Quran translations in many languages

Bengali Quran

Ash-Shûrâ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[42:1]

হা-মীম

[42:2]

আইনসীন ক্বা-ফ

[42:3]

এমনিভাবে পরাক্রমশালীপ্রজ্ঞাময় আল্লাহ আপনার প্রতি ও আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেন

[42:4]

নভোমন্ডলে যা কিছু আছে এবং ভূমন্ডলে যা কিছু আছেসমস্তই তাঁর। তিনি সমুন্নতমহান

[42:5]

আকাশ উপর থেকে ফেটে পড়ার উপক্রম হয় আর তখন ফেরেশতাগণ তাদের পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করে এবং পৃথিবীবাসীদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে। শুনে রাখআল্লাহই ক্ষমাশীলপরম করুনাময়

[42:6]

যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করেআল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন। আপনার উপর নয় তাদের দায়-দায়িত্ব

[42:7]

এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছিযাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কেযাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে

[42:8]

আল্লাহ ইচ্ছা করলে সমস্ত লোককে এক দলে পরিণত করতে পারেন। কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা স্বীয় রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই

[42:9]

তারা কি আল্লাহ ব্যতীত অপরকে অভিভাবক স্থির করেছেপরন্তু আল্লাহই তো একমাত্র অভিভাবক। তিনি মৃতদেরকে জীবিত করেন। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান

[42:10]

তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ করতার ফয়সালা আল্লাহর কাছে সোপর্দ। ইনিই আল্লাহ আমার পালনকর্তা আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী হই

[42:11]

তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুস্পদজন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেনসব দেখেন

[42:12]

আকাশ ও পৃথিবীর চাবি তাঁর কাছে। তিনি যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বৃদ্ধি করেন এবং পরিমিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে জ্ঞানী

[42:13]

তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নিধারিত করেছেনযার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকেযা আমি প্রত্যাদেশকরেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীমমূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যেতোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। আপনি মূশরেকদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আমন্ত্রণ জানানতা তাদের কাছে দুঃসাধ্য বলে মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয়তাকে পথ প্রদর্শন করেন

[42:14]

তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরই তারা পারস্পরিক বিভেদের কারণে মতভেদ করেছে। যদি আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকততবে তাদের ফয়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছেতারা অস্বস্তিকর সন্দেহে পতিত রয়েছে

[42:15]

সুতরাং আপনি এর প্রতিই দাওয়াত দিন এবং হুকুম অনুযায়ী অবিচল থাকুনআপনি তাদের খেয়ালখুশীর অনুসরণ করবেন না বলুনআল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেনআমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে সমবেত করবেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তণ হবে

[42:16]

আল্লাহর দ্বীন মেনে নেয়ার পর যারা সে সম্পর্কে বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়তাদের বিতর্ক তাদের পালনকর্তার কাছে বাতিলতাদের প্রতি আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব

[42:17]

আল্লাহই সত্যসহ কিতাব ও ইনসাফের মানদন্ড নাযিল করেছেন। আপনি কি জানেনসম্ভবতঃ কেয়ামত নিকটবর্তী

[42:18]

যারা তাতে বিশ্বাস করে না তারা তাকে তড়িৎ কামনা করে। আর যারা বিশ্বাস করেতারা তাকে ভয় করে এবং জানে যেতা সত্য। জেনে রাখযারা কেয়ামত সম্পর্কে বিতর্ক করেতারা দূরবর্তী পথ ভ্রষ্টতায় লিপ্ত রয়েছে

[42:19]

আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছারিযিক দান করেন। তিনি প্রবলপরাক্রমশালী

[42:20]

যে কেউ পরকালের ফসল কামনা করেআমি তার জন্যে সেই ফসল বাড়িয়ে দেই। আর যে ইহকালের ফসল কামনা করেআমি তাকে তার কিছু দিয়ে দেই এবং পরকালে তার কোন অংশ থাকবে না

[42:21]

তাদের কি এমন শরীক দেবতা আছেযারা তাদের জন্যে সে ধর্ম সিদ্ধ করেছেযার অনুমতি আল্লাহ দেননি যদি চুড়ান্তসিন্ধান্ত না থাকততবে তাদের ব্যাপারে ফয়সালা হয়ে যেত। নিশ্চয় যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি

[42:22]

আপনি কাফেরদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্যে ভীতসন্ত্রস্ত দেখবেন। তাদের কর্মের শাস্তি অবশ্যই তাদের উপর পতিত হবে। আর যারা মুমিন ও সৎকর্মীতারা জান্নাতের উদ্যানে থাকবে। তারা যা চাইবেতাই তাদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে। এটাই বড় পুরস্কার

[42:23]

এরই সুসংবাদ দেন আল্লাহ তার সেসব বান্দাকেযারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে। বলুনআমি আমার দাওয়াতেরজন্যে তোমাদের কাছে কেবল আত্নীয়তাজনিত সৌহার্দ চাই। যে কেউ উত্তম কাজ করেআমি তার জন্যে তাতে পুণ্য বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারীগুণগ্রাহী

[42:24]

নাকি তারা একথা বলে যেতিনি আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করেছেনআল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনার অন্তরে মোহর এঁটে দিতেন। বস্তুতঃ তিনি মিথ্যাকে মিটিয়ে দেন এবং নিজ বাক্য দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নিশ্চয় তিনি অন্তর্নিহিত বিষয় সম্পর্কে সর্বিশেষ জ্ঞাত

[42:25]

তিনি তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন পাপসমূহ মার্জনা করেন এবং তোমাদের কৃত বিষয় সম্পর্কে অবগত রয়েছেন

[42:26]

তিনি মুমিন ও সৎকর্মীদের দোয়া শোনেন এবং তাদের প্রতি স্বীয় অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন। আর কাফেরদের জন্যে রয়েছেকঠোর শাস্তি

[42:27]

যদি আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাকে প্রচুর রিযিক দিতেনতবে তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা সে পরিমাণ নাযিল করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের খবর রাখেন ও সবকিছু দেখেন

[42:28]

মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পরে তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং স্বীয় রহমত ছড়িয়ে দেন। তিনিই কার্যনির্বাহীপ্রশংসিত

[42:29]

তাঁর এক নিদর্শন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যেসব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেনতিনি যখন ইচ্ছা এগুলোকে একত্রিত করতে সক্ষম

[42:30]

তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন

[42:31]

তোমরা পৃথিবীতে পলায়ন করে আল্লাহকে অক্ষম করতে পার না এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন কার্যনির্বাহী নেইসাহায্যকারীও নেই

[42:32]

সমুদ্রে ভাসমান পর্বতসম জাহাজসমূহ তাঁর অন্যতম নিদর্শন

[42:33]

তিনি ইচ্ছা করলে বাতাসকে থামিয়ে দেন। তখন জাহাজসমূহ সমুদ্রপৃষ্ঠে নিশ্চল হয়ে পড়ে যেন পাহাড়। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক সবরকারীকৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে

[42:34]

অথবা তাদের কৃতকর্মের জন্যে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেন এবং অনেককে ক্ষমাও করে দেন

[42:35]

এবং যারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে বিতর্ক করেতারা যেন জানে যেতাদের কোন পলায়নের জায়গা নেই

[42:36]

অতএবতোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা রয়েছেতা উৎকৃষ্ট ওস্থায়ী তাদের জন্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে

[42:37]

যারা বড় গোনাহ ও অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধাম্বিত হয়েও ক্ষমা করে,

[42:38]

যারা তাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য করেনামায কায়েম করেপারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছিতা থেকে ব্যয় করে,

[42:39]

যারা আক্রান্ত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে

[42:40]

আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছেনিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন নাই

[42:41]

নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করেতাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই

[42:42]

অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধেযারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করেবেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি

[42:43]

অবশ্যই যে সবর করে ও ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ

[42:44]

আল্লাহ যাকে পথ ভ্রষ্ট করেনতার জন্যে তিনি ব্যতীত কোন কার্যনির্বাহী নেই। পাপাচারীরা যখন আযাব প্রত্যক্ষ করবেতখন আপনি তাদেরকে দেখবেন যেতারা বলছে আমাদের ফিরে যাওয়ার কোন উপায় আছে কি?

[42:45]

জাহান্নামের সামনে উপস্থিত করার সময় আপনি তাদেরকে দেখবেনঅপমানে অবনত এবং অর্ধ নিমীলিত দৃষ্টিতে তাকায় মুমিনরা বলবেকেয়ামতের দিন ক্ষতিগ্রস্ত তারাইযারা নিজেদের ও তাদের পরিবার-পরিজনের ক্ষতি সাধন করেছে। শুনে রাখপাপাচারীরা স্থায়ী আযাবে থাকবে

[42:46]

আল্লাহ তাআলা ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে নাযে তাদেরকে সাহায্য করবে। আল্লাহ তাআলা যাকেপথভ্রষ্ট করেনতার কোন গতি নেই

[42:47]

আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অবশ্যম্ভাবী দিবস আসার পূর্বে তোমরা তোমাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য কর। সেদিনতোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তা নিরোধকারী কেউ থাকবে না

[42:48]

যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়তবে আপনাকে আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কর্তব্য কেবল প্রচার করা। আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কর্তব্য কেবল প্রচার করা। আমি যখন মানুষকে আমার রহমত আস্বাদন করাইতখন সে উল্লসিতআর যখন তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের কোন অনিষ্ট ঘটেতখন মানুষ খুব অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়

[42:49]

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তাআলারই। তিনি যা ইচ্ছাসৃষ্টি করেনযাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন

[42:50]

অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞক্ষমতাশীল

[42:51]

কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যেআল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরালথেকে অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেনঅতঃপর আল্লাহ যা চানসে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়

[42:52]

এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন নাকিতাব কি এবং ঈমান কিকিন্তু আমি একে করেছি নূরযাদ্দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। নিশ্চয় আপনি সরল পথ প্রদর্শন করেন-

[42:53]

আল্লাহর পথ। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল যা কিছু আছেসব তাঁরই। শুনে রাখআল্লাহ তাআলার কাছেই সব বিষয়েপৌঁছে