Quran translations in many languages

Bengali Quran

At-Tawbah

[9:1]

সম্পর্কচ্ছেদ করা হল আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে সেই মুশরিকদের সাথেযাদের সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলে

[9:2]

অতঃপর তোমরা পরিভ্রমণ কর এ দেশে চার মাসকাল। আর জেনে রেখোতোমরা আল্লাহকে পরাভূত করতে পারবে নাআর নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফেরদিগকে লাঞ্ছিত করে থাকেন

[9:3]

আর মহান হজ্বের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে লোকদের প্রতি ঘোষণা করে দেয়া হচ্ছে যেআল্লাহ মুশরেকদের থেকে দায়িত্ব মুক্ত এবং তাঁর রসূলও। অবশ্য যদি তোমরা তওবা করতবে তাতোমাদের জন্যেও কল্যাণকরআর যদি মুখ ফেরাওতবে জেনে রেখোআল্লাহকে তোমরা পরাভূত করতে পারবে না। আর কাফেরদেরকে মর্মান্তিক শাস্তির সুসংবাদ দাও

[9:4]

তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তি বদ্ধঅতপরঃ যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনিতাদের সাথে কৃত চুক্তিকে তাদের দেয়া মেয়াদ পর্যন্ত পূরণ কর। অবশ্যই আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন

[9:5]

অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাওতাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করেনামায কায়েম করেযাকাত আদায় করেতবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীলপরম দয়ালু

[9:6]

আর মুশরিকদের কেউ যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেতবে তাকে আশ্রয় দেবেযাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছে দেবে। এটি এজন্যে যে এরা জ্ঞান রাখে না

[9:7]

মুশরিকদের চুক্তি আল্লাহর নিকট ও তাঁর রসূলের নিকট কিরূপে বলবৎ থাকবে। তবে যাদের সাথে তোমরা চুক্তি সম্পাদন করেছ মসজিদুল-হারামের নিকট। অতএবযে পর্যন্ত তারা তোমাদের জন্যে সরল থাকেতোমরাও তাদের জন্য সরল থাক। নিঃসন্দেহের আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন

[9:8]

কিরূপেতারা তোমাদের উপর জয়ী হলে তোমাদের আত্নীয়তার ও অঙ্গীকারের কোন মর্যাদা দেবে না। তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট করেকিন্তু তাদের অন্তরসমূহ তা অস্বীকার করেআর তাদের অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী

[9:9]

তারা আল্লাহর আয়াত সমূহ নগন্য মুল্যে বিক্রয় করেঅতঃপর লোকদের নিবৃত রাখে তাঁর পথ থেকেতারা যা করে চলছেতা অতি নিকৃষ্ট

[9:10]

তারা মর্যাদা দেয় না কোন মুসলমানের ক্ষেত্রে আত্নীয়তারআর না অঙ্গীকারের। আর তারাই সীমালংঘনকারী

[9:11]

অবশ্য তারা যদি তওবা করেনামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করেতবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই। আর আমি বিধানসমূহে জ্ঞানী লোকদের জন্যে সর্বস্তরে র্বণনা করে থাকি

[9:12]

আর যদি ভঙ্গ করে তারা তাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কেতবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর। কারণএদের কেন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে

[9:13]

তোমরা কি সেই দলের সাথে যুদ্ধ করবে নাযারা ভঙ্গ করেছে নিজেদের শপথ এবং সঙ্কল্প নিয়েছে রসূলকে বহিস্কারেরআর এরাই প্রথম তোমাদের সাথে বিবাদের সূত্রপাত করেছে। তোমরা কি তাদের ভয় করঅথচ তোমাদের ভয়ের অধিকতর যোগ্য হলেন আল্লাহযদি তোমরা মুমিন হও

[9:14]

যুদ্ধ কর ওদের সাথেআল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেনতাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরজয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন

[9:15]

এবং তাদের মনের ক্ষোভ দূর করবেন। আর আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছা ক্ষমাশীল হবেআল্লাহ সর্বজ্ঞপ্রজ্ঞাময়

[9:16]

তোমরা কি মনে কর যেতোমাদের ছেড়ে দেয়া হবে এমনিযতক্ষণ না আল্লাহ জেনে নেবেন তোমাদের কে যুদ্ধ করেছে এবং কে আল্লাহতাঁর রসূল ও মুসলমানদের ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছে। আর তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত

[9:17]

মুশরিকরা যোগ্যতা রাখে না আল্লাহর মসজিদ আবাদ করারযখন তারা নিজেরাই নিজেদের কুফরীর স্বীকৃতি দিচ্ছে এদের আমল বরবাদ হবে এবং এরা আগুনে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে

[9:18]

নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাতআল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএবআশা করা যায়তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে

[9:19]

তোমরা কি হাজীদের পানি সরবরাহ ও মসজিদুল-হারাম আবাদকরণকে সেই লোকের সমান মনে করযে ঈমান রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং যুদ্ধ করেছে আল্লাহর রাহেএরা আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান নয়আর আল্লাহ জালেম লোকদের হেদায়েত করেন না

[9:20]

যারা ঈমান এনেছেদেশ ত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জেহাদ করেছেতাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে আর তারাই সফলকাম

[9:21]

তাদের সুসংবাদ দিচ্ছেন তাদের পরওয়ারদেগার স্বীয় দয়া ও সন্তোষের এবং জান্নাতেরসেখানে আছে তাদের জন্য স্থায়ী শান্তি

[9:22]

তথায় তারা থাকবে চিরদিন নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে আছে মহাপুরস্কার

[9:23]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো নাযদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে ভালবাসে আর তোমাদের যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা সীমালংঘনকারী

[9:24]

বলতোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তানতোমাদের ভাই তোমাদের পত্নীতোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদতোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহতাঁর রসূল ও তাঁর রাহে জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়তবে অপেক্ষা করআল্লাহর বিধান আসা পর্যন্তআর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না

[9:25]

আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছেন অনেক ক্ষেত্রে এবং হোনাইনের দিনেযখন তোমাদের সংখ্যধিক্য তোমাদের প্রফুল্ল করেছিলকিন্তু তা তোমাদের কোন কাজে আসেনি এবং পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্তেও তোমাদের জন্য সংকুচিত হয়েছিল। অতঃপর পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পলায়ন করেছিলে

[9:26]

তারপর আল্লাহ নাযিল করেন নিজের পক্ষ থেকে সান্ত্বনাতাঁর রসূল ও মুমিনদের প্রতি এবং অবতীর্ণ করেন এমনসেনাবাহিনী যাদের তোমরা দেখতে পাওনি। আর শাস্তি প্রদান করেন কাফেরদের এবং এটি হল কাফেরদের কর্মফল

[9:27]

এরপর আল্লাহ যাদের প্রতি ইচ্ছা তওবার তওফীক দেবেনআর আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীলপরম দয়ালু

[9:28]

হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা দারিদ্রে?র আশংকা করতবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞপ্রজ্ঞাময়

[9:29]

তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথেযারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে নাআল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্মযতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে

[9:30]

ইহুদীরা বলে ওযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে মসীহ আল্লাহর পুত্র। এ হচ্ছে তাদের মুখের কথা। এরা পূর্ববর্তী কাফেরদের মত কথা বলে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুনএরা কোন উল্টা পথে চলে যাচ্ছে

[9:31]

তারা তাদের পন্ডিত ও সংসার-বিরাগীদিগকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে আল্লাহ ব্যতীত এবং মরিয়মেরপুত্রকেও। অথচ তারা আদিষ্ট ছিল একমাত্র মাবুদের এবাদতের জন্য। তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেইতারা তাঁর শরীক সাব্যস্ত করেতার থেকে তিনি পবিত্র

[9:32]

তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেনযদিও কাফেররা তা অপ্রীতিকর মনে করে

[9:33]

তিনিই প্রেরণ করেছেন আপন রসূলকে হেদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারেযেন এ দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেনযদিও মুশরিকরা তা অপ্রীতিকর মনে করে

[9:34]

হে ঈমানদারগণ! পন্ডিত ও সংসারবিরাগীদের অনেকে লোকদের মালামাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে চলছে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে। আর যারা স্বর্ণ ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথেতাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন

[9:35]

সে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাটপার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে)এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলেসুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার

[9:36]

নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটিআসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধানসুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতিঅত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ কর সমবেতভাবেযেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখোআল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন

[9:37]

এই মাস পিছিয়ে দেয়ার কাজ কেবল কুফরীর মাত্রা বৃদ্ধি করেযার ফলে কাফেরগণ গোমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালালকরে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছরযাতে তারা গণনা পূর্ণ করে নেয় আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলোর। অতঃপর হালাল করে নেয় আল্লাহর হারামকৃত মাসগুলোকেতাদের মন্দকাজগুলো তাদের জন্যে শোভনীয় করে দেয়া হল। আর আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না

[9:38]

হে ঈমানদারগণতোমাদের কি হলযখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়তখন মাটি জড়িয়ে ধরতোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলেঅথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প

[9:39]

যদি বের না হওতবে আল্লাহ তোমাদের মর্মন্তুদ আযাব দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন। তোমরা তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারবে নাআর আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান

[9:40]

যদি তোমরা তাকে (রসূলকে) সাহায্য না করতবে মনে রেখোআল্লাহ তার সাহায্য করেছিলেনযখন তাকে কাফেররা বহিষ্কার করেছিলতিনি ছিলেন দুজনের একজনযখন তারা গুহার মধ্যে ছিলেন। তখন তিনি আপন সঙ্গীকে বললেন বিষন্ন হয়ো নাআল্লাহ আমাদের সাথে আছেনঅতঃপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় সান্তনা নাযিল করলেন এবং তাঁর সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেনযা তোমরা দেখনি। বস্তুতঃ আল্লাহ কাফেরদের মাথা নীচু করে দিলেন আর আল্লাহর কথাই সদা সমুন্নত এবং আল্লাহ পরাক্রমশালীপ্রজ্ঞাময়

[9:41]

তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জেহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়েএটিতোমাদের জন্যে অতি উত্তমযদি তোমরা বুঝতে পার

[9:42]

যদি আশু লাভের সম্ভাবনা থাকতো এবং যাত্রাপথও সংক্ষিপ্ত হতোতবে তারা অবশ্যই আপনার সহযাত্রী হতোকিন্তু তাদের নিকট যাত্রাপথ সুদীর্ঘ মনে হল। আর তারা এমনই শপথ করে বলবেআমাদের সাধ্য থাকলে অবশ্যই তোমাদের সাথে বের হতামএরা নিজেরাই নিজেদের বিনষ্ট করছেআর আল্লাহ জানেন যেএরা মিথ্যাবাদী

[9:43]

আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুনআপনি কেন তাদের অব্যাহতি দিলেনযে পর্যন্ত না আপনার কাছে পরিষ্কার হয়ে যেতসত্যবাদীরা এবং জেনে নিতেন মিথ্যাবাদীদের

[9:44]

আল্লাহ ও রোজ কেয়ামতের প্রতি যাদের ঈমান রয়েছে তারা মাল ও জান দ্বারা জেহাদ করা থেকে আপনার কাছে অব্যাহতি কামনা করবে নাআর আল্লাহ সাবধানীদের ভাল জানেন

[9:45]

নিঃসন্দেহে তারাই আপনার কাছে অব্যাহতি চায়যারা আল্লাহ ও রোজ কেয়ামতে ঈমান রাখে না এবং তাদের অন্তরসন্দেহগ্রস্ত হয়ে পড়েছেসুতরাং সন্দেহের আবর্তে তারা ঘুরপাক খেয়ে চলেছে

[9:46]

আর যদি তারা বের হবার সংকল্প নিততবে অবশ্যই কিছু সরঞ্জাম প্রস্তুত করতো। কিন্তু তাদের উত্থান আল্লাহর পছন্দনয়তাই তাদের নিবৃত রাখলেন এবং আদেশ হল বসা লোকদের সাথে তোমরা বসে থাক

[9:47]

যদি তোমাদের সাথে তারা বের হততবে তোমাদের অনিষ্ট ছাড়া আর কিছু বৃদ্ধি করতো নাআর অশ্ব ছুটাতো তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশে। আর তোমাদের মাঝে রয়েছে তাদের গুপ্তচর। বস্তুতঃ আল্লাহ যালিমদের ভালভাবেই জানেন

[9:48]

তারা পূর্বে থেকেই বিভেদ সৃষ্টির সুযোগ সন্ধানে ছিল এবং আপনার কার্যসমূহ উল্টা-পাল্টা করে দিচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সত্য প্রতিশ্রুতি এসে গেল এবং জয়ী হল আল্লাহর হুকুমযে অবস্থায় তারা মন্দবোধ করল

[9:49]

আর তাদের কেউ বলেআমাকে অব্যাহতি দিন এবং পথভ্রষ্ট করবেন না। শোনে রাখতারা তো পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট এবং নিঃসন্দেহে জাহান্নাম এই কাফেরদের পরিবেষ্টন করে রয়েছে

[9:50]

আপনার কোন কল্যাণ হলে তারা মন্দবোধ করে এবং কোন বিপদ উপস্থিত হলে তারা বলেআমরা পূর্ব থেকেই নিজেদের কাজ সামলে নিয়েছি এবং ফিরে যায় উল্লসিত মনে

[9:51]

আপনি বলুনআমাদের কাছে কিছুই পৌঁছবে নাকিন্তু যা আল্লাহ আমাদের জন্য রেখেছেনতিনি আমাদের কার্যনির্বাহক আল্লাহর উপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত

[9:52]

আপনি বলুনতোমরা তো তোমাদের জন্যে দুটি কল্যাণের একটি প্রত্যাশা করআর আমরা প্রত্যাশায় আছি তোমাদের জন্যে যেআল্লাহ তোমাদের আযাব দান করুন নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হস্তে। সুতরাং তোমরা অপেক্ষা করআমরাও তোমাদের সাথে অপেক্ষমাণ

[9:53]

আপনি বলুনতোমরা ইচ্ছায় অর্থ ব্যয় কর বা অনিচ্ছায়তোমাদের থেকে তা কখনো কবুল হবে নাতোমরা নাফরমানের দল

[9:54]

তাদের অর্থ ব্যয় কবুল না হওয়ার এছাড়া আর কোন কারণ নেই যেতারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি অবিশ্বাসীতারা নামাযে আসে অলসতার সাথে ব্যয় করে সঙ্কুচিত মনে

[9:55]

সুতরাং তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত না করে। আল্লাহর ইচ্ছা হল এগুলো দ্বারা দুনিয়ার জীবনে তাদের আযাবে নিপতিত রাখা এবং প্রাণবিয়োগ হওয়া কুফরী অবস্থায়

[9:56]

তারা আল্লাহর নামে হলফ করে বলে যেতারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্তঅথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়অবশ্য তারাতোমাদের ভয় করে

[9:57]

তারা কোন আশ্রয়স্থলকোন গুহা বা মাথা গোঁজার ঠাই পেলে সেদিকে পলায়ন করবে দ্রুতগতিতে

[9:58]

তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা সদকা বন্টনে আপনাকে দোষারূপ করে। এর থেকে কিছু পেলে সন্তুষ্ট হয় এবং না পেলে বিক্ষুব্ধ হয়

[9:59]

কতই না ভাল হতযদি তারা সন্তুষ্ট হত আল্লাহ ও তার রসূলের উপর এবং বলতআল্লাহই আমাদের জন্যে যথেষ্টআল্লাহ আমাদের দেবেন নিজ করুণায় এবং তাঁর রসূলওআমরা শুধু আল্লাহকেই কামনা করি

[9:60]

যাকাত হল কেবল ফকিরমিসকীনযাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তিরজন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্যআল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যেএই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞপ্রজ্ঞাময়

[9:61]

আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ নবীকে ক্লেশ দেয়এবং বলেএ লোকটি তো কানসর্বস্ব। আপনি বলে দিনকান হলেও তোমাদেরই মঙ্গলের জন্যআল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখে এবং বিশ্বাস রাখে মুসলমানদের কথার উপর বস্তুতঃ তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তাদের জন্য তিনি রহমতবিশেষ। আর যারা আল্লাহর রসূলের প্রতি কুৎসা রটনা করতাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব

[9:62]

তোমাদের সামনে আল্লাহর কসম খায় যাতে তোমাদের রাযী করতে পারে। অবশ্য তারা যদি ঈমানদার হয়ে থাকেতবেআল্লাহকে এবং তাঁর রসূলকে রাযী করা অত্যন্ত জরুরী

[9:63]

তারা কি একথা জেনে নেয়নি যেআল্লাহর সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে যে মোকাবেলা করে তার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে দোযখতাতে সব সময় থাকবে। এটিই হল মহা-অপমান

[9:64]

মুনাফেকরা এ ব্যাপারে ভয় করে যেমুসলমানদের উপর না এমন কোন সূরা নাযিল হয়যাতে তাদের অন্তরের গোপন বিষয় অবহিত করা হবে। সুতরাং আপনি বলে দিনঠাট্টা-বিদ্রপ করতে থাকআল্লাহ তা অবশ্যই প্রকাশ করবেন যার ব্যাপারে তোমরা ভয় করছ

[9:65]

আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতবে তারা বলবেআমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুনতোমরা কি আল্লাহর সাথেতাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে?

[9:66]

ছলনা কর নাতোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইওতবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণতারা ছিল গোনাহগার

[9:67]

মুনাফেক নর-নারী সবারই গতিবিধি একরকমশিখায় মন্দ কথাভাল কথা থেকে বারণ করে এবং নিজ মুঠো বন্ধ রাখেআল্লাহকে ভুলে গেছে তারকাজেই তিনিও তাদের ভূলে গেছেন নিঃসন্দেহে মুনাফেকরাই নাফরমান

[9:68]

ওয়াদা করেছেন আল্লাহমুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারীদের এবং কাফেরদের জন্যে দোযখের আগুনের-তাতে পড়ে থাকবে সর্বদা। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আযাব

[9:69]

যেমন করে তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তোমাদের চেয়ে বেশী ছিল শক্তিতে এবং ধন-সম্পদের ও সন্তান-সন্ততিরঅধিকারীও ছিল বেশীঅতঃপর উপকৃত হয়েছে নিজেদের ভাগের দ্বারা আবার তোমরা ফায়দা উঠিয়েছ তোমাদের ভাগের দ্বারা-যেমন করে তোমাদের পূর্ববর্তীরা ফায়দা উঠিয়েছিল নিজেদের ভাগের দ্বারা। আর তোমরাও বলছ তাদেরই চলন অনুযায়ী। তারা ছিল সে লোকযাদের আমলসমূহ নিঃশেষিত হয়ে গেছে দুনিয়া ও আখেরাতে। আর তারাই হয়েছে ক্ষতির সম্মুখীন

[9:70]

তাদের সংবাদ কি এদের কানে এসে পৌঁছায়নিযারা ছিল তাদের পূর্বেনূহের আদের ও সামুদের সম্প্রদায় এবংইব্রাহীমের সম্প্রদায়ের এবং মাদইয়ানবাসীদেরএবং সেসব জনপদের যেগুলোকে উল্টে দেয়া হয়েছিলতাদের কাছে এসেছিলেন তাদের নবী পরিষ্কার নির্দেশ নিয়ে। বস্তুতঃ আল্লাহ তো এমন ছিলেন না যেতাদের উপর জুলুম করতেনকিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করতো

[9:71]

আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে নামায প্রতিষ্ঠা করেযাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তাআলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীলসুকৌশলী

[9:72]

আল্লাহ ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনে কানন-কুঞ্জেরযার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণ। তারা সে গুলোরই মাঝে থাকবে। আর এসব কানন-কুঞ্জে থাকবে পরিচ্ছন্ন থাকার ঘর। বস্তুতঃ এ সমুদয়ের মাঝে সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর সন্তুষ্টি। এটিই হল মহান কৃতকার্যতা

[9:73]

হে নবীকাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা

[9:74]

তারা কসম খায় যেআমরা বলিনিঅথচ নিঃসন্দেহে তারা বলেছে কুফরী বাক্য এবং মুসলমান হবার পর অস্বীকৃতিজ্ঞাপনকারী হয়েছে। আর তারা কামনা করেছিল এমন বস্তুর যা তারা প্রাপ্ত হয়নি। আর এসব তারই পরিণতি ছিল যেআল্লাহ ও তাঁর রসূল তাদেরকে সম্পদশালী করে দিয়েছিলেন নিজের অনুগ্রহের মাধ্যমে। বস্তুতঃ এরা যদি তওবা করে নেয়তবে তাদের জন্য মঙ্গল। আর যদি তা না মানেতবে তাদের কে আযাব দেবেন আল্লাহ তাআলাবেদনাদায়ক আযাব দুনিয়া ও আখেরাতে। অতএববিশ্বচরাচরে তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী-সমর্থক নেই

[9:75]

তাদের মধ্যে কেউ কেউ রয়েছে যারা আল্লাহ তাআলার সাথে ওয়াদা করেছিল যেতিনি যদি আমাদের প্রতি অনুগ্রহ দানকরেনতবে অবশ্যই আমরা ব্যয় করব এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকব

[9:76]

অতঃপর যখন তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহের মাধ্যমে দান করা হয়তখন তাতে কার্পণ্য করেছে এবং কৃত ওয়াদা থেকে ফিরে গেছে তা ভেঙ্গে দিয়ে

[9:77]

তারপর এরই পরিণতিতে তাদের অন্তরে কপটতা স্থান করে নিয়েছে সেদিন পর্যন্তযেদিন তার তাঁর সাথে গিয়ে মিলবে। তা এজন্য যেতারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা লংঘন করেছিল এবং এজন্যে যেতারা মিথ্যা কথা বলতো

[9:78]

তারা কি জেনে নেয়নি যেআল্লাহ তাদের রহস্য ও শলা-পরামর্শ সম্পর্কে অবগত এবং আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেনসমস্ত গোপন বিষয় ?

[9:79]

সে সমস্ত লোক যারা ৎর্সনা-বিদ্রূপ করে সেসব মুসলমানদের প্রতি যারা মন খুলে দান-খয়রাত করে এবংতাদের প্রতি যাদের কিছুই নেই শুধুমাত্র নিজের পরিশ্রমলব্দ বস্তু ছাড়া। অতঃপর তাদের প্রতি ঠাট্টা করে। আল্লাহ তাদের প্রতি ঠাট্টা করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব

[9:80]

তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর আর না কর। যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমাপ্রার্থনা করতথাপি কখনোই তাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তা এজন্য যেতারা আল্লাহকে এবং তাঁর রসূলকে অস্বীকার করেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ না-ফারমানদেরকে পথ দেখান না

[9:81]

পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছেআর জান ওমালের দ্বারা আল্লাহর রাহে জেহাদ করতে অপছন্দ করেছে এবং বলেছেএই গরমের মধ্যে অভিযানে বের হয়ো না। বলে দাওউত্তাপে জাহান্নামের আগুন প্রচন্ডতম। যদি তাদেরবিবেচনা শক্তি থাকত

[9:82]

অতএবতারা সামান্য হেসে নিক এবং তারা তাদের কৃতকর্মের বদলাতে অনেক বেশী কাঁদবে

[9:83]

বস্তুতঃ আল্লাহ যদি তোমাকে তাদের মধ্য থেকে কোন শ্রেণীবিশেষের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যান এবং অতঃপর তারা তোমার কাছে অভিযানে বেরোবার অনুমতি কামনা করেতবে তুমি বলো যেতোমরা কখনো আমার সাথে বেরোবে না এবং আমার পক্ষ হয়ে কোন শত্রুর সাথে যুদ্ধ করবে নাতোমরা তো প্রথমবারে বসে থাকা পছন্দ করেছকাজেই পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথেই বসে থাক

[9:84]

আর তাদের মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনও নামায পড়বেন না এবং তার কবরে দাঁড়াবেন না। তারা তোআল্লাহর প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং রসূলের প্রতিও। বস্তুতঃ তারা না ফরমান অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে

[9:85]

আর বিস্মিত হয়ো না তাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতির দরুন। আল্লাহ তো এই চান যেএ সবের কারণে তাদেরকেআযাবের ভেতরে রাখবেন দুনিয়ায় এবং তাদের প্রাণ নির্গত হওয়া পর্যন্ত যেন তারা কাফেরই থাকে

[9:86]

আর যখন নাযিল হয় কোন সূরা যেতোমরা ঈমান আন আল্লাহর উপরতাঁর রসূলের সাথে একাত্ন হয়েতখন বিদায় কামনা করে তাদের সামর্থ?বান লোকেরা এবং বলে আমাদের অব্যাহতি দিনযাতে আমরা (নিস্ক্রিয়ভাবে) বসে থাকা লোকদের সাথে থেকে যেতে পারি

[9:87]

তারা পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথে থেকে যেতে পেরে আনন্দিত হয়েছে এবং মোহর এঁটে দেয়া হয়েছে তাদেরঅন্তরসমূহের উপর। বস্তুতঃ তারা বোঝে না

[9:88]

কিন্তু রসূল এবং সেসব লোক যারা ঈমান এনেছেতাঁর সাথে তারা যুদ্ধ করেছে নিজেদের জান ও মালের দ্বারা। তাদেরইজন্য নির্ধারিত রয়েছে কল্যাণসমূহ এবং তারাই মুক্তির লক্ষ্যে উপনীত হয়েছে

[9:89]

আল্লাহ তাদের জন্য তৈরী করে রেখেছেন কানন-কুঞ্জযার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে প্রস্রবণ। তারা তাতে বাস করবেঅনন্তকাল। এটাই হল বিরাট কৃতকার্যতা

[9:90]

আর ছলনাকারী বেদুঈন লোকেরা এলোযাতে তাদের অব্যাহতি লাভ হতে পারে এবং নিবৃত্ত থাকতে পারে তাদেরই যারা আল্লাহ ও রসূলের সাথে মিথ্যা বলে ছিল। এবার তাদের উপর শীগ্রই আসবে বেদনাদায়ক আযাব যারা কাফের

[9:91]

দূর্বলরুগ্নব্যয়ভার বহনে অসমর্থ লোকদের জন্য কোন অপরাধ নেইযখন তারা মনের দিক থেকে পবিত্র হবে আল্লাহ ও রসূলের সাথে। নেককারদের উপর অভিযোগের কোন পথ নেই। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী দয়ালু

[9:92]

আর না আছে তাদের উপর যারা এসেছে তোমার নিকট যেন তুমি তাদের বাহন দান কর এবং তুমি বলেছআমার কাছে এমন কোন বস্তু নেই যেতার উপর তোমাদের সওয়ার করাব তখন তারা ফিরে গেছে অথচ তখন তাদের চোখ দিয়ে অশ্রু বইতেছিল এ দুঃখে যেতারা এমন কোন বস্তু পাচ্ছে না যা ব্যয় করবে

[9:93]

অভিযোগের পথ তো তাদের ব্যাপারে রয়েছেযারা তোমার নিকট অব্যাহতি কামনা করে অথচ তারা সম্পদশালী। যারা পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথে থাকতে পেরে আনন্দিত হয়েছে। আর আল্লাহ মোহর এঁটে দিয়েছেন তাদের অন্তরসমূহে। বস্তুতঃ তারা জানতেও পারেনি

[9:94]

তুমি যখন তাদের কাছে ফিরে আসবেতখন তারা তোমাদের নিকট ছল-ছুতা নিয়ে উপস্থিত হবেতুমি বলোছল কারো নাআমি কখনো তোমাদের কথা শুনব নাআমাকে আল্লাহ তাআলা তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করে দিয়েছেন। আর এখন তোমাদের কর্ম আল্লাহই দেখবেন এবং তাঁর রসূল। তারপর তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে সেই গোপন ও আগোপন বিষয়ে অবগত সত্তার নিকট। তিনিই তোমাদের বাতলে দেবেন যা তোমরা করছিলে

[9:95]

এখন তারা তোমার সামনে আল্লাহর কসম খাবেযখন তুমি তাদের কাছে ফিরে যাবেযেন তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও। সুতরাং তুমি তাদের ক্ষমা কর-নিঃসন্দেহে এরা অপবিত্র এবং তাদের কৃতকর্মের বদলা হিসাবে তাদের ঠিকানা হলো দোযখ

[9:96]

তারা তোমার সামনে কসম খাবে যাতে তুমি তাদের প্রতি রাযী হয়ে যাও। অতএবতুমি যদি রাযী হয়ে যাও তাদের প্রতি তবু আল্লাহ তাআলা রাযী হবেন নাএ নাফরমান লোকদের প্রতি

[9:97]

বেদুইনরা কুফর ও মোনাফেকীতে অত্যন্ত কঠোর হয়ে থাকে এবং এরা সেসব নীতি-কানুন না শেখারই যোগ্য যা আল্লাহতাআলা তাঁর রসূলের উপর নাযিল করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ সব কিছুই জানেন এবং তিনি অত্যন্ত কুশলী

[9:98]

আবার কোন কোন বেদুইন এমন ও রয়েছে যারা নিজেদের ব্যয় করাকে জরিমানা। বলে গন্য করে এবং তোমার উপর কোন দুর্দিন আসে কিনা সে অপেক্ষায় থাকে। তাদেরই উপর দুর্দিন আসুক। আর আল্লাহ হচ্ছেন শ্রবণকারীপরিজ্ঞাত

[9:99]

আর কোন কোন বেদুইন হল তারাযারা ঈমান আনে আল্লাহর উপরকেয়ামত দিনের উপর এবং নিজেদের ব্যয়কে আল্লাহর নৈকট্য এবং রসূলের দোয়া লাভের উপায় বলে গণ্য করে। জেনো! তাই হল তাদের ক্ষেত্রে নৈকট্য। আল্লাহ তাদেরকে নিজের রহমতের অন্তর্ভূক্ত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীলকরুনাময়

[9:100]

আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনছারদের মাঝে পুরাতনএবং যারা তাদের অনুসরণ করেছেআল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কানন-কুঞ্জযার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত প্রস্রবণসমূহ। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। এটাই হল মহান কৃতকার্যতা

[9:101]

আর কিছু কিছু তোমার আশ-পাশের মুনাফেক এবং কিছু লোক মদীনাবাসী কঠোর মুনাফেকীতে অনঢ়। তুমি তাদের জান নাআমি তাদের জানি। আমি তাদেরকে আযাব দান করব দুবারতারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে মহান আযাবের দিকে

[9:102]

আর কোন কোন লোক রয়েছে যারা নিজেদের পাপ স্বীকার করেছেতারা মিশ্রিত করেছে একটি নেককাজ ও অন্য একটি বদকাজ শীঘ্রই আল্লাহ হয়ত তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। নিঃঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল করুণাময়

[9:103]

তাদের মালামাল থেকে যাকাত গ্রহণ কর যাতে তুমি সেগুলোকে পবিত্র করতে এবং সেগুলোকে বরকতময় করতে পার এর মাধ্যমে। আর তুমি তাদের জন্য দোয়া করনিঃসন্দেহে তোমার দোয়া তাদের জন্য সান্ত্বনা স্বরূপ। বস্তুতঃ আল্লাহ সবকিছুই শোনেনজানেন

[9:104]

তারা কি একথা জানতে পারেনি যেআল্লাহ নিজেই স্বীয় বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং যাকাত গ্রহণ করেনবস্তুতঃ আল্লাহই তওবা কবুলকারীকরুণাময়

[9:105]

আর তুমি বলে দাওতোমরা আমল করে যাওতার পরবর্তীতে আল্লাহ দেখবেন তোমাদের কাজ এবং দেখবেন রসূল ও মুসলমানগণ তাছাড়া তোমরা শীগ্রই প্রত্যাবর্তিত হবে তাঁর সান্নিধ্যে যিনি গোপন ও প্রকাশ্য বিষয়ে অবগত। তারপর তিনি জানিয়ে দেবেন তোমাদেরকে যা করতে

[9:106]

আবার অনেক লোক রয়েছে যাদের কাজকর্ম আল্লাহর নির্দেশের উপর স্থগিত রয়েছেতিনি হয় তাদের আযাব দেবেন না হয় তাদের ক্ষমা করে দেবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ সব কিছুই জ্ঞাতবিজ্ঞতাসম্পন্ন

[9:107]

আর যারা নির্মাণ করেছে মসজিদ জিদের বশে এবং কুফরীর তাড়নায় মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃস্টির উদ্দেশ্যে এবং ঐলোকের জন্য ঘাটি স্বরূপ যে পূর্ব থেকে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করে আসছেআর তারা অবশ্যই শপথ করবে যেআমরা কেবল কল্যাণই চেয়েছি। পক্ষান্তরে আল্লাহ সাক্ষী যেতারা সবাই মিথ্যুক

[9:108]

তুমি কখনো সেখানে দাড়াবে নাতবে যে মসজিদের ভিত্তি রাখা হয়েছে তাকওয়ার উপর প্রথম দিন থেকেসেটিই তোমার দাঁড়াবার যোগ্য স্থান। সেখানে রয়েছে এমন লোকযারা পবিত্রতাকে ভালবাসে। আর আল্লাহ পবিত্র লোকদের ভালবাসেন

[9:109]

যে ব্যাক্তি স্বীয় গৃহের ভিত্তি রেখেছে কোন গর্তের কিনারায় যা ধ্বসে পড়ার নিকটবর্তী এবং অতঃপর তা ওকে নিয়ে দোযখের আগুনে পতিত হয়। আর আল্লাহ জালেমদের পথ দেখান না

[9:110]

তাদের নির্মিত গৃহটি তাদের অন্তরে সদা সন্দেহের উদ্রেক করে যাবে যে পর্যন্ত না তাদের অন্তরগুলো চৌচির হয়ে যায়। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়

[9:111]

আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যেতাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাতইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিকসুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপরযা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য

[9:112]

তারা তওবাকারীএবাদতকারীশোকরগোযার, (দুনিয়ার সাথে) সম্পর্কচ্ছেদকারীরুকু ও সিজদা আদায়কারীৎকাজের আদেশ দানকারী ও মন্দ কাজ থেকে নিবৃতকারী এবং আল্লাহর দেওয়া সীমাসমূহের হেফাযতকারী। বস্তুতঃ সুসংবাদ দাও ঈমানদারদেরকে

[9:113]

নবী ও মুমিনের উচিত নয় মুশরেকদের মাগফেরাত কামনা করেযদিও তারা আত্নীয় হোক একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা দোযখী

[9:114]

আর ইব্রাহীম কর্তৃক স্বীয় পিতার মাগফেরাত কামনা ছিল কেবল সেই প্রতিশ্রুতির কারণেযা তিনি তার সাথেকরেছিলেন। অতঃপর যখন তাঁর কাছে একথা প্রকাশ পেল যেসে আল্লাহর শত্রু তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিলেন। নিঃসন্দেহে ইব্রাহীম ছিলেন বড় কোমল হৃদয়সহনশীল

[9:115]

আর আল্লাহ কোন জাতিকে হেদায়েত করার পর পথভ্রষ্ট করেন না যতক্ষণ না তাদের জন্য পরিষ্কারভাবে বলে দেন সেসব বিষয় যা থেকে তাদের বেঁচে থাকা দরকার। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব বিষয়ে ওয়াকেফহাল

[9:116]

নিশ্চয় আল্লাহরই জন্য আসমানসমূহ ও যমীনের সাম্রাজ্য। তিনিই জিন্দা করেন ও মৃত্যু ঘটানআর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের জন্য কোন সহায়ও নেইকোন সাহায্যকারীও নেই

[9:117]

আল্লাহ দয়াশীল নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতিযারা কঠিন মহূর্তে নবীর সঙ্গে ছিলযখন তাদের এক দলের অন্তর ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অতঃপর তিনি দয়াপরবশ হন তাদের প্রতি নিঃসন্দেহে তিনি তাদের প্রতি দয়াশীল ও করুনাময়

[9:118]

এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পেছনে রাখা হয়েছিলযখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্বেও তাদের জন্য সঙ্কুচিত হয়ে গেলএবং তাদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠলোআর তারা বুঝতে পারলো যেআল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশ্রয়স্থল নেই-অতঃপর তিনি সদয় হলেন তাদের প্রতি যাতে তারা ফিরে আসে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দয়াময় করুণাশীল

[9:119]

হে ঈমানদারগণআল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক

[9:120]

মদীনাবাসী ও পাশ্ববর্তী পল্লীবাসীদের উচিত নয় রসূলুল্লাহর সঙ্গ ত্যাগ করে পেছনে থেকে যাওয়া এবং রসূলের প্রাণ থেকে নিজেদের প্রাণকে অধিক প্রিয় মনে করা। এটি এজন্য যেআল্লাহর পথে যে তৃষ্ণাক্লান্তি ও ক্ষুধা তাদের স্পর্শ করে এবং তাদের এমন পদক্ষেপ যা কাফেরদের মনে ক্রোধের কারণ হয় আর শত্রুদের পক্ষ থেকে তারা যা কিছু প্রাপ্ত হয়-তারপ্রত্যেকটির পরিবর্তে তাদের জন্য লিখিত হয়ে নেক আমল। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ৎকর্মশীল লোকদের হক নষ্ট করেন না

[9:121]

আর তারা অল্প-বিস্তর যা কিছু ব্যয় করেযত প্রান্তর তারা অতিক্রম করেতা সবই তাদের নামে লেখা হয়যেন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মসমূহের উত্তম বিনিময় প্রদান করেন

[9:122]

আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো নাযাতেদ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্বজাতিকেযখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবেযেন তারা বাঁচতে পারে

[9:123]

হে ঈমানদারগণতোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভবকরুক আর জেনে রাখআল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন

[9:124]

আর যখন কোন সূরা অবতীর্ণ হয়তখন তাদের কেউ কেউ বলেএ সূরা তোমাদের মধ্যেকার ঈমান কতটা বৃদ্ধি করলোঅতএব যারা ঈমানদারএ সূরা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারা আনন্দিত হয়েছে

[9:125]

বস্তুতঃ যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে এটি তাদের কলুষের সাথে আরো কলুষ বৃদ্ধি করেছে এবং তারা কাফের অবস্থায়ই মৃত্যু বরণ করলো

[9:126]

তারা কি লক্ষ্য করে নাপ্রতি বছর তারা দুএকবার বিপর্যস্ত হচ্ছেঅথচতারা এরপরও তওবা করে না কিংবা উপদেশগ্রহণ করে না

[9:127]

আর যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয়তখন তারা একে অন্যের দিকে তাকায় যেকোন মুসলমান তোমাদের দেখছে কি-না-অতঃপর সরে পড়ে। আল্লাহ ওদের অন্তরকে সত্য বিমুখ করে দিয়েছেন! নিশ্চয়ই তারা নির্বোধ সম্প্রদায়

[9:128]

তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামীমুমিনদের প্রতি স্নেহশীলদয়াময়

[9:129]

এ সত্ত্বেও যদি তারা বিমুখ হয়ে থাকেতবে বলে দাওআল্লাহই আমার জন্য যথেষ্টতিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি