Quran translations in many languages

Bengali Quran

Hûd

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[11:1]

আলিফলা-মরাএটি এমন এক কিতাবযার আয়াত সমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত অতঃপর সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানীসর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ হতে

[11:2]

যেন তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো বন্দেগী না কর। নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি তাঁরই পক্ষ হতে সতর্ককারী ওসুসংবাদ দাতা

[11:3]

আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তা সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর। অনন্তর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর। তাহলে তিনিতোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করবেন এবং অধিক আমলকারীকে বেশী করে দেবেন আর যদি তোমরা বিমুখ হতে থাকতবে আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের আশঙ্কা করছি

[11:4]

আল্লাহর সান্নিধ্যেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান

[11:5]

জেনে রাখনিশ্চয়ই তারা নিজেদের বক্ষদেশ ঘুরিয়ে দেয় যেন আল্লাহর নিকট হতে লুকাতে পারে। শুনতারা তখন কাপড়ে নিজেদেরকে আচ্ছাদিত করেতিনি তখনও জানেন যা কিছু তারা চুপিসারে বলে আর প্রকাশ্যভাবে বলে। নিশ্চয় তিনি জানেন যা কিছু অন্তর সমূহে নিহিত রয়েছে

[11:6]

আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেইতবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে

[11:7]

তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেনতাঁর আরশ ছিল পানির উপরেতিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যেতোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে, “নিশ্চয় তোমাদেরকে মৃত্যুর পরে জীবিত ওঠানো হবেতখন কাফেরেরা অবশ্য বলে এটা তো স্পষ্ট যাদু!“;

[11:8]

আর যদি আমি এক নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত তাদের আযাব স্থগিত রাখিতাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে কোন জিনিসেআযাব ঠেকিয়ে রাখছেশুনে রাখযেদিন তাদের উপর আযাব এসে পড়বেসেদিন কিন্তু তা ফিরে যাওয়ার নয়তারা যে ব্যাপারে উপহাস করত তাই তাদেরকে ঘিরে ফেলবে

[11:9]

আর অবশ্যই যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আস্বাদ গ্রহণ করতে দেইঅতঃপর তা তার থেকে ছিনিয়ে নেইতাহলে সে হতাশ ও কৃতঘ্ন হয়

[11:10]

আর যদি তার উপর আপতিত দুঃখ কষ্টের পরে তাকে সুখভোগ করতে দেইতবে সে বলতে থাকে যেআমার অমঙ্গল দূর হয়ে গেছেআর সে আনন্দে আত্নহারা হয়অহঙ্কারে উদ্দত হয়ে পড়ে

[11:11]

তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে

[11:12]

আর সম্ভবতঃ ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট পাঠানো হয়তার কিছু অংশ বর্জন করবেএবং এতে মন ছোট করে বসবেতাদের এ কথায় যেতাঁর উপর কোন ধন-ভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নিঅথবা তাঁর সাথে কোন ফেরেশতা আসেনি কেনতুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্রআর সব কিছুরই দায়িত্বভার তো আল্লাহই নিয়েছেন

[11:13]

তারা কি বলেকোরআন তুমি তৈরী করেছতুমি বলতবে তোমরাও অনুরূপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে নাওযদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে

[11:14]

অতঃপর তারা যদি তোমাদের কথা পুরণ করতে অপারগ হয়তবে জেনে রাখএটি আল্লাহর এলম দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছেআরো একীন করে নাও যেআল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। অতএবএখন কি তোমরা আত্নসমর্পন করবে?

[11:15]

যে ব্যক্তি পার্থিবজীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করেহয় আমি তাদের দুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হয় না

[11:16]

এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ করেছেআর যা কিছু উপার্জন করেছিলসবই বিনষ্ট হল

[11:17]

আচ্ছা বল তোযে ব্যক্তি তার প্রভুর সুস্পষ্ট পথে রয়েছেআর সাথে সাথে আল্লাহর তরফ থেকে একটি সাক্ষীও বর্তমান রয়েছে এবং তার পূর্ববর্তী মূসা (আঃ) এর কিতাবও সাক্ষী যা ছিল পথনির্দেশক ও রহমত স্বরূপ, (তিনি কি অন্যান্যের সমান) অতএব তাঁরা কোরআনের প্রতি ঈমান আনেন। আর ঐসব দলগুলি যে কেউ তা অস্বীকার করেদোযখই হবে তার ঠিকানা। অতএবআপনি তাতে কোন সন্দেহে থাকবেন না। নিঃসন্দেহে তা আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে ধ্রুব সত্যতথাপি অনেকেই তা বিশ্বাস করে না

[11:18]

আর তাদের চেয়ে বড় যালেম কে হতে পারেযারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। এসব লোককে তাদের পালনকর্তারসাক্ষাত সম্মূখীন করা হবে আর সাক্ষিগণ বলতে থাকবেএরাই ঐসব লোকযারা তাদের পালনকর্তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। শুনে রাখযালেমদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাতরয়েছে

[11:19]

যারা আল্লাহর পথে বাধা দেয়আর তাতে বক্রতা খুজে বেড়ায়এরাই আখরাতকে অস্বীকার করে

[11:20]

তারা পৃথিবীতেও আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারীও নেইতাদের জন্যদ্বিগুণ শাস্তি রয়েছেতারা শুনতে পারত না এবং দেখতেও পেত না

[11:21]

এরা সে লোকযারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেআর এরা যা কিছু মিথ্যা মাবুদ সাব্যস্ত করেছিলতা সবই তাদের থেকে হারিয়ে গেছে

[11:22]

আখেরাতে এরাই হবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ কোন সন্দেহ নেই

[11:23]

নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও ৎকাজ করেছে এবং স্বীয় পালনকর্তার সমীপে বিনতি প্রকাশ করেছে তারাই বেহেশতবাসীসেখানেই তারা চিরকাল থাকবে

[11:24]

উভয় পক্ষের দৃষ্টান্ত হচ্ছে যেমন অন্ধ ও বধির এবং যে দেখতে পায় ও শুনতে পায় উভয়ের অবস্থা কি এক সমানতবুও তোমরা কি ভেবে দেখ না?

[11:25]

আর অবশ্যই আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর জাতির প্রতি প্রেরণ করেছি, (তিনি বললেন) নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য প্রকাশ্যসতর্ককারী

[11:26]

তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারো এবাদত করবে না। নিশ্চয় আমি তোমাদের ব্যাপারে এক যন্ত্রণাদায়ক দিনের আযাবের ভয় করছি

[11:27]

তখন তাঁর কওমের কাফের প্রধানরা বলল আমরা তো আপনাকে আমাদের মত একজন মানুষ ব্যতীত আর কিছু মনে করি নাআর আমাদের মধ্যে যারা ইতর ও স্থুল-বুদ্ধিসম্পন্ন তারা ব্যতীত কাউকে তো আপনার আনুগত্য করতে দেখি না এবং আমাদের উপর আপনাদের কেন প্রাধান্য দেখি নাবরং আপনারা সবাই মিথ্যাবাদী বলে আমারা মনে করি

[11:28]

নূহ (আঃ) বললেন-হে আমার জাতি! দেখ তো আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে স্পষ্ট দলীলের উপর থাকআর তিনি যদি তাঁর পক্ষ হতে আমাকে রহমত দান করে থাকেনতারপরেও তা তোমাদের চোখে না পড়েতাহলে আমি কি উহা তোমাদের উপর তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই চাপিয়ে দিতে পারি ?

[11:29]

আর হে আমার জাতি! আমি তো এজন্য তোমাদের কাছে কোন অর্থ চাই নাআমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহর জিম্মায় রয়েছে। আমি কিন্তু ঈমানদারদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত লাভ করবে। বরঞ্চ তোমাদেরই আমি অজ্ঞ সম্প্রদায় দেখছি

[11:30]

আর হে আমার জাতি! আমি যদি তাদের তাড়িয়ে দেই তাহলে আমাকে আল্লাহ হতে রেহাই দেবে কেতোমরা কি চিন্তা করেদেখ না?

[11:31]

আর আমি তোমাদেরকে বলি না যেআমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যেআমি গায়বী খবরও জানিএকথাও বলি না যেআমি একজন ফেরেশতাআর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব

[11:32]

তারা বলল-হে নূহ! আমাদের সাথে আপনি তর্ক করেছেন এবং অনেক কলহ করেছেন। এখন আপনার সেই আযাব নিয়ে আসুনযে সম্পর্কে আপনি আমাদিগকে সতর্ক করেছেনযদি আপনি সত্যবাদী হয়ে থাকেন

[11:33]

তিনি বলেনউহা তোমাদের কাছে আল্লাহই আনবেনযদি তিনি ইচ্ছা করেন তখন তোমরা পালিয়ে তাঁকে অপারগ করতে পারবে না

[11:34]

আর আমি তোমাদের নসীহত করতে চাইলেও তা তোমাদের জন্য ফলপ্রসূ হবে নাযদি আল্লাহ তোমাদেরকে গোমরাহ করতে চানতিনিই তোমাদের পালনকর্তা এবং তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে

[11:35]

তারা কি বলেআপনি কোরআন রচনা করে এনেছেনআপনি বলে দিন আমি যদি রচনা করে এনে থাকিতবে সে অপরাধ আমারআর তোমরা যেসব অপরাধ কর তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই

[11:36]

আর নূহ (আঃ) এর প্রতি ওহী প্রেরণ করা হলো যেযারা ইতিমধ্যেই ঈমান এনেছে তাদের ছাড়া আপনার জাতির অন্য কেউ ঈমান আনবেনা এতএব তাদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হবেন না

[11:37]

আর আপনি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশ মোতাবেক একটি নৌকা তৈরী করুন এবং পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে আমাকে কোন কথা বলবেন না। অবশ্যই তারা ডুবে মরবে

[11:38]

তিনি নৌকা তৈরী করতে লাগলেনআর তাঁর কওমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা যখন পার্শ্ব দিয়ে যেততখন তাঁকে বিদ্রুপকরত। তিনি বললেনতোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাকতবে তোমরা যেমন উপহাস করছ আমরাও তদ্রুপ তোমাদের উপহাস করছি

[11:39]

অতঃপর অচিরেই জানতে পারবে-লাঞ্ছনাজনক আযাব কার উপর আসে এবং চিরস্থায়ী আযাব কার উপর অবতরণ করে

[11:40]

অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছাল এবং ভুপৃষ্ঠ উচ্ছসিত হয়ে উঠলআমি বললামঃ সর্বপ্রকার জোড়ার দুটি করে এবং যাদের উপরে পূর্বহে?ই হুকুম হয়ে গেছে তাদের বাদি দিয়েআপনার পরিজনবর্গ ও সকল ঈমানদারগণকে নৌকায় তুলে নিন। বলাবাহুল্য অতি অল্পসংখ্যক লোকই তাঁর সাথে ঈমান এনেছিল

[11:41]

আর তিনি বললেনতোমরা এতে আরোহন কর। আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি। আমার পালনকর্তা অতি ক্ষমাপরায়নমেহেরবান

[11:42]

আর নৌকাখানি তাদের বহন করে চলল পর্বত প্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝেআর নূহ (আঃ) তাঁর পুত্রকে ডাক দিলেন আর সে সরে রয়েছিলতিনি বললেনপ্রিয় বৎস! আমাদের সাথে আরোহন কর এবং কাফেরদের সাথে থেকো না

[11:43]

সে বললআমি অচিরেই কোন পাহাড়ে আশ্রয় নেবযা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে। নূহ (আঃ) বল্লেন আজকের দিনে আল্লাহর হুকুম থেকে কোন রক্ষাকারী নেই। একমাত্র তিনি যাকে দয়া করবেন। এমন সময় উভয়ের মাঝে তরঙ্গ আড়াল হয়ে দাঁড়ালফলে সে নিমজ্জিত হল

[11:44]

আর নির্দেশ দেয়া হল-হে পৃথিবী! তোমার পানি গিলে ফেলআর হে আকাশক্ষান্ত হও। আর পানি হ্রাস করা হল এবং কাজ শেষ হয়ে গেলআর জুদী পর্বতে নৌকা ভিড়ল এবং ঘোষনা করা হলদুরাত্না কাফেররা নিপাত যাক

[11:45]

আর নূহ (আঃ) তাঁর পালনকর্তাকে ডেকে বললেন-হে পরওয়ারদেগারআমার পুত্র তো আমার পরিজনদের অন্তর্ভুক্তআর আপনার ওয়াদাও নিঃসন্দেহে সত্য আর আপনিই সর্বাপেক্ষা বিজ্ঞ ফয়সালাকারী

[11:46]

আল্লাহ বলেনহে নূহ! নিশ্চয় সে আপনার পরিবারভুক্ত নয়। নিশ্চই সে দুরাচার! সুতরাং আমার কাছে এমন দরখাস্তকরবেন নাযার খবর আপনি জানেন না। আমি আপনাকে উপপদেশ দিচ্ছি যেআপনি অজ্ঞদের দলভুক্ত হবেন না

[11:47]

নূহ (আঃ) বলেন-হে আমার পালনকর্তা আমার যা জানা নেই এমন কোন দরখাস্ত করা হতে আমি আপনার কাছেই আশ্রয়প্রার্থনা করছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেনদয়া না করেনতাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব

[11:48]

হুকুম হল-হে নূহ (আঃ)! আমার পক্ষ হতে নিরাপত্তা এবং আপনার নিজের ও সঙ্গীয় সম্প্রদায়গুলির উপর বরকত সহকারে অবতরণ করুণ। আর অন্যান্য যেসব সম্প্রদায় রয়েছে আমি তাদের কেও উপকৃত হতে দেব অতঃপর তাদের উপর আমার দরুন আযাব আপতিত হবে

[11:49]

এটি গায়বের খবরআমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরন করছি। ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না। আপনি ধৈর্য্যধারণ করুন। যারা ভয় করে চলেতাদের পরিণাম ভালসন্দেহ নেই

[11:50]

আর আদ জাতির প্রতি আমি তাদের ভাই হুদকে প্রেরণ করেছিতিনি বলেন-হে আমার জাতিআল্লাহর বন্দেগী করতিনি ভিন্ন তোমাদের কোন মাবুদ নেইতোমরা সবাই মিথ্যা আরোপ করছ

[11:51]

হে আমার জাতি! আমি এজন্য তোমাদের কাছে কোন মজুরী চাই নাআমার মজুরী তাঁরই কাছে যিনি আমাকে পয়দা করেছেনতবু তোমরা কেন বোঝ না?

[11:52]

আর হে আমার কওম! তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করঅতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ করতিনিআসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেনতোমরা কিন্তু অপরাধীদের মত বিমুখ হয়ো না

[11:53]

তারা বলল-হে হুদতুমি আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে আস নাইআমরা তোমার কথায় আমাদের দেব-দেবীদের বর্জন করতে পারি না আর আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনয়নকারীও নই

[11:54]

বরং আমরাও তো বলি যেআমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভূত চাপিয়ে দিয়েছে। হুদ বললেন-আমি আল্লাহকে সাক্ষী করেছি আর তোমাও সাক্ষী থাক যেআমার কোন সম্পর্ক নাই তাঁদের সাথে যাদের কে তোমরা শরিক করছ;

[11:55]

তাকে ছাড়াতোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাওঅতঃপর আমাকে কোন অবকাশ দিও না

[11:56]

আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নাই যা তাঁর র্পূণ আয়ত্তাধীন নয়। আমার পালকর্তার সরল পথে সন্দেহ নেই

[11:57]

তথাপি যদি তোমরা মুখ ফেরাওতবে আমি তোমাদেরকে তা পৌছিয়েছি যা আমার কাছে তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছেআর আমার পালনকর্তা অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেনআর তোমরা তাঁর কিছুই বিগড়াতে পারবে নানিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগারই প্রতিটি বস্তুর হেফাজতকারী

[11:58]

আর আমার আদেশ যখন উপস্থিত হলতখন আমি নিজ রহমতে হুদ এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে পরিত্রাণ করি এবং তাদেরকে এক কঠিন শাস্তি থেকে রক্ষা করি

[11:59]

এ ছিল আদ জাতিযারা তাদের পালনকর্তার আয়াতকে অমান্য করেছেআর তদীয় রসূলগণের অবাধ্যতা করেছে এবং প্রত্যেক উদ্ধত বিরোধীদের আদেশ পালন করেছে

[11:60]

এ দুনিয়ায় তাদের পিছনে পিছনে লানত রয়েছে এবং কেয়ামতের দিনেওজেনে রাখআদ জাতি তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছেহুদের জ্ঞাতি আদ জাতির প্রতি অভিসম্পাত রয়েছে জেনে রাখ

[11:61]

আর সামুদ জাতি প্রতি তাদের ভাই সালেহ কে প্রেরণ করিতিনি বললেনহে আমার জাতি। আল্লাহর বন্দেগী করতিনি ছাড়া তোমাদের কোন উপাস্য নাই। তিনিই যমীন হতে তোমাদেরকে পয়দা করেছেনতন্মধ্যে তোমাদেরকে বসতি দান করেছেন। অতএবতাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর অতঃপর তাঁরই দিকে ফিরে চল আমার পালনকর্তা নিকটেই আছেনকবুল করে থাকেনসন্দেহ নেই

[11:62]

তারা বলল-হে সালেহইতিপূর্বে তোমার কাছে আমাদের বড় আশা ছিল। আমাদের বাপ-দাদা যা পূজা করত তুমি কি আমাদেরকে তার পূজা করতে নিষেধ করকিন্তু যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচ্ছ আমাদের তাতে এমন সন্দেহ রয়েছে যেমন মোটেই সায় দিচ্ছে না

[11:63]

সালেহ বললেন-হে আমার জাতি! তোমরা কি মনে করআমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে বুদ্ধি বিবেচনা লাভ করে থাকি আর তিনি যদি আমাকে নিজের তরফ হতে রহমত দান করে থাকেনঅতঃপর আমি যদি তাঁর অবাধ্য হই তবে তার থেকে কে আমায় রক্ষা করবেতোমরা তো আমার ক্ষতি ছাড়া কিছুই বৃদ্ধি করতে পরবে না

[11:64]

আর হে আমার জাতি! আল্লাহর এ উষ্ট্রীটি তোমাদের জন্য নিদর্শনঅতএব তাকে আল্লাহর যমীনে বিচরণ করে খেতে দাওএবং তাকে মন্দভাবে স্পর্শও করবে না। নতুবা অতি সত্বর তোমাদেরকে আযাব পাকড়াও করবে

[11:65]

তবু তারা উহার পা কেটে দিল তখন সালেহ বললেন-তোমরা নিজেদের গৃহে তিনটি দিন উপভোগ করে নাও। ইহা এমন ওয়াদা যা মিথ্যা হবে না

[11:66]

অতঃপর আমার আযাব যখন উপস্থিত হলতখন আমি সালেহকে ও তদীয় সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে উদ্ধার করিএবং সেদিনকার অপমান হতে রক্ষা করি। নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা তিনি সর্বশক্তিমান পরাক্রমশালী

[11:67]

আর ভয়ঙ্কর গর্জন পাপিষ্ঠদের পাকড়াও করলফলে ভোর হতে না হতেই তারা নিজ নিজ গৃহসমূহে উপুর হয়ে পড়ে রইল

[11:68]

যেন তাঁরা কোনদিনই সেখানে ছিল না। জেনে রাখনিশ্চয় সামুদ জাতি তাদের পালনকর্তার প্রতি অস্বীকার করেছিল। আরো শুনে রাখসামুদ জাতির জন্য অভিশাপ রয়েছে

[11:69]

আর অবশ্যই আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ইব্রাহীমেরে কাছে সুসংবাদ নিয়ে এসেছিল তারা বলল সালামতিনিও বললেন-সালাম। অতঃপর অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি একটি ভুনা করা বাছুর নিয়ে এলেন!

[11:70]

কিন্তু যখন দেখলেন যেআহার্য্যের দিকে তাদের হস্ত প্রসারিত হচ্ছে নাতখন তিনি সন্ধিগ্ধ হলেন এবং মনে মনে তাঁদের সম্পর্কে ভয় অনুভব করতে লাগলেন। তারা বলল-ভয় পাবেন না। আমরা লূতের কওমের প্রতি প্রেরিত হয়েছি

[11:71]

তাঁর স্ত্রীও নিকটেই দাড়িয়েছিলসে হেসে ফেলল। অতঃপর আমি তাকে ইসহাকের জন্মের সুখবর দিলাম এবং ইসহাকের পরের ইয়াকুবেরও

[11:72]

সে বলল-কি দুর্ভাগ্য আমার! আমি সন্তান প্রসব করবঅথচ আমি বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছি আর আমারস্বামীও বৃদ্ধএতো ভারী আশ্চর্য কথা

[11:73]

তারা বলল-তুমি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিস্ময়বোধ করছহে গৃহবাসীরাতোমাদের উপর আল্লাহর রহমত ও প্রভুত বরকত রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ প্রশংসিত মহিমাময়

[11:74]

অতঃপর যখন ইব্রাহীম (আঃ) এর আতঙ্ক দূর হল এবং তিনি সুসংবাদ প্রাপ্ত হলেনতখন তিনি আমার সাথে তর্ক শুরুকরলেন কওমে লূত সম্পর্কে

[11:75]

ইব্রাহীম (আঃ) বড়ই ধৈর্য্যশীলকোমল অন্তরআল্লাহমুখী সন্দেহ নেই

[11:76]

ইব্রাহীমএহেন ধারণা পরিহার করতোমার পালনকর্তার হুকুম এসে গেছেএবং তাদের উপর সে আযাব অবশ্যই আপতিত হবেযা কখনো প্রতিহত হবার নয়

[11:77]

আর যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূত (আঃ) এর নিকট উপস্থিত হল। তখন তাঁদের আগমনে তিনি দুচিন্তাগ্রস্ত হলেন এবং তিনি বলতে লাগলেনআজ অত্যন্ত কঠিন দিন

[11:78]

আর তাঁর কওমের লোকেরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে তার (গৃহ) পানে ছুটে আসতে লাগল। পূর্ব থেকেই তারা কু-কর্মে ৎপর ছিল। লূত (আঃ) বললেন-হে আমার কওমএ আমার কন্যারা রয়েছেএরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং অতিথিদের ব্যাপারে আমাকেলজ্জিত করো নাতোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নেই

[11:79]

তারা বলল ু তুমি তো জানইতোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই। আর আমরা কি চাইতাও তুমি অবশ্যই জান

[11:80]

লূত (আঃ) বললেন-হায়তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা আমি কোন সূদৃঢ় আশ্রয় গ্রহণ করতে সক্ষমহতাম

[11:81]

মেহমান ফেরেশতাগন বলল-হে লূত (আঃ) আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখনো তোমার দিকে পৌঁছাতে পারবে না। ব্যস তুমি কিছুটা রাত থাকতে থাকতে নিজের লোকজন নিয়ে বাইরে চলে যাও। আর তোমাদের কেউ যেন পিছনে ফিরে না তাকায়। কিন্তু তোমার স্ত্রী নিশ্চয় তার উপরও তা আপতিত হবেযা ওদের উপর আপতিত হবে। ভোর বেলাই তাদের প্রতিশ্রুতির সময়ভোর কি খুব নিকটে নয়?

[11:82]

অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছালতখন আমি উক্ত জনপদকে উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর পাথর বর্ষণ করলাম

[11:83]

যার প্রতিটি তোমার পালনকর্তার নিকট চিহ্নিত ছিল। আর সেই পাপিষ্ঠদের থেকে খুব দূরেও নয়

[11:84]

আর মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শোয়ায়েব (আঃ) কে প্রেরণ করেছি। তিনি বললেন-হে আমার কওম! আল্লাহরবন্দেগী করতিনি ছাড়া আমাদের কোন মাবুদ নাই। আর পরিমাপে ও ওজনে কম দিও নাআজ আমি তোমাদেরকে ভাল অবস্থায়ই দেখছিকিন্তু আমি তোমাদের উপর এমন একদিনের আযাবের আশঙ্কা করছি যেদিনটি পরিবেষ্টনকারী

[11:85]

আর হে আমার জাতিন্যায়নিষ্ঠার সাথে ঠিকভাবে পরিমাপ কর ও ওজন দাও এবং লোকদের জিনিসপত্রে কোনরূপ ক্ষতি করো নাআর পৃথিবীতে ফাসাদ করে বেড়াবে না

[11:86]

আল্লাহ প্রদত্ত উদ্ধৃত্ত তোমাদের জন্য উত্তমযদি তোমরা ঈমানদার হওআর আমি তো তোমাদের উপর সদাপর্যবেক্ষণকারী নই

[11:87]

তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার নামায কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যেআমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করতঅথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করেথাকিতা ছেড়ে দেবআপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক

[11:88]

শোয়ায়েব (আঃ) বললেন-হে দেশবাসীতোমরা কি মনে কর! আমি যদি আমার পরওয়ারদেগারের পক্ষ হতে সুস্পষ্ট দলীলের উপর কায়েম থাকি আর তিনি যদি নিজের তরফ হতে আমাকে উত্তম রিযিক দান করে থাকেন, (তবে কি আমি তাঁর হুকুম অমান্য করতে পারি?) আর আমি চাই না যে তোমাদেরকে যা ছাড়াতে চাই পরে নিজেই সে কাজে লিপ্ত হবআমি তো যথাসাধ্য শোধরাতে চাই আল্লাহর মদদ দ্বারাই কিন্তু কাজ হয়ে থাকেআমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে যাই

[11:89]

আর হে আমার জাতি! আমার সাথে জিদ করে তোমরা নূহ বা হুদ অথবা সালেহ (আঃ) এর কওমের মত নিজেদের উপর আযাব ডেকে আনবে না। আর লূতের জাতি তো তোমাদের থেকে খুব দূরে নয়

[11:90]

আর তোমাদের পালনকর্তার কাছে মার্জনা চাও এবং তাঁরই পানে ফিরে এসো নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদেগার খুবই মেহেরবান অতিস্নেহময়

[11:91]

তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনি যা বলেছেন তার অনেক কথাই আমরা বুঝি নাইআমারা তো আপনাকে আমাদের মধ্যে দূর্বল ব্যক্তি রূপে মনে করি। আপনার ভাই বন্ধুরা না থাকলে আমরা আপনাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতাম। আমাদের দৃষ্টিতে আপনি কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি নন

[11:92]

শোয়ায়েব (আঃ) বলেন-হে আমার জাতিআমার ভাই বন্ধুরা কি তোমাদের কাছে আল্লাহর চেয়ে প্রভাবশালীআর তোমরাতাকে বিস্মৃত হয়ে পেছনে ফেলে রেখেছনিশ্চয় তোমাদের কার্যকলাপ আমার পালনকর্তার আয়ত্তে রয়েছে

[11:93]

আর হে আমার জাতিতোমরা নিজ স্থানে কাজ করে যাওআমিও কাজ করছিঅচিরেই জানতে পারবে কার উপর অপমানকর আযাব আসে আর কে মিথ্যাবাদীআর তোমরাও অপেক্ষায় থাকআমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায়রইলাম

[11:94]

আর আমার হুকুম যখন এলআমি শোয়ায়েব (আঃ) ও তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে রক্ষা করি আর পাপিষ্ঠদের উপর বিকট গর্জন পতিত হলো। ফলে ভোর না হতেই তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল

[11:95]

যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করে নাই। জেনে রাখসামুদের প্রতি অভিসম্পাতের মত মাদইয়ানবাসীর উপরেওঅভিসম্পাত

[11:96]

আর আমি মূসা (আঃ) কে প্রেরণ করি আমার নিদর্শনাদি ও সুস্পষ্ট সনদসহ;

[11:97]

ফেরাউন ও তার পারিষদবর্গের কাছেতবুও তারা ফেরাউনের হুকুমে চলতে থাকেঅথচ ফেরাউনের কোন কথা ন্যায় সঙ্গত ছিল না

[11:98]

কেয়ামতের দিন সে তার জাতির লোকদের আগে আগে থাকবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পৌঁছে দিবে। আর সেটা অতীব নিকৃষ্ট স্থানসেখানে তারা পৌঁছেছে।।

[11:99]

আর এ জগতেও তাদের পেছনে লানত রয়েছে এবং কিয়ামতের দিনেওঅত্যন্ত জঘন্য প্রতিফলযা তারা পেয়েছে

[11:100]

এ হচ্ছে কয়েকটি জনপদের সামান্য ইতিবৃত্তযা আমি আপনাকে শোনাচ্ছি। তন্মধ্যে কোন কোনটি এখনও বর্তমান আছে আর কোন কোনটির শিকড় কেটে দেয়া হয়েছে

[11:101]

আমি কিন্তু তাদের প্রতি জুলুম করি নাই বরং তারা নিজেরাই নিজের উপর অবিচার করেছে। ফলে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা যেসব মাবুদকে ডাকতো আপনার পালনকর্তার হুকুম যখন এসে পড়লতখন কেউ কোন কাজে আসল না। তারা শুধু বিপর্যয়ই বৃদ্ধি করল

[11:102]

আর তোমার পরওয়ারদেগার যখন কোন পাপপূর্ণ জনপদকে ধরেনতখন এমনিভাবেই ধরে থাকেন। নিশ্চয় তাঁর পাকড়াও খুবই মারাত্নকবড়ই কঠোর

[11:103]

নিশ্চয় ইহার মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন প্রতিটি মানুষের জন্য যে আখেরাতের আযাবকে ভয় করে। উহা এমন একদিনযেদিন সব মানুষেই সমবেত হবেসেদিনটি যে হাযিরের দিন

[11:104]

আর আমি যে উহা বিলম্বিত করিতা শুধু একটি ওয়াদার কারণে যা নির্ধারিত রয়েছে

[11:105]

যেদিন তা আসবে সেদিন আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ কোন কথা বলতে পারে না। অতঃপর কিছু লোক হবে হতভাগ্য আর কিছু লোক সৌভাগ্যবান

[11:106]

অতএব যারা হতভাগ্য তারা দোযখে যাবেসেখানে তারা আর্তনাদ ও চিকার করতে থাকবে

[11:107]

তারা সেখানে চিরকাল থাকবেযতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রতিপালক অন্য কিছু ইচ্ছা করলে ভিন্ন কথা। নিশ্চয় তোমার পরওয়ারদেগার যা ইচ্ছা করতে পারেন

[11:108]

আর যারা সৌভাগ্যবান তারা বেহেশতের মাঝেসেখানেই চিরদিন থাকবেযতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রভু অন্য কিছু ইচ্ছা করলে ভিন্ন কথা। এ দানের ধারাবাহিকতা কখনো ছিন্ন হওয়ার নয়

[11:109]

অতএবতারা যেসবের উপাসনা করে তুমি সে ব্যাপারে কোনরূপ ধোঁকায় পড়বে না। তাদের পূর্ববর্তী বাপ-দাদারা যেমন পূজা উপাসনা করতএরাও তেমন করছে। আর নিশ্চয় আমি তাদেরকে আযাবের ভাগ কিছু মাত্রও কম না করেই পুরোপুরি দান করবো

[11:110]

আর আমি মূসা (আঃ)-কে অবশ্যই কিতাব দিয়েছিলাম অতঃপর তাতে বিরোধ সৃষ্টি হলবলাবাহুল্য তোমার পালনকর্তার পক্ষ হতেএকটি কথা যদি আগেই বলা না হততাহলে তাদের মধ্যে চুড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যেত তারা এ ব্যাপারে এমনই সন্দেহ প্রবণ যেকিছুতেই নিশ্চিত হতে পারছে না

[11:111]

আর যত লোকই হোক না কেনযখন সময় হবেতোমার প্রভু তাদের সকলেরই আমলের প্রতিদান পুরোপুরি দান করবেন। নিশ্চয় তিনি তাদের যাবতীয় কার্যকলাপের খবর রাখেন

[11:112]

অতএবতুমি এবং তোমার সাথে যারা তওবা করেছে সবাই সোজা পথে চলে যাও-যেমন তোমায় হুকুম দেয়া হয়েছে এবং সীমা লঙ্ঘন করবে নাতোমরা যা কিছু করছনিশ্চয় তিনি তার প্রতি দৃষ্টি রাখেন

[11:113]

আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে। আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু নাই। অতএব কোথাও সাহায্য পাবে না

[11:114]

আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবেএবং রাতের প্রান্তভাগে পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স্মারক

[11:115]

আর ধৈর্য্যধারণ করনিশ্চয়ই আল্লাহ পূণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না

[11:116]

কাজেইতোমাদের পূর্ববতী জাতি গুলির মধ্যে এমন সৎকর্মশীল কেন রইল নাযারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে বাধা দিততবে মুষ্টিমেয় লোক ছিল যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রক্ষা করেছি। আর পাপিষ্ঠরা তো ভোগ বিলাসে মত্ত ছিল যার সামগ্রী তাদেরকে যথেষ্ট দেয়া হয়েছিল। আসলেতারা ছিল মহা অপরাধী

[11:117]

আর তোমার পালনকর্তা এমন নন যেজনবসতিগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দেবেনসেখানকার লোকেরা সৎকর্মশীল হওয়া সত্ত্বেও

[11:118]

আর তোমার পালনকর্তা যদি ইচ্ছা করতেনতবে অবশ্যই সব মানুষকে একই জাতিসত্তায় পরিনত করতে পারতেন আর তারা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হতো না

[11:119]

তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেনতারা ব্যতীত সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমার আল্লাহর কথাই পূর্ণ হল যেঅবশ্যই আমি জাহান্নামকে জ্বিন ও মানুষ দ্বারা একযোগে ভর্তি করব

[11:120]

আর আমি রসূলগণের সব বৃত্তান্তই তোমাকে বলছিযদ্দ্বারা তোমার অন্তরকে মজবুত করছি। আর এভাবে তোমার নিকট মহাসত্য এবং ঈমানদারদের জন্য নসীহত ও স্বরণীয় বিষয়বস্তু এসেছে

[11:121]

আর যারা ঈমান আনে নাতাদেরকে বলে দাও যেতোমরা নিজ নিজ অবস্থায় কাজ করে যাও আমরাও কাজ করে যাই

[11:122]

এবং তোমরাও অপেক্ষা করে থাকআমরাও অপেক্ষায় রইলাম

[11:123]

আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও যমীনের গোপন তথ্যআর সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকেঅতএবতাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁর উপর ভরসা রাখআর তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তু বে-খবর নন