Quran translations in many languages

Bengali Quran

Saba’

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়অতি দয়ালু

[34:1]

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরযিনি নভোমন্ডলে যা আছে এবং ভূমন্ডলে যা আছে সব কিছুর মালিক এবং তাঁরই প্রশংসা পরকালে তিনি প্রজ্ঞাময়সর্বজ্ঞ

[34:2]

তিনি জানেন যা ভূগর্ভে প্রবেশ করেযা সেখান থেকে নির্গত হয়যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় এবং যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি পরম দয়ালু ক্ষমাশীল

[34:3]

কাফেররা বলে আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না। বলুন কেন আসবে নাআমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত। নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছুনা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সমস্তই আছে সুস্পষ্ট কিতাবে

[34:4]

তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও ৎকর্ম পরায়ণতাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনকরিযিক

[34:5]

আর যারা আমার আয়াত সমূহকে ব্যর্থ করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি

[34:6]

যারা জ্ঞানপ্রাপ্ততারা আপনার পালনকর্তার নিকট থেকে অবর্তীর্ণ কোরআনকে সত্য জ্ঞান করে এবং এটা মানুষকেপরাক্রমশালীপ্রশংসার্হ আল্লাহর পথ প্রদর্শন করে

[34:7]

কাফেররা বলেআমরা কি তোমাদেরকে এমন ব্যক্তির সন্ধান দেবযে তোমাদেরকে খবর দেয় যেতোমরা সম্পুর্ণ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও তোমরা নতুন সৃজিত হবে

[34:8]

সে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলেনা হয় সে উম্মাদ এবং যারা পরকালে অবিশ্বাসীতারা আযাবে ও ঘোর পথভ্রষ্টতায় পতিত আছে

[34:9]

তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে নাআমি ইচ্ছা করলে তাদের সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের উপর পতিত করব। আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে

[34:10]

আমি দাউদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এই আদেশ মর্মে যেহে পর্বতমালাতোমরা দাউদের সাথে আমার পবিত্রতাঘোষণা কর এবং হে পক্ষী সকলতোমরাও। আমি তাঁর জন্য লৌহকে নরম করে ছিলাম

[34:11]

এবং তাকে আমি বলে ছিলামপ্রশস্ত বর্ম তৈরী করকড়াসমূহ যথাযথভাবে সংযুক্ত কর এবং সৎকর্ম সম্পাদন কর তোমরা যা কিছু করআমি তা দেখি

[34:12]

আর আমি সোলায়মানের অধীন করেছিলাম বায়ুকেযা সকালে এক মাসের পথ এবং বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করত আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝরণা প্রবাহিত করেছিলাম। কতক জিন তার সামনে কাজ করততার পালনকর্তার আদেশে। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবেআমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব

[34:13]

তারা সোলায়মানের ইচ্ছানুযায়ী দুর্গভাস্কর্যহাউযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করত। হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা সহকারে তোমরা কাজ করে যাও। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ

[34:14]

যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালামতখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সোলায়মানেরলাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেনতখন জিনেরা বুঝতে পারল যেঅদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না

[34:15]

সাবার অধিবাসীদের জন্যে তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন-দুটি উদ্যানএকটি ডানদিকেএকটি বামদিকে। তোমরা তোমাদের পালনকর্তার রিযিক খাও এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। স্বাস্থ্যকর শহর এবং ক্ষমাশীল পালনকর্তা

[34:16]

অতঃপর তারা অবাধ্যতা করল ফলে আমি তাদের উপর প্রেরণ করলাম প্রবল বন্যা! আর তাদের উদ্যানদ্বয়কে পরিবর্তন করে দিলাম এমন দুই উদ্যানেযাতে উদগত হয় বিস্বাদ ফলমূলঝাউ গাছ এবং সামান্য কুলবৃক্ষ

[34:17]

এটা ছিল কুফরের কারণে তাদের প্রতি আমার শাস্তি। আমি অকৃতজ্ঞ ব্যতীত কাউকে শাস্তি দেই না

[34:18]

তাদের এবং যেসব জনপদের লোকদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলম সেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে অনেক দৃশ্যমান জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং সেগুলোতে ভ্রমণ নির্ধারিত করেছিলাম। তোমরা এসব জনপদে রাত্রে ও দিনে নিরাপদে ভ্রমণ কর

[34:19]

অতঃপর তারা বললহে আমাদের পালনকর্তাআমাদের ভ্রমণের পরিসর বাড়িয়ে দাও। তারা নিজেদের প্রতি জুলুমকরেছিল। ফলে আমি তাদেরকে উপাখ্যানে পরিণত করলাম এবং সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিলাম। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে

[34:20]

আর তাদের উপর ইবলীস তার অনুমান সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল। ফলে তাদের মধ্যে মুমিনদের একটি দল ব্যতীত সকলেই তার পথ অনুসরণ করল

[34:21]

তাদের উপর শয়তানের কোন ক্ষমতা ছিল নাতবে কে পরকালে বিশ্বাস করে এবং কে তাতে সন্দেহ করেতা প্রকাশ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। আপনার পালনকর্তা সব বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক

[34:22]

বলুনতোমরা তাদেরকে আহবান করযাদেরকে উপাস্য মনে করতে আল্লাহ ব্যতীত। তারা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের অনু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়এতে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহর সহায়কও নয়

[34:23]

যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। যখন তাদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর হয়ে যাবেতখন তারা পরস্পরে বলবেতোমাদের পালনকর্তা কি বললেনতারা বলবেতিনি সত্য বলেছেন এবং তিনিই সবার উপরে মহান

[34:24]

বলুননভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল থেকে কে তোমাদের কে রিযিক দেয়। বলুনআল্লাহ। আমরা অথবা তোমরা সৎপথে অথবাস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছি ও আছ?

[34:25]

বলুনআমাদের অপরাধের জন্যে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে না এবং তোমরা যা কিছু করসে সম্পর্কে আমরা জিজ্ঞাসিত হবনা

[34:26]

বলুনআমাদের পালনকর্তা আমাদেরকে সমবেত করবেনঅতঃপর তিনি আমাদের মধ্যে সঠিকভাবে ফয়সালা করবেন। তিনি ফয়সালাকারীসর্বজ্ঞ

[34:27]

বলুনতোমরা যাদেরকে আল্লাহর সাথে অংশীদাররূপে সংযুক্ত করেছতাদেরকে এনে আমাকে দেখাও। বরং তিনিই আল্লাহপরাক্রমশীলপ্রজ্ঞাময়

[34:28]

আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছিকিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না

[34:29]

তারা বলেতোমরা যদি সত্যবাদী হওতবে বলএ ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে?

[34:30]

বলুনতোমাদের জন্যে একটি দিনের ওয়াদা রয়েছে যাকে তোমরা এক মহূর্তও বিলম্বিত করতে পারবে না এবং ত্বরান্বিত ও করতে পারবে না

[34:31]

কাফেররা বলেআমরা কখনও এ কোরআনে বিশ্বাস করব না এবং এর পূর্ববর্তী কিতাবেও নয়। আপনি যদি পাপিষ্ঠদেরকেদেখতেনযখন তাদেরকে তাদের পালনকর্তার সামনে দাঁড় করানো হবে, , তখন তারা পরস্পর কথা কাটাকাটি করবে। যাদেরকে দুর্বল মনে করা হততারা অহংকারীদেরকে বলবেতোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম

[34:32]

অহংকারীরা দুর্বলকে বলবেতোমাদের কাছে হেদায়েত আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে বাধা দিয়েছিলামবরং তোমরাই তো ছিলে অপরাধী

[34:33]

দুর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবেবরং তোমরাই তো দিবারাত্রি চক্রান্ত করে আমাদেরকে নির্দেশ দিতে যেন আমরা আল্লাহকেনা মানি এবং তাঁর অংশীদার সাব্যস্ত করি তারা যখন শাস্তি দেখবেতখন মনের অনুতাপ মনেই রাখবে। বস্তুতঃ আমি কাফেরদের গলায় বেড়ী পরাব। তারা সে প্রতিফলই পেয়েথাকে যা তারা করত

[34:34]

কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করা হলেই তার বিত্তশালী অধিবাসীরা বলতে শুরু করেছেতোমরা যে বিষয়সহ প্রেরিতহয়েছআমরা তা মানি না

[34:35]

তারা আরও বলেছেআমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধসুতরাং আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না

[34:36]

বলুনআমার পালনকর্তা যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং পরিমিত দেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বোঝে না

[34:37]

তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ওকর্ম করেতারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে

[34:38]

আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়তাদেরকে আযাবে উপস্থিত করা হবে

[34:39]

বলুনআমার পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে দেন। তোমরা যাকিছু ব্যয় করতিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা

[34:40]

যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন এবং ফেরেশতাদেরকে বলবেনএরা কি তোমাদেরই পূজা করত?

[34:41]

ফেরেশতারা বলবেআপনি পবিত্রআমরা আপনার পক্ষেতাদের পক্ষে নইবরং তারা জিনদের পূজা করত। তাদের অধিকাংশই শয়তানে বিশ্বাসী

[34:42]

অতএব আজকের দিনে তোমরা একে অপরের কোন উপকার ও অপকার করার অধিকারী হবে না আর আমি জালেমদেরকে বলবতোমরা আগুনের যে শাস্তিকে মিথ্যা বলতে তা আস্বাদন কর

[34:43]

যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয়তখন তারা বলেতোমাদের বাপ-দাদারা যার এবাদত করত এ লোকটি যে তা থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়। তারা আরও বলেএটা মনগড়া মিথ্যা বৈ নয়। আর কাফেরদের কাছে যখন সত্য আগমন করেতখন তারা বলেএতো এক সুস্পষ্ট যাদু

[34:44]

আমি তাদেরকে কোন কিতাব দেইনিযা তারা অধ্যয়ন করবে এবং আপনার পূর্বে তাদের কাছে কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিনি

[34:45]

তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছে। আমি তাদেরকে যা দিয়েছিলামএরা তার এক দশমাংশও পায়নি। এরপরও তারা আমার রাসূলগনকে মিথ্যা বলেছে। অতএব কেমন হয়েছে আমার শাস্তি

[34:46]

বলুনআমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছিঃ তোমরা আল্লাহর নামে এক একজন করে ও দুদু জন করে দাঁড়াওঅতঃপর চিন্তা-ভাবনা কর-তোমাদের সঙ্গীর মধ্যে কোন উম্মাদনা নেই। তিনি তো আসন্ন কাঠোর শাস্তি সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করেন মাত্র

[34:47]

বলুনআমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না বরং তা তোমরাই রাখ। আমার পুরস্কার তো আল্লাহর কাছে রয়েছে প্রত্যেক বস্তুই তাঁর সামনে

[34:48]

বলুনআমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ করেছেন। তিনি আলেমুল গায়ব

[34:49]

বলুনসত্য আগমন করেছে এবং অসত্য না পারে নতুন কিছু সৃজন করতে এবং না পারে পূনঃ প্রত্যাবর্তিত হতে

[34:50]

বলুনআমি পথভ্রষ্ট হলে নিজের ক্ষতির জন্যেই পথভ্রষ্ট হবআর যদি আমি সৎপথ প্রাপ্ত হইতবে তা এ জন্যে যেআমার পালনকর্তা আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতানিকটবর্তী

[34:51]

যদি আপনি দেখতেনযখন তারা ভীতসস্ত্রস্ত হয়ে পড়বেঅতঃপর পালিয়েও বাঁচতে পারবে না এবং নিকটবর্তী স্থানথেকে ধরা পড়বে

[34:52]

তারা বলবেআমরা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। কিন্তু তারা এতদূর থেকে তার নাগাল পাবে কেমন করে?

[34:53]

অথচ তারা পূর্ব থেকে সত্যকে অস্বীকার করছিল। আর তারা সত্য হতে দূরে থেকে অজ্ঞাত বিষয়ের উপর মন্তব্য করত

[34:54]

তাদের ও তাদের বাসনার মধ্যে অন্তরাল হয়ে গেছেযেমন-তাদের সতীর্থদের সাথেও এরূপ করা হয়েছেযারা তাদেরপূর্বে ছিল। তারা ছিল বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত