

[4:126]

যা কিছু নভোন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমন্ডলে আছেসব আল্লাহরই। সব বস্তু আল্লাহর মুষ্ঠি বলয়ে

[4:127]

তারা আপনার কাছে নারীদের বিবাহের অনুমতি চায়। বলে দিনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সম্পর্কে অনুমতি দেন এবংকোরআনে তোমাদেরকে যা যা পাট করে শুনানো হয়তা ঐ সব পিতৃহীনা-নারীদের বিধানযাদের কে তোমরা নির্ধারিত অধিকার প্রদান কর না অথচ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করারবাসনা রাখ। আর অক্ষম শিশুদের বিধান এই যেএতীমদের জন্যে ইনসাফের উপর কায়েম থাক। তোমরা যা ভাল কাজ করবেতা আল্লাহ জানেন

[4:128]

যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করেতবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হওতবেআল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন

[4:129]

তোমরা কখনও নারীদেরকে সমান রাখতে পারবে নাযদিও এর আকাঙ্ক্ষী হও। অতএবসম্পূর্ণ ঝুঁকেও পড়ো না যেএকজনকে ফেলে রাখ দোদুল্যমান অবস্থায়। যদি সংশোধন কর এবং খোদাভীরু হওতবে আল্লাহ ক্ষমাশীলকরুণাময়

[4:130]

যদি উভয়েই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়তবে আল্লাহ স্বীয় প্রশস্ততা দ্বারা প্রত্যেককে অমুখাপেক্ষী করে দিবেন আল্লাহ সুপ্রশস্তপ্রজ্ঞাময়

[4:131]

আর যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে সবই আল্লাহর। বস্তুতঃ আমি নির্দেশ দিয়েছি তোমাদের পূর্ববর্তী গ্রন্থেরঅধিকারীদেরকে এবং তোমাদেরকে যেতোমরা সবাই ভয় করতে থাক আল্লাহকে। যদি তোমরা তা না মানতবে জেনোসে সব কিছুই আল্লাহ তাআলার যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে। আর আল্লাহ হচ্ছেন অভাবহীনপ্রসংশিত

[4:132]

আর আল্লাহরই জন্যে সে সবকিছু যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমীনে। আল্লাহই যথেষ্ট কর্মবিধায়ক

[4:133]

হে মানবকূলযদি আল্লাহ তোমাদেরকে সরিয়ে তোমাদের জায়গায় অন্য কাউকে প্রতিষ্ঠিত করেনবস্তুতঃ আল্লাহর সে ক্ষমতা রয়েছে

[4:134]

যে কেউ দুনিয়ার কল্যাণ কামনা করবেতার জেনে রাখা প্রয়োজন যেদুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ আল্লাহরই নিকটরয়েছে। আর আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও দেখেন

[4:135]

হে ঈমানদারগণতোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকআল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান করতাতে তোমাদেরনিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী অতএবতোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাওতবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত

[4:136]

হে ঈমানদারগণআল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রসূলও তাঁর কিতাবের উপরযা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রসূলের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপরযেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপরতাঁর ফেরেশতাদের উপরতাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামতদিনের উপর বিশ্বাস করবে নাসে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে

[4:137]

যারা একবার মুসলমান হয়ে পরে পুনরায় কাফের হয়ে গেছেআবার মুসলমান হয়েছে এবং আবারো কাফের হয়েছে এবংকুফরীতেই উন্নতি লাভ করেছেআল্লাহ তাদেরকে না কখনও ক্ষমা করবেননা পথ দেখাবেন

[4:138]

সেসব মুনাফেককে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন যেতাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব

[4:139]

যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করেঅথচ যাবতীয় সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য

[4:140]

আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যেযখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবেতখন তোমরা তাদের সাথে বসবে নাযতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন

[4:141]

এরা এমনি মুনাফেক যারা তোমাদের কল্যাণ-অকল্যাণের প্রতীক্ষায় ওঁৎপেতে থাকে। অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছায় তোমাদের যদি কোন বিজয় অর্জিত হয়তবে তারা বলেআমরাও কি তোমাদের সাথে ছিলাম নাপক্ষান্তরে কাফেরদের যদি আংশিক বিজয় হয়তবে বলেআমরা কি তোমাদেরকে ঘিরে রাখিনি এবং মুসলমানদের কবল থেকে রক্ষা করিনিসুতরাং আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কেয়ামতের দিন মীমাংসা করবেন এবং কিছুতেই আল্লাহ কাফেরদেরকে মুসলমানদের উপর বিজয় দান করবেন না

[4:142]

অবশ্যই মুনাফেকরা প্রতারণা করছে আল্লাহর সাথেঅথচ তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারিত করে। বস্তুতঃ তারা যখননামাযে দাঁড়ায় তখন দাঁড়ায়একান্ত শিথিল ভাবে লোক দেখানোর জন্য। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে

[4:143]

এরা দোদুল্যমান অবস্থায় ঝুলন্তএদিকেও নয় ওদিকেও নয়। বস্তুতঃ যাকে আল্লাহ গোমরাহ করে দেনতুমি তাদের জন্য কোন পথই পাবে না কোথাও

[4:144]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফেরদেরকে বন্ধু বানিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে। তোমরা কি এমনটি করে নিজের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলীল কায়েম করে দেবে?

[4:145]

নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও পাবে না

[4:146]

অবশ্য যারা তওবা করে নিয়েছেনিজেদের অবস্থার সংস্কার করেছে এবং আল্লাহর পথকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে আল্লাহরফরমাবরদার হয়েছেতারা থাকবে মুসলমানদেরই সাথে। বস্তুতঃ আল্লাহ শীঘ্রই ঈমানদারগণকে মহাপূণ্য দান করবেন

[4:147]

তোমাদের আযাব দিয়ে আল্লাহ কি করবেন যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক! আর আল্লাহ হচ্ছেন সমুচিত মূল্যদানকারী সর্বজ্ঞ

[4:148]

আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহশ্রবণকারীবিজ্ঞ

[4:149]

তোমরা যদি কল্যাণ কর প্রকাশ্যভাবে কিংবা গোপনে অথবা যদি তোমরা আপরাধ ক্ষমা করে দাওতবে জেনোআল্লাহনিজেও ক্ষমাকারীমহাশক্তিশালী

[4:150]

যারা আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারী তদুপরি আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাসে তারতম্য করতে চায় আর বলে যেআমরা কতককে বিশ্বাস করি কিন্তু কতককে প্রত্যাখ্যান করি এবং এরই মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করতে চায়

[4:151]

প্রকৃতপক্ষে এরাই সত্য প্রত্যাখ্যাকারী। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছিঅপমানজনক আযাব

[4:152]

আর যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর উপরতাঁর রসূলের উপর এবং তাঁদের কারও প্রতি ঈমান আনতে গিয়ে কাউকে বাদ দেয়নিশীঘ্রই তাদেরকে প্রাপ্য সওয়াব দান করা হবে। বস্তুতঃ আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু

[4:153]

আপনার নিকট আহলে-কিতাবরা আবেদন জানায় যেআপনি তাদের উপর আসমান থেকে লিখিত কিতাব অবতীর্ণ করিয়ে নিয়ে আসুন বস্তুতঃ এরা মূসার কাছে এর চেয়েও বড় জিনিস চেয়েছে। বলেছেএকেবারে সামনাসামনিভাবে আমাদের আল্লাহকে দেখিয়ে দাও। অতএবতাদের উপর বজ্রপাত হয়েছে তাদের পাপের দরুনঅতঃপর তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ-নিদর্শন প্রকাশিত হবার পরেও তারা গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিলতাও আমি ক্ষমা করে দিয়েছিলাম এবং আমি মূসাকে প্রকৃষ্ট প্রভাব দান করেছিলাম

[4:154]

আর তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেবার উদ্দেশ্যে আমি তাদের উপর তূর পর্বতকে তুলে ধরেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলামঅবনত মস্তকে দরজায় ঢোক। আর বলেছিলামশনিবার দিন সীমালংঘন করো না। এভাবে তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম

[4:155]

অতএবতারা যে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছিলতা ছিল তাদেরই অঙ্গীকার ভঙ্গর জন্য এবং অন্যায়ভাবে রসূলগণকে হত্যাকরার কারণে এবং তাদের এই উক্তির দরুন যেআমাদের হৃদয় আচ্ছন্ন। অবশ্য তা নয়বরং কুফরীর কারণে স্বয়ং আল্লাহ তাদের অন্তরের উপর মোহর এঁটে দিয়েছেন। ফলে এরা ঈমান আনে না কিন্তু অতি অল্পসংখ্যক

[4:156]

আর তাদের কুফরী এবং মরিয়মের প্রতি মহা অপবাদ আরোপ করার কারণে

[4:157]

আর তাদের একথা বলার কারণে যেআমরা মরিয়ম পুত্র ঈসা মসীহকে হত্যা করেছি যিনি ছিলেন আল্লাহর রসূল। অথচ তারা না তাঁকে হত্যা করেছেআর না শুলীতে চড়িয়েছেবরং তারা এরূপ ধাঁধায় পতিত হয়েছিল। বস্তুতঃ তারা এ ব্যাপারে নানা রকম কথা বলেতারা এক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে পড়ে আছেশুধুমাত্র অনুমান করা ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোন খবরই রাখে না। আর নিশ্চয়ই তাঁকে তারা হত্যা করেনি

[4:158]

বরং তাঁকে উঠিয়ে নিয়েছেন আল্লাহ তাআলা নিজের কাছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালীপ্রজ্ঞাময়

[4:159]

আর আহলে-কিতাবদের মধ্যে যত শ্রেণী রয়েছে তারা সবাই ঈমান আনবে ঈসার উপর তাদের মৃত্যুর পূর্বে। আর কেয়ামতের দিন তাদের জন্য সাক্ষীর উপর সাক্ষী উপস্থিত হবে

[4:160]

বস্তুতঃ ইহুদীদের জন্য আমি হারাম করে দিয়েছি বহু পূত-পবিত্র বস্তু যা তাদের জন্য হালাল ছিল-তাদের পাপের কারণে এবং আল্লাহর পথে অধিক পরিমাণে বাধা দানের দরুন

[4:161]

আর এ কারণে যেতারা সুদ গ্রহণ করতঅথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যেতারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুতআমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব

[4:162]

কিন্তু যারা তাদের মধ্যে জ্ঞানপক্ক ও ঈমানদারতারা তাও মান্য করে যা আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আপনার পূর্বে। আর যারা নামাযে অনুবর্তিতা পালনকারীযারা যাকাত দানকারী এবং যারা আল্লাহ ও কেয়ামতে আস্থাশীল। বস্তুতঃ এমন লোকদেরকে আমি দানকরবো মহাপুণ্য

[4:163]

আমি আপনার প্রতি ওহী পাঠিয়েছিযেমন করে ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের প্রতি এবং সে সমস্ত নবী-রসূলের প্রতি যাঁরা তাঁর পরে প্রেরিত হয়েছেন। আর ওহী পাঠিয়েছিইসমাঈলইব্রাহীমইসহাকইয়াকুবও তাঁর সন্তাবর্গের প্রতি এবং ঈসাআইয়ুবইউনূসহারুন ও সুলায়মানের প্রতি। আর আমি দাউদকে দান করেছি যবুর গ্রন্থ

[4:164]

এছাড়া এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের ইতিবৃত্ত আমি আপনাকে শুনিয়েছি ইতিপূর্বে এবং এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শোনাইনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে কথোপকথন করেছেন সরাসরি

[4:165]

সুসংবাদদাতা ও ভীতি-প্রদর্শনকারী রসূলগণকে প্রেরণ করেছিযাতে রসূলগণের পরে আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করার মত কোন অবকাশ মানুষের জন্য না থাকে। আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশীলপ্রাজ্ঞ

[4:166]

আল্লাহ আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তিনি যে তা সজ্ঞানেই করেছেনসে ব্যাপারে আল্লাহ নিজেও সাক্ষী এবংফেরেশতাগণও সাক্ষী। আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট

[4:167]

যারা কুফরী অবলম্বন করেছেএবং আল্লাহর পথে বাধার সৃষ্টি করেছেতারা বিভ্রান্তিতে সুদূরে পতিত হয়েছে

[4:168]

যারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং সত্য চাপা দিয়ে রেখেছেআল্লাহ কখনও তাদের ক্ষমা করবেন না এবং সরল পথ দেখাবেন না

[4:169]

তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের পথ। সেখানে তারা বাস করবে অনন্তকাল। আর এমন করাটা আল্লাহর পক্ষে সহজ

[4:170]

হে মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ বাণী নিয়ে তোমাদের নিকট রসূল এসেছেনতোমরা তা মেনে নাও যাতেতোমাদের কল্যাণ হতে পারে। আর যদি তোমরা তা না মানজেনে রাখ আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সে সবকিছুই আল্লাহর। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্বজ্ঞপ্রাজ্ঞ

[4:171]

হে আহলে-কিতাবগণ! তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহর শানে নিতান্ত সঙ্গত বিষয় ছাড়া কোন কথা বলো না। নিঃসন্দেহে মরিয়ম পুত্র মসীহ ঈসা আল্লাহর রসূল এবং তাঁর বাণী যা তিনি প্রেরণ করেছেন মরিয়মের নিকট এবং রূহ-তাঁরই কাছ থেকে আগত। অতএবতোমরাআল্লাহকে এবং তার রসূলগণকে মান্য কর। আর একথা বলো না যেআল্লাহ তিনের একএকথা পরিহার করতোমাদের মঙ্গল হবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ একক উপাস্য। সন্তান-সন্ততি হওয়াটা তাঁর যোগ্য বিষয় নয়। যা কিছু আসমান সমূহ ও যমীনে রয়েছে সবই তার। আর কর্মবিধানে আল্লাহই যথেষ্ট

[4:172]

মসীহ আল্লাহর বান্দা হবেনতাতে তার কোন লজ্জাবোধ নেই এবং ঘনিষ্ঠ ফেরেশতাদেরও না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর দাসত্বে লজ্জাবোধ করবে এবং অহংকার করবেতিনি তাদের সবাইকে নিজের কাছে সমবেত করবেন

[4:173]

অতঃপর যারা ঈমান এনেছে এবং ৎকাজ করেছেতিনি তাদেরকে পরিপূর্ণ সওয়াব দান করবেনবরং স্বীয় অনুগ্রহে আরো বেশী দেবেন। পক্ষান্তরে যারা লজ্জাবোধ করেছে এবং অহঙ্কার করেছে তিনি তাদেরকে দেবেন বেদনাদায়ক আযাব। আল্লাহকে ছাড়া তারা কোন সাহায্যকারী ও সমর্থক পাবে না

[4:174]

হে মানবকুল! তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সনদ পৌঁছে গেছে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট আলো অবতীর্ণ করেছি

[4:175]

অতএবযারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করেছে তিনি তাদেরকে স্বীয় রহমত ও অনুগ্রহেরআওতায় স্থান দেবেন এবং নিজের দিকে আসার মত সরল পথে তুলে দেবেন

[4:176]

মানুষ আপনার নিকট ফতোয়া জানতে চায় অতএবআপনি বলে দিনআল্লাহ তোমাদিগকে কালালাহ এর মীরাস সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেনযদি কোন পুরুষ মারা যায় এবং তার কোন সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকেতবে সে পাবে তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদিনিঃসন্তান হয়তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। তা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকেতবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। তোমরা বিভ্রান্ত হবে আল্লাহ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত